এ বছর এডিস মশার উপদ্রব বেশি। বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ থেকে বাঁচতে জনগণকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তার ভাষ্য, বর্ষার কারণে মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় ডেঙ্গু হচ্ছে। ডেঙ্গুর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে ‘যথাযথ ব্যবস্থা’ নেয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। সচিবালয়ে এক সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জ্বর হলেই অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করানোর আহ্বান জানিয়ে একই সভায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, এ বছর দুই হাজার ৬২৬ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে রিলিজ পেয়েছেন। এ মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫৫১ জন। তিনি বলেন, যেকোনো জ্বর হলে সেটিকে সাধারণ জ্বর ভেবে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
একটি সহযোগী দৈনিকের রিপোর্ট অনুযায়ী, মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য গত অর্থবছরে দুই সিটি করপোরেশনের বরাদ্দ ছিল ৪৭ কোটি টাকা। ওই অর্থ দিয়ে মশার ওষুধ কেনা, কচুরিপানা ও আগাছা পরিষ্কার, ওষুধ ছিটানোর মেশিন কেনা এবং মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম, প্রভৃতি কাজ করেছে সিটি করপোরেশন। এ কাজে ডিএসসিসির ৪২৯ জন এবং ডিএনসিসির ২৮০ জন কর্মী নিয়োজিত আছেন। মশার লার্ভা ধ্বংস করার জন্য ভোরে লার্ভিসাইড এবং বিকেলে ফগার মেশিন দিয়ে অ্যাডাল্টিসাইড প্রয়োগ করার কথা। কিন্তু এই কার্যক্রম যে সফলতার মুখ দেখছে না, তার কারণ বহুবিধ। মশার ওষুধের কার্যকারিতার অভাবসহ মশক নিধনে নিয়োজিত কর্মীদের কাজের গড়িমসি পর্যন্ত নানা অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। মশক নিধন কাজ নিয়মিত তদারকির জন্য সম্প্রতি দুই সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সচেতন ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করেছে, কিন্তু তাতেও তেমন কোনো ফল মিলছে না।
সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের দাবি, বাসার বাইরের উন্মুক্ত জলাশয়, পরিত্যক্ত স্থান, পার্ক ও খেলার মাঠ এবং নর্দমায় ছিটানো হয় মশার ওষুধ। কিন্তু বাসাবাড়িতে মশক কর্মীদের প্রবেশাধিকার নেই। তাই এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসের কাজ নগরবাসীর নিজ উদ্যোগে করতে হবে। সংশ্লিষ্ট পত্রিকার রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসের জন্য আলাদা কোনো ওষুধও নেই সিটি করপোরেশনের কাছে। এ ছাড়া বাইরে থেকে কিনতে পাওয়া যাবে, এমন কোনো ওষুধের নামও জানাতে পারেনি সংস্থাগুলো। পরিষ্কার পানি জমতে পারেÑ এমন সব স্থান পরিষ্কার রাখার বিষয়ে নগরবাসীকে সচেতন করাকেই একমাত্র উপায় হিসেবে দেখছে সিটি করপোরেশন। এডিস মশার প্রজনন মওসুমেও জনসচেতনতামূলক প্রচারণার বাইরে তাদের কোনো কর্মসূচি নেই। ইদানীং ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়লেও এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করতে বাসাবাড়িতে নিয়মিত কোনো কর্মসূচি নেয়নি কোনো সংস্থাই।
নিজেরা দায়িত্ব পালন না করে জনগণের সচেতনতার ওপর গুরুত্ব দেয়ার প্রবণতা বেড়েছে সরকারি দফতরের কর্মকর্তাদের। আমরা জনসচেতনতার গুরুত্বকে খাটো করে দেখছি না। কিন্তু আমাদের বক্তব্য এই যে, সরকারের বিভিন্ন দফতর কোনোভাবেই দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না। সেটি হবে তাদের জন্যও আত্মঘাতী।
উন্নত দেশগুলোতে কেউ বাড়ির আশপাশে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে রাখতে পারে না। নিজ দায়িত্বে পরিচ্ছন্ন রাখতে বাধ্য হয়। এই বাধ্যতার বোধ আসে কোত্থেকে? আসে সরকারি কর্তৃপক্ষের তাগিদে। বাড়ির সামনে কোনো আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখলে সেই বাড়ির মালিককে মোটা অঙ্কের জরিমানা গুনতে হবে। পৌর কর্তৃপক্ষ সেখানে অন্ধ নয়; তারা ‘জনসচেতনতা’র ওপর নির্ভর করে বসে থাকে না। এমনিতেই ওই সব দেশের মানুষ অনেক বেশি সচেতন।
আমাদের দেশে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়, বাড়ির সামনের ড্রেনও মাসের পর মাস অপরিষ্কার থাকে। ডাস্টবিন নেই অনেক জায়গায়। সিটি করপোরেশন কখনো কোনো বাড়ির মালিককে অপরিচ্ছন্নতার কারণে জরিমানা দূরের কথা, সতর্ক করেছে কি না তারও নজির নেই। এই অবস্থায় শুধু মৌখিক আহ্বান জানানো মানুষকে সতর্ক করার জন্য কতটা কার্যকর হবে, তাতে সংশয় থেকে যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা