১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় ইইউ

সবার আশা, গণতন্ত্রের স্বার্থে সরকার ইতিবাচক হবে

-

চলতি বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য দেখতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ইইউ এমন এক সময় বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের কথা বলছে, যখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে একের পর এক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব নির্বাচনের ফলাফল খোদ ক্ষমাতাসীনদের মধ্যে দ্বিধার সৃষ্টি করছে। অনেকে একে পাতানো নির্বাচন হিসেবে মতামত ব্যক্ত করছেন। কেউ বলছেন নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন। এসব নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে; কিন্তু মিডিয়াসহ পুরো নির্বাচনী পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকায় কেউ কিছু খোলামেলা বলছে না। প্রায় সব নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অবিশ্বাস্য ব্যবধানে জিতে চলেছে। অনিয়ম দুর্নীতি ও ব্যাপক সন্ত্রাসসহ নানা কারণে সরকার যখন অজনপ্রিয়, ঠিক সেই সময়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে তাদের প্রার্থীর বিজয় অদ্ভুত ঠেকছে। ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে পরাজয়ের বদলে বিপুল ব্যবধানে জয়ের এ ধারাবাহিকতা বিদেশীদের কাছেও গোলমেলে ঠেকছে। তাই ইইউসহ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারেরা বাংলাদেশে অবাধ নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাগিদ দিয়ে যাচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ-ইইউ কূটনৈতিক সংলাপ। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইইউ বাংলাদেশে কেমন নির্বাচন চায় সেই প্রত্যাশার কথা জানান। ইউরোপীয় বহিঃসম্পর্ক বিভাগের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গানার উইন্ডার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন দেখতে চাই, যেখানে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত সব দল অংশ নেবে।’ বাস্তবতা হচ্ছে, ২০১৪ সালে অগ্রহণযোগ্য একটি জাতীয় নির্বাচনের পর বর্তমান সরকার যতগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছে তার প্রায় প্রত্যেকটি ছিল বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার থেকে শুরু করে পেশাজীবী সংগঠনগুলোর নির্বাচনেও ২০১৪ সালের একচেটিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনের কালো ছায়া পড়েছে। কারচুপি ও অনিয়মের অসংখ্য সূক্ষ্ম ও স্থূল ভোট জালিয়াতির নজির বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে। কোথাও দেখা গেছে, প্রতিযোগী প্রার্থীর সমর্থকেরা ভোটকেন্দ্রের কাছেও ঘেঁষতে পারেনি। কোথাও বা কাছে আসতে দেয়া হয়নি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এজেন্টদের। আবার কোথাও এমনও দেখা গেছে দৃশ্যমান সব ঠিকঠাক ভেতরে চলেছে শতভাগ অনিয়ম। এই ব্যাপারগুলোর সাক্ষী কেবল বাংলাদেশের মানুষ নয়, বাংলাদেশে থাকা বিদেশীরা বিষয়টি টের পেয়েছে। সে জন্য গণতন্ত্রপ্রিয় কিংবা গণতন্ত্রের পৃষ্ঠপোষক দেশগুলো বাংলাদেশের ভোট ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন, যা তাদের বিভিন্ন কথাবার্তা ও বিবৃতিতে প্রকাশ পাচ্ছে। ইইউ যে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ বোধ করে সেটাও প্রকাশ পেল গানার উইন্ডারের কথায়। তিনি জানান, নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে ইইউ রাষ্ট্রদূত নির্বাচন কমিশনের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা ইইউ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ক’দিন আগে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে। সেখানেও জোর দেয়া হয়েছে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিয়ে। ২০১৪ সালে নির্বাচনের পর বাংলাদেশের নির্বাচনী সংস্কৃতির অবনতি সবাই লক্ষ করেছে। চলতি বছরের শেষে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচন আরেকটি ২০১৪ সালের নির্বাচন হয়ে যায় কি না সেটা নিয়ে দেশে- বিদেশে গণতন্ত্রের শুভাকাক্সক্ষীরা রীতিমতো উদ্বিগ্ন। গণতন্ত্রের স্বার্থে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের এ ব্যাপারে করণীয় রয়েছে। জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার ব্যাপারে সর্বোচ্চ ভূমিকা তারা রাখতে পারে। আশা করা যায়, এবার তারা একটি অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব করবেন। গণতন্ত্রপ্রিয় দেশী-বিদেশীদের সবাই এমনটাই প্রত্যাশা করেন।


আরো সংবাদ



premium cement
শিগগিরই মাগুরায় রেললাইন চালু হবে : রেলমন্ত্রী সংসদ ভবনের সামনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে ছাত্রলীগকর্মী নিহত জুজুৎসুর সম্পাদকের যৌন নিপীড়নের তথ্য দিলো র্যা ব পানচাষীদের পরিশ্রমের ফসল জিআই স্বীকৃতি : প্রতিমন্ত্রী বগুড়ায় অবৈধ মজুদকৃত ১ লাখ ডিম উদ্ধার তথ্যের জন্য সাংবাদিকরা শতবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যেতে পারেন : ডেপুটি গভর্নর ইসরাইলি হামলায় ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত আফগানিস্তানে গুলিতে ৩ স্প্যানিশ ও ৩ আফগান নিহত বিভিন্ন অপরাধে সাতজনের ফাঁসি কার্যকর করল ইরান কিরগিস্তানে আতঙ্কে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা ‘প্রাচীন হিব্রুদের সাথে ইসরাইলি ইহুদিদের জেনেটিক সংযোগ নেই’

সকল