২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জার্মানিতে একশ বাড়ির মালিক এই বাংলাদেশী

জার্মানিতে একশ বাড়ির মালিক এই বাংলাদেশী - ছবি : সংগৃহীত

মাত্র ১৬ বছর বয়সে লেখাপড়ার পাশাপাশি হোটেলে কাজ শুরু করেন যুবরাজ তালুকদার৷ ২১ বছর বয়সে নিজের জমানো টাকা দিয়ে কেনেন প্রথম বাড়ি৷ এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি৷ এখান জার্মানির আবাসন খাতে পরিচিত মুখ তিনি। থাকেন দেশটির বন শহরে। তার বাড়ির সংখ্যা একশর বেশি।

তবে বড় কোনো বিনিয়োগ নিয়ে এই খাতে ব্যবসা শুরু করেননি তালুকদার৷ নিজের সাম্রাজ্য গড়েছেন পুরোটাই নিজের চেষ্টায়, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে৷ ১৯৯১ সালে আবাসন ব্যবসা শুরু করেন তিনি৷ এই বিষয়ে তালুকদার বলেন, ‘১৬ বছর বয়স থেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি আমি হোটেল কাজ করতাম৷ এবং পরবর্তীতে ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে চাকুরি করে যে বেতন পেয়েছিলাম সেগুলো আমার বাবাকে দিতে হয়নি৷ আমি সেগুলো সেভ করেছি৷ আব্বা কখনো বলেননি যে, আমার রোজগার থেকে তাকে খরচের টাকা দিতে হবে৷ টাকা জমা করে প্রথমে একটা বাড়ি নিলামে কিনি মাত্র সাড়ে ছয় হাজার ইউরো দিয়ে৷ মানে ১৯৯১ সালের তের হাজার মার্ক৷ সেই টাকা দিয়েই ব্যবসা শুরু করি৷’

আবাসন খাতে যুবরাজ তালুকদারের ব্যবসার ধরণ কিছুটা ভিন্ন৷ তিনি মূলত পুরনো ঘরবাড়ি বিভিন্ন ব্যাংক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নিলামে কেনেন৷ কেনার পর সেগুলো সংস্কার করে ভাড়া দেন৷ তার কর্মী সংখ্যা ছয়জন৷ তিনি বলেন, ‘সাধারণত ১৯৬০-১৯৭০ সালে বানানো, মানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বানানো বাড়িগুলো কিনি আমি৷ সেসব ভবনে টাইলস, বেসিন, কমোড, বিদ্যুতের লাইন - এসব পুরনো থাকে৷ আপনি যদি কোনো কোম্পানিকে দিয়ে এগুলো ঠিক করতে যান তাহলে উদাহরণস্বরূপ এক হাজার বর্গফুটের বাড়িতে নূন্যতম ৪০ হাজার ইউরো খরচ হবে৷ আর সেই কাজ আমি যদি কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে নিজে করি, তাহলে আমি অর্ধেক খরচে সেটা করতে পারবো৷’

কখনো কখনো দু'তিনশ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক বাড়িও কেনেন যুবরাজ৷ সেগুলো অবশ্য সংস্কার করতে হয় বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে৷ এ ধরনের বাড়ির বাইরের অংশের ডিজাইনে কোন পরিবর্তন করা যায়না, তবে ভেতরটা নিজেদের মতো করে বদলে নেয়া যায়৷

কেনার পর বিক্রি নয়, ভাড়া

জার্মানিতে একটি বাড়ি কেনার পর তা দশ বছরের মধ্যে বিক্রি করে দিলে অনেক কর দিতে হয়৷ মূলত এই খাতে স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তালুকদার তাই বাড়ি কিনে সংস্কার করে ভাড়া দেন৷ বর্তমানে তার মালিকানায় থাকা সব ঘর-বাড়িই জার্মানির বন-কোলন অঞ্চলে অবস্থিত৷

আবাসন খাতে নতুন বিনিয়োগের পাশাপাশি আরো কিছু খাতে ব্যবসা শুরুর চেষ্টা করছেন তিনি৷ সম্প্রতি কোলন-বন বিমানবন্দরের কাছে চালু করেছেন একটি ইটালীয় রেস্তোরাঁ৷ তিনি বলেন, ‘এই বিল্ডিংটা যখন বিক্রি হলো, তখন রেস্তোরাঁ নয়, একটি অ্যাসেট হিসেবে এটি কিনেছিলাম৷ তখন এটি একটি চীনা রেস্তোরাঁ ছিল৷ আমার এক বন্ধু তখন বলল এখানে একটি ইটালীয় রেস্তোরাঁ করা যায়৷ গতবছর আমরা এটি চালু করি৷’

নিজের ব্যবসা দেখাশোনার জন্য সারাদিনই বন-কোলন অঞ্চলে ঘুরতে হয় যুবরাজ তালুকদারকে৷ সম্প্রতি কোলনের একটি আদালতে ‘অনারারি জাজ’ হিসেবেও নিয়োগ পেয়েছেন তিনি৷ এই বিষয়ে তালুকদার বলেন, ‘আমাকে জার্মান সরকার অনারারি জাজ হিসেবে কোলনের ফাইনান্স কোর্টে দায়িত্ব দিয়েছে পাঁচ বছরের জন্য৷ সেখানে কোনো কেস এলে তিনজন সরকারি জাজ এবং দু'জন অনারারি জাজ বসে কেসটা তদন্ত করা হয়৷ সবকিছু বোঝার পরে আমাদের পাঁচজন বসে অন্তত তিনজন যেদিকে রায়টা দিতে চায়, সেদিকে রায় দেয়া হয়৷’

জার্মানিতে সফল এই ব্যবসায়ী বাংলাদেশের আবাসন খাতেও বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন৷ তবে নানা আইনি ও দাপ্তরিক জটিলতায় সেখানে সুবিধা করতে পারেননি৷ এখন অবশ্য জানালায় ব্যবহারের উপযোগী বিশেষ এক ধরণের নেট তিনি বাংলাদেশে রপ্তানি করছেন৷

জার্মানিতে নানারকম সামাজিক কর্মকাণ্ডেও যুক্ত আছেন যুবরাজ তালুকদার৷ বন শহরে একটি মসজিদ তৈরি করেছেন তিনি৷ ভবিষ্যতে ব্যবসা-বাণিজ্য সন্তানদের বুঝিয়ে দিয়ে সমাজসেবায় আরো মনোযোগী হতে চান এই বাংলাদেশী-জার্মান ব্যবসায়ী৷

সূত্র : ডয়েচে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement
‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

সকল