২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রূপগঞ্জে ৪০ মামলার আসামি মোশা সহযোগীসহ গ্রেফতার, অস্ত্র উদ্ধার

মোশাররফ ওরফে মোশা - ছবি : নয়া দিগন্ত

রূপগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও এলাকাবাসীর ওপর হামলা এবং গুলিবর্ষণের ঘটনার মূলহোতা শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া ওরফে মোশা (৪৭) ও তার এক সহযোগী দেলোয়ার হোসেনকে (৫২) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) ভোরে তাদের দেয়া তথ্যে রূপগঞ্জের নাওড়া এলাকা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন ও গুলি উদ্ধার করা হয়। এর আগে বুধবার রাতে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও তার পাশ্ববর্তী এলাকায় হত্যা, হত্যা চেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, জমি দখল ও মাদকসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন।

এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো গ্রেফতার হলেন মোশারফ। এর আগেও পাঁচ বার জেল খেটেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, হত্যাচেষ্টা, মাদক ও চাঁদাবাজিসহ ৪০টির বেশি মামলা রয়েছে। তার সহযোগী দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধেও রূপগঞ্জ থানায় পাঁচের অধিক মামলা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন, গত ২৫ মে রূপগঞ্জে স্থানীয় জনগণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা এবং গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ ২০-২৫ জন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনার পর রূপগঞ্জ থানা মামলা করে পুলিশ। মামলার সূত্রধরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে রূপগঞ্জ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় হত্যা, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। মোশারফের নেতৃত্বে দলটির ৭০-৮০ জন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, অবৈধভাবে জমি দখল, হুমকি, ছিনতাই ও মাদককারবারসহ অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন।

কেউ চাঁদা দিতে রাজি না হলে তাকে ভয় দেখানো হতো। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য ‘মোশা বাহিনী’ নামে একটি সন্ত্রাসী দল গড়ে তুলেন মোশারফ। নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পর তিনি কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে আত্মগোপনে চলে যান।

এক প্রশ্নের জবাবে মঈন বলেন, মোশারফ স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। তার কোনো রাজনৈতিক দল নেই। তার পরিচয় তিনি সন্ত্রাসী।

জানাগেছে, গত ২৫ মে বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকার চিনখলা গ্রামে মোশা বাহিনীর সঙ্গে গ্রামবাসীর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে যাওয়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপরও চড়াও হয় মোশা বাহিনী। একপর্যায়ে পুলিশ মোশাকে গ্রেফতার করার পর তার সহযোগীরা হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ ও গ্রামবাসীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত তিনজন। পরে অভিযান চালিয়ে ওই এলাকা থেকে মোশা বাহিনীর তিন নারী সদস্যসহ চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রামবাসী ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ২৬ মে শুক্রবার শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেন মোশাসহ তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। পুলিশের একটি এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর পক্ষে আরেকটি মামলা করা হয়। সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর আক্রমণের অভিযোগে মোশারফ হোসেন মোশা ও তার বাহিনীর ২৪ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৭০-৮০ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেন থানার এসআই আমিনুর রহমান।


আরো সংবাদ



premium cement