১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫
`


বিয়ের দেড় মাসের মাথায় স্ত্রীকে হত্যা, আটক হয়নি ঘাতক স্বামী

নিহত সাজিয়া আফরিন রোদেলা ও তার ঘাতক স্বামী সোহানুর রহমান। ছবিটি তাদের বিয়ের দিন তোলা - নয়া দিগন্ত

বিয়ের মাত্র দেড় মাস না যেতেই স্বামীর বাড়িতে নির্মমভাবে নিহত কলেজ ছাত্রী সাজিয়া আফরিন রোদেলা (১৮) হত্যাকান্ডের দুই বছরপূর্তি হচ্ছে বুধবার। দীর্ঘ এই সময় মেয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন রোদেলার বাবা-মাসহ স্বজনেরা। তবে এখনো গ্রেফতার হয়নি ঘাতক স্বামী সোহানুর রহমান (২৮)।

ফরিদপুরের সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের অনার্সের মেধাবী ছাত্রী সাজিয়া আফরিন রোদেলা শহরের আলিপুর খাঁ-বাড়ি মহল্লার শওকত হোসেন খান ওরফে শকার একমাত্র মেয়ে। ২০১৭ সালের ১৩ জানুয়ারী গোয়ালচামটের নতুন বাজার মহল্লার জনৈক মমিনুর রহমান সেন্টুর ছেলে সোহানুর রহমান সোহানের সাথে তার বিয়ে হয়। অপার সম্ভাবনাময় প্রাণের প্রিয় এই সন্তানের ২য় মৃত্যুবার্ষিকীতে পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নিহত সাজিয়া আফরিন রোদেলার মা রুমা খান জানান, গত দুই বছর যাবত আমরা বিচারের আশায় আদালতের বারান্দায় ঘুরছি। এখনো রোদেলার ঘাতক স্বামী গ্রেফতার হয়নি। মামলাটিকে দীর্ঘায়িত করতে নানাভাবে অপচেষ্টা চালাচ্ছে প্রভাবশালী আসামীরা। তিনি রোদেলা হত্যা মামলার আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও শাস্তি দাবি করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য রোদেলাকে চাপ দিতে থাকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। এজন্য তাকে নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করতে থাকে তারা। একপর্যায়ে রাতের বেলা স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ মিলে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রোদেলাকে। ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে বর্তমানে এ মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। মামলা নং- ৪১৭/১৭।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার এসআই গাফফার জানান, রোদেলার লাশের ভিসেরা রিপোর্টে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে। ব্যাপক তদন্ত শেষে স্বামী সোহানসহ ৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট প্রদান করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামীরা হলেন- রোদেলার ননদ সুমি বেগম (৪০), শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম (৫৫), ভাসুর মোঃ সুমন (৩৬), ভাসুরের স্ত্রী রেখা বেগম (২৫), শ্বশুর মোমিনুর রহমান সেন্টু (৬৫), ননদের স্বামী মোঃ হাফিজ (৪৫) ও সোহানের মামাতো ভাই সাজিদ (৪২)।

জানা গেছে, মামলার অন্য আসামীরা আদালত থেকে বর্তমানে জামিনে রয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকেই মামলার প্রধান আসামী ও রোদেলার স্বামী সোহানুর রহমান পলাতক রয়েছে। তবে সোহানকে আটকে জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।

নিহত রোদেলার পিতা শওকত হোসেন খান বলেন, এ মামলায় ১৭ জন স্বাক্ষী রয়েছেন। পুলিশ ইতোমধ্যে চার্জশীট দাখিল করেছে। আশা করছি আসামীদের গ্রেফতারে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর দ্রুতই চার্জ গঠন হবে।

 

আরো পড়ুন : যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে রাতভর নির্যাতন
গৌরনদী (বরিশাল) সংবাদদাতা, (৩০ অক্টোবর ২০১৮)

দাবিকৃত যৌতুকের ২ লাখ টাকা না পেয়ে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের বড়বাশাইল গ্রামের গৃহবধু সীমা খানমকে (১৯) শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাষন্ড স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনের শিকার গৃহবধু সীমা এখন গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।

নির্যাতিত গৃহবধু সীমার মা নিলুফা বেগম জানান, এক বছর আগে গৌরনদী উপজেলার বড়দুলালী গ্রামের এরশাদ আলী বেপারীর একমাত্র কন্যা সীমা খানমের (১৯) সাথে আগৈলঝাড়া উপজেলার বড়বাশাইল গ্রামের মোতালেব ফকিরের বড় ছেলে মানিক ফকিরের (২৬) পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সেসময় জমি বিক্রি করে জামাতা মানিককে যৌতুক হিসেবে নগদ দেড়লাখ টাকা, সোয়া ২ ভরি স্বর্ণালংকার, খাট, আলমিরাসহ ৩ লক্ষাধিক টাকার মালামাল যৌতুক দেয়া হয়।


গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন গৃহবধু সীমা খানম অভিযোগ করেন, গত ২ মাস ধরে তার স্বামী ও দেবর ড্রেজার মেশিন কেনার জন্য আরো দুই লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য তাকে বিভিন্ন সময় চাপ সৃষ্টি করে আসছিল।

তিনি আরো জানান, দাবিকৃত যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করায় প্রায়ই স্বামী মানিক ফকির, দেবর ছালাম ফকির, শ্বশুর মোতালেব ফকির, শাশুড়ি রওশনারা বেগম তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। দাবিকৃত যৌতুকের ২ লাখ টাকা না পেয়ে স্বামী মানিক ফকির গত ২৬ অক্টোবর গভীর রাতে সীমার মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধে। এরপর রাতভর তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।

তার সারা শরীরে কিল-ঘুষিসহ রড দিয়ে পেটানো হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় বাঁচার জন্য গৃহবধু সীমা আর্তচিৎকার করলেও কেউ তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি।


তিনি বলেন, পরদিন ২৭ অক্টোবর ভোরে সীমাকে ঘরে আটক রাখা হয়। যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতন করে ঘরে আটকে রাখার বিষয়টি ওইদিন সকালে সিমা তার ভাই জুয়েল বেপারীর জানানোর পর তার পরিবারের সদস্যরা সীমাকে উদ্ধার করতে যায়।

নির্যাতিতার সেজভাই জুয়েল বেপারী বলেন, তাৎক্ষনিক আমি আমার বাবাকে সাথে নিয়ে ওই বাড়িতে যাওয়ার পর ভগ্নিপতি মানিক ও তার স্বজনরা আমাদের গালাগাল করে মারধর করার জন্য উদ্যত্ত হয়। এরপর আমি ও আমার বাবা আগৈলঝাড়া থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিলে থানার এসআই মোঃ জসিম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় সীমাকে উদ্ধার করেন।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে সীমার স্বামী মানিক ফকির বলেন, সংসারে মাঝেমধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়েই থাকে। এটা স্বাভাবিক বিষয়।

আগৈলঝাড়া থানার ওসি মোঃ আফজাল হোসেন জানান, এ ব্যাপারে নির্যাতিত গৃহবধুর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
বাকেরগঞ্জে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার ডিমলায় মাদরাসা-শিক্ষকের বাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই শ্রম আইন সংশোধনে কিছু বিষয়ে নীতি-নির্ধারক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হবে : আইনমন্ত্রী দুবাইয়ের হিমঘরে সাড়ে ৩ মাস ধরে পড়ে আছে প্রবাসীর লাশ আলমডাঙ্গায় স্বামীর মোটরসাইকেল থেকে পড়ে ট্রাকচাপা স্ত্রী নিহত হজযাত্রীদের কাছ থেকে কোরবানির টাকা নিলেই ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও গাজায় চলছে প্রচণ্ড লড়াই বগুড়ায় স্কুলছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ প্রথমবারের মতো পাকিস্তান সফর করবে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল জীবননগরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু ৯৪ দিনেই হাফেজ ৯ বছরের নুসাইব

সকল