১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


যুক্তরাষ্ট্র সরকারে অচলাবস্থা

দেশটির বিদেশনীতি দুর্বল করবে

-

প্রায় সাত দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। মূলত দেশটির ভেতরে স্থিতিশীল সরকারব্যবস্থার সূত্রে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এটি দাপটের সাথে প্রভাব খাটিয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান বিষয় ছিল বিদেশনীতি। এজন্য দেশটিকে প্রচুর অর্থ ও সামরিক শক্তির প্রদর্শনী করতে হয়েছে। সর্বশেষ নির্বাচনের পর দেশটির ভেতরে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাচনের আগে, ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ সেøাগান দিয়েছেন। সারা বিশ্ব থেকে নজরদারি কমিয়ে দেশে নিজের মনোযোগ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা যে দেশটির অভ্যন্তরে এতটা টালমাটাল অবস্থা তৈরি করবে ধারণা করা যায়নি। এখন খোদ যুক্তরাষ্ট্র সরকারে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গত শনিবার এই অচলাবস্থার ২২ দিন হয়েছে।
নির্বাচনের আগেই ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ করবেন। ব্যাপারটাকে অনেকে হাস্যকর ও হেঁয়ালি মনে করেছিলেন। বাস্তবে তিনি এই দেয়াল নির্মাণ করার জন্য শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। এজন্য কংগ্রেসের কাছে ৫৭০ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ চেয়েছেন। বিরোধী দল ডেমক্র্যাটরা এই অর্থ দিতে নারাজ। ফলে বরাদ্দ পাচ্ছেন না তিনি। এর প্রতিবাদে তিনিও কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যক্রম চালানোর বরাদ্দ করা অর্থের বাজেটে স্বাক্ষর করেননি। এতে করে সরকারের বিভিন্ন বিভাগে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাম্প এ ব্যাপারে এতটাই বেপরোয়া যে তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী জরুরি অবস্থা জারি করে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দিয়ে তিনি দেয়াল নির্মাণের বাজেট পাশ করিয়ে নেবেন। এমনটা হলে রাজনৈতিক বিভাজন দেশটিতে চড়া হবে। ট্রাম্প এরই মধ্যে ধর্ম ও জাতীয়তার ভিত্তিতে বিভিন্ন উগ্র বক্তব্য দিয়েছেন। সেজন্য নির্বাচনের পরপরই যুক্তরাষ্ট্র্ব্যাপী বিক্ষোভ দেখা দেয়। সেখানে ট্রাম্পের পক্ষের লোকদেরও সরব উপস্থিতি দেখা যায়। এ ধরনের বর্ণবাদী বিভাজন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসে দেখা যায়নি। ফলে দেশটিতে বিভিন্ন সম্প্রদায় ও ধর্মের লোক পাশাপাশি বাস করতে পেরেছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেই অভিবাসীদের দেশটি থেকে বের করার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন। ব্যক্তিগত স্টাফ ও সরকারে তিনি এমনসব ব্যক্তিদের নিয়োগ দেন, তারা ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক চিন্তার ক্ষেত্রে প্রভাবদুষ্ট। তার এ ধরনের চিন্তাভাবনা দেশটিতে উগ্র জাতীয়তাবাদীদের উসকে দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যক্রম চালানোর জন্য বরাদ্দ দেয়া অর্থের বাজেটে স্বাক্ষর না করায় যে অচলাবস্থা চলছে তা দীর্ঘ দিন অব্যাহত থাকলে সরকারের অবস্থা আরো ভঙ্গুর হবে। সম্প্রদায়গত বিভাজনের যে বৃক্ষ তিনি রোপণ করেছেন; এর ফলে সেটা আরো জেগে উঠবে। পুরো বিশ্বব্যবস্থার জন্য এটি নতুন হুমকি হিসেবে দেখা দিতে পারে।
এখনো সামরিক ও আর্থিক শক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। এর সাথে তাদের বিশ্ব নেতৃত্বে অবস্থান একটা ভারসাম্য তৈরি করে রেখেছে দীর্ঘ দিন। যুক্তরাষ্ট্রের সমসাময়িক প্রেসিডেন্টরা আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলোতে প্রভাব রেখেছেন। এর ভালো খারাপ দুটো দিকই রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটা ভারসাম্য বজায় থেকেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উগ্র সাম্প্রদায়িক চিন্তা এতে প্রভাব ফেলছে। অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থায় অচলাবস্থা দেশটির বিদেশনীতিকে দুর্বল করবে। দেয়াল নির্মাণ নিয়ে নিজেদের বিভেদ দেশটিকে দুর্বল করবে। যদি প্রেসিডেন্ট জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে কিংবা সরকারি বরাদ্দ দিতে অব্যাহতভাবে অস্বীকার করেনÑ দুই অবস্থাই তাদের জন্য ক্ষতিকর হবে। ফলে ক্রমেই দেশটি বিদেশ থেকে নিজেদের নজর গুটিয়ে আনতে বাধ্য হবে। এতে করে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হবে, তা বিশ্বের জন্য সুখকর হবে না। একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সমাজব্যবস্থায় ধর্ম জাতি বিভেদ আরো প্রবল হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
শিগগিরই মাগুরায় রেললাইন চালু হবে : রেলমন্ত্রী সংসদ ভবনের সামনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে ছাত্রলীগকর্মী নিহত জুজুৎসুর সম্পাদকের যৌন নিপীড়নের তথ্য দিলো র্যা ব পানচাষীদের পরিশ্রমের ফসল জিআই স্বীকৃতি : প্রতিমন্ত্রী বগুড়ায় অবৈধ মজুদকৃত ১ লাখ ডিম উদ্ধার তথ্যের জন্য সাংবাদিকরা শতবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যেতে পারেন : ডেপুটি গভর্নর ইসরাইলি হামলায় ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত আফগানিস্তানে গুলিতে ৩ স্প্যানিশ ও ৩ আফগান নিহত বিভিন্ন অপরাধে সাতজনের ফাঁসি কার্যকর করল ইরান কিরগিস্তানে আতঙ্কে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা ‘প্রাচীন হিব্রুদের সাথে ইসরাইলি ইহুদিদের জেনেটিক সংযোগ নেই’

সকল