১৮ মে ২০২৪, ০৪ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫
`


সংসদ নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণে সুজন

অনিয়ম তদন্তে জুডিশিয়াল কাউন্সিলের দাবি যথার্থ

-


বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণের মধ্যে এ নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের কথা তুলে ধরার পর এবার নির্বাচনী ফলাফলের বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক’ (সুজন)। এ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে ‘সুজন’ বলেছে, এ নির্বাচন অনিয়মের খনি, একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। এ নির্বাচনে ১০৩টি আসনে ২১৩টি ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে, যা কোনোক্রমেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। ৭৫টি আসনে ৫৮৬ কেন্দ্রে সব ভোট নৌকায় এবং একটি কেন্দ্রে পড়েছে ধানের শীষে। ১২৮৫ কেন্দ্রে ধানের শীষে এবং দু’টি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে কোনো ভোট পড়েনি। গত মঙ্গলবার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব ভয়াবহ তথ্যের কথা জানিয়েছে সুজন। এটি যে কোনো স্বাভাবিক নির্বাচনী ফলাফল হতে পারে না, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, এ নির্বাচনে মহাজোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পাওয়া ভোটের ব্যবধানে অস্বাভাবিকতা রয়েছে। অনেক কেন্দ্রে অস্বাভাবিক হারে বাতিল ভোট পড়েছে। ব্যালট পেপার ও ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা কেন্দ্রগুলোতে ভোট পড়ার হারে পার্থক্য রয়েছে।
নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেছেন, ফলাফল প্রকাশে নির্বাচন কমিশন জালিয়াতি করেছে। নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে একধরনের অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এখন নির্বাচনব্যবস্থা যদি পুরোপুরি ভেঙে যায় তবে ভবিষ্যতে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা বদলের পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। তাদের এই উদ্বেগ জরুরি ভিত্তিতে সরকারের আমলে নেয়া উচিত।
এর আগে এ নির্বাচনকে ঘিরে নানা অনিয়মের তথ্য তুলে ধরেন সুজনের সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার। তিনি জানান, ৩০০টি নির্বাচনী এলাকার ৪০ হাজার ১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০৩টি ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে। আর ৯৯ শতাংশ ভোট পড়েছে ১২৭টি কেন্দ্রে, ৯৮ শতাংশ ভোট পড়েছে ৩৫৮ কেন্দ্রে এবং ৯৬ শতাংশ ভোট পড়েছে ৫১৬টি ভোটকেন্দ্রে। অর্থাৎ ৯৬ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ ভোট পড়েছে মোট এক হাজার ৪১৮টি কেন্দ্রে। ৯০-৯৫ শতাংশ ভোট পড়েছে ছয় হাজার ৪৮৪টি কেন্দ্রে, ৮০-৯০ শতাংশ ভোট পড়েছে ১৫ হাজার ৭১৯টি ভোটকেন্দ্রে এবং ৭০-৭১ শতাংশ ভোট পড়েছে ১০ হাজার ৭৩টি কেন্দ্রে। ভোটের জন্য নির্ধারিত সময়ে শতভাগ ভোট পড়া সম্ভব কি না সে প্রশ্নও তিনি তোলেন। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে এভাবে অধিকহারে ভোট পড়ার বিষয়টিকে এ নির্বাচনের সুষ্ঠুতা সম্পর্কে সন্দিহান করে তোলে। অনেকের মতে, নির্বাচনের দিনে ভোটের চিত্রের সাথে ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পড়া স্বাভাবিক ঘটনা নয়। তা ছাড়া আগের রাতে ব্যালট বাক্স পূর্তি করে রাখা তো এখন এক প্রতিষ্ঠিত সত্য।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন সুজনÑ সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান, সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, ড. শাহদীন মালিক, আবুল মকসুদ ও তোফায়েল আহমেদ। তাদের প্রায় সবাই নির্বাচনের অনিয়মের ঘটনার তদন্ত করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করার দাবি জানান। পাশাপাশি এ ইসির অধীনে আর কোনো নির্বাচন আয়োজন না করার সুপারিশ রাখেন। আমরা মনে করি, তাদের এই দাবি যথার্থ। সরকার নিজের ভাবমর্যাদা রক্ষার স্বার্থে তাদের এসব যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়া উচিত। তা না হলে নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে মানুষের অনাস্থা কখনো ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। সেইসাথে জনমনে সরকারের ভাবমর্যাদাও পুনরুদ্ধার করা যাবে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement
জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয় : অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে রোববার বগুড়ায় ৫২০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার ১ গাজা যুদ্ধে হেরে যাচ্ছে ইসরাইল : সাবেক মোসাদ উপ-প্রধান হালুয়াঘাটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিকের মৃত্যু আফগানিস্তানে নতুন করে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় ৫০ জনের মৃত্যু বগুড়ায় বন্ধু হত্যার ঘটনায় সৈনিক লীগ সভাপতি গ্রেফতার ইয়েমেনে তেলের ট্যাঙ্কারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অলিম্পিকে ইকুয়েস্ট্রিয়ানে পদক জেতার আশা সৌদি আরবের ভালুকায় কারখানা শ্রমিকের মৃত্যু ইসরাইলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে হিজবুল্লাহ, স্বীকার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ন্যায়বিচার পাওয়া প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার : প্রধান বিচারপতি

সকল