২১ মে ২০২৪, ০৭ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলকদ ১৪৪৫
`


পরিব্রাজক

-


বিস্ময়কে পরাজিত করেছে যে মৃত্যু
বাতাসে ভেসে আসা সাদা কাফনে মোড়ানো মৃত্যু

আমাদের হৃদয় এখন তাদের সমাধিক্ষেত্র
তালি দেয়া পথে পদচিহ্ন খুঁজে কি লাভ
নিজেদেরই মেরুদণ্ড যাদের পথ
বাতাসও হাঁটতে ভয় পায় যেখানে
শেষ আশ্রয়Ñ ঘরবাড়ি দরোজা জানালা
প্রাতঃভ্রমণ থেকে আর ফিরতে পারেনি
শ^াসতন্ত্র বিকল করা সেই পথে
বিস্ময় কাঁধে হাঁটছে পৃথিবী
আর মানুষ কখনো প্রণয় দুর্গের চূড়ায়
কখনো আত্মার সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে
দেখছে অপরাহ্নের দেশ

তারা ভুলে গেছে কিভাবে বাতাস পিষে
বের করতে হয় অমøজান
কী কৌশলে প্রতি সৌরবর্ষে
বদলে নিতে হয় চোখ দুটো
শুকিয়ে যাওয়া আকাক্সক্ষা পাঠাতে হয় নির্বাসনে
কৈশোরে কর্জ করা প্রজাপতি পরিশোধ
করতে হয় বধ্যভূমিকে
করতল থেকে ঝেড়ে ফেলতে হয় শঙ্খচিল

যে দেশ তার সন্তানদের দিয়েছিল স্বপ্নের প্রমোদ তরী
আজ তা’ অভিশপ্ত মেফিস্টোফেলিস
আরব্য জিনদের গল্পের গোলকধাঁধা
ন্যায্যমূল্যের শিশির
ছেঁড়া রুটির আকাশ
আর জীবনের অনির্দিষ্ট বই

প্রতিটি পৃষ্ঠার তীরে একচক্ষু সাইক্লোপস
খুলে নিচ্ছে কর্মজীবী বৃক্ষদের মাথা থেকে পাতার বিনুণী
সম্পূর্ণ নগ্ন কিশলয়
তাদের শ্রোণীর শৈবালে আটকে আছে সময়

কোথাও কোনো ভবিষ্যৎ নেই-অতীতও না
সব দীর্ঘ বর্তমান
সময় দু’বার মুখ খোলে Ñ প্রেমে ও সঙ্কটে
বলে দেয় Ñ প্রকৃত প্রেম মৃত্যু নয় আত্ম-অন্বেষণ
ঘুম মৃত্যুর সমরূপ নিঃস্তব্ধ আগামী

মৃতদের মেঘআত্মা ভেসে বেড়ায় আকাশে-আকাশে
তবু জীবনকে ভালোবাসলে চোখে চাঁদ ওঠে
জন্মের গন্ধ নাকে এসে লাগে
তখন স্বপ্ন দ্বিতীয় জীবন ফিরে পায়
আমাদের ভেতরের শিশুরা ভিড় করে দাঁড়ায়
তাদের সমানে পোশাকের মূল্য কি
মৃত্যুরই-বা কি অর্থ

মানুষের এই বিপন্নতা দেখুক বৃক্ষ-নদী
পাখি ও পর্বত
অনুতাপ সবাইকে ক্ষমার যোগ্য করে দিক
এবং কান্না পবিত্র

প্রার্থনার পথে নীরবতা অনিবার্য উত্তর
ঐতিহাসিক অভিযানে আমরা দন কিহোতির হাওয়াকল
প্রত্যেকের নিজস্ব কান পেতে
জন্ম-মৃত্যুর পদধ্বনি শোনে
আমরা প্রত্যেকে আত্মার পরিব্রাজক

 


আরো সংবাদ



premium cement