০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


আন্দোলনকারীরা চাপের মুখে

হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেই

-

বাংলাদেশে যেন আইনের শাসনের উল্টোযাত্রা চলছে। অপরাধীদের আড়াল করে রাখার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রতি অনুরক্তদের ওপর চলছে জুলুম। নিরাপদ সড়ক নিয়ে কিশোরদের আন্দোলন-পরবর্তী পর্যায়ে এখন এমনটি দেখা যাচ্ছে। আন্দোলনের সময় কিশোরদের ওপর হামলাকারীদের ব্যবস্থা নেয়ার কোনো লক্ষণ নেই। একই সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার দুই ডজন সাংবাদিকের ওপর হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনার ব্যাপারেও নেই কোনো উদ্যোগ। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছেন এমন অভিযোগে আটক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মুক্ত করার কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। সামাজিক মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদানের ওপর ভর করে এই আন্দোলন বেগবান হয়েছিল। তাই পুলিশের সব তৎপরতা এখন সামাজিক মাধ্যম নিয়ে। তাদের ভাষায় ‘গুজব রটনাকারী’দের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সরকার ও তার ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের দৃশ্যত সমর্থক। তারা স্বীকার করেছেন এ আন্দোলন সবার চোখ খুলে দিয়েছে। বাস্তবে রাস্তায় সরকার সমর্থকেরা কিশোর আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে ওদের রক্তাক্ত করেছে। আন্দোলনের সময়ে বারবার তাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন করেছে। ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের অফিস ঘিরে এই হামলার ব্যাপারটি ছিল প্রকাশ্য। সাংবাদিকেরা এসব ঘটনার ছবি তুলতে গেলে তাদের বেধড়ক পেটানো হয়েছে। আক্রমণকারীদের অনেকে মিডিয়ায় আসা ছবিতে শনাক্ত হয়েছে। বাকিদের শনাক্ত করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য কঠিন নয়। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করা যায়। কিন্তু হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নিতে পুলিশের কোনো তৎপরতা আর দেখা যাচ্ছে না। পুলিশের তৎপরতা স্পষ্টভাবেই দুটো দিকে ধাবিত হচ্ছে। প্রথমত, আন্দোলনে অংশ নেয়ায় যাদের আটক করা হয়েছে তাদের ব্যাপারে খুঁটিনাটি জানতে এবং আন্দোলনের সময় ফেসবুকে কারা এর পক্ষে জোরালো সমর্থন দিয়েছে তাদের শনাক্ত করা। এ পর্যন্ত যে ৩৪টি মামলা হয়েছে সেগুলোর টার্গেট আন্দোলনকারী ও তার সমর্থকেরা। এগুলোর মধ্যে ছয়টি হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে। বাকিগুলো দুর্ঘটনা, ভাঙচুর, বেআইনি সমাবেশ, পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে। এসব ব্যাপারে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছে। কিন্তু যারা শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পেটাল, তাদের ব্যাপারে পুলিশ মামলা করেনি। অন্য দিকে, আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আটক হওয়া ২২ জন ছাত্রের মুক্তি মিলছে না। তাদের ব্যাপারে চলছে বিস্তারিত তদন্ত। তারা এবং তাদের পরিবার কোন দলের সমর্থক সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সরকারের কথা ও কাজের মধ্যে গরমিল রয়েছে। এক দিকে তারা বলছেন, আন্দোলনকারীরা চোখ খুলে দিয়েছে; অন্য দিকে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে কেবল আন্দোলনকারী এবং তাদের শুভাকাক্সক্ষীদের বিরুদ্ধে। এটা সরকারের নৈতিক দুর্বলতা ফুটিয়ে তুলেছে। মুখে সরকার ভালো কাজের প্রশংসা করলেও বাস্তবে তাদের প্রতি হিংসাত্মক অবস্থান গ্রহণ করছে। ফলে পুলিশ এ ব্যাপারে যত অ্যাকশন নিচ্ছে, সব আন্দোলনের বিপক্ষে যাচ্ছে। অন্য দিকে, চিহ্নিত অপরাধী যারা আন্দোলনকারীদের ওপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়েছে, তারা দায়মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। তারা গুরুতর অন্যায় করেও নিরাপদ জীবন যাপন করছে। কোনো গণতান্ত্রিক সরকার কখনো এমন অবস্থান গ্রহণ করতে পারে না। এখনো সময় রয়েছে, সরকার নিজেদের অবস্থান বদলাতে পারে। যারা আন্দোলনকারী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যাদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে রাখা হয়েছে তাদের ছেড়ে দিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
চট্টগ্রাম থেকে প্রথম হজ ফ্লাইট ১৪ মে ডেঙ্গুতে আরো ৩ জনের মৃত্যু পাঁচ বছর পর সাকিবের সেঞ্চুরি ভূমিহীন আবদুল্লাহর ২ যু‌গের বেশি মস‌জিদে বাস, চান একটি ঘর আনোয়ারায় ২ সন্তানের জননীর রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী আটক লজ্জা এড়িয়ে মান বাঁচানো সংগ্রহ জিম্বাবুয়ের গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা : সাময়িক বরখাস্ত ৩, ঘটনা তদন্তে ৩ কমিটি আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির নির্বাচন ঘিওরে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বিএনপির ২ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জিম্বাবুয়েকে লজ্জার রেকর্ডের দিকে ঠেলে দিচ্ছে টাইগাররা জনগণের কাছে হেরে যাওয়ার আগে ক্ষমতা ছেড়ে দিন : ফারুক

সকল