১৭ মে ২০২৪, ০৩ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫
`


স্ত্রীকে মেরে লাশ পুড়িয়ে ফেলেছেন সেলিম

স্ত্রীকে মেরে লাশ পুড়িয়ে ফেলেছেন সেলিম - সংগৃহীত

স্ত্রীকে হত্যা করে তার লাশ পুড়িয়ে ফেলার কথা স্বীকার করেছেন সাভার যুবলীগের সাবেক সভাপতি সেলিম মণ্ডল। মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বুধবার বিকেলে তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। 

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান, মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তীসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম জানান, গত ৩ আগস্ট জেলার সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের শরতপুর গ্রাম থেকে অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করে সিংগাইর পুলিশ। লাশটির ৯০ শতাংশ পোড়া ছিল। এ ব্যাপারে পুলিশ সিংগাইর থানায় হত্যা মামলা করে। প্রথমে লাশের পরিচয় না পেয়ে ও ঘটনা সম্পর্কে কোনো তথ্য না থাকায় মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। অজ্ঞাতনামা লাশটি নিয়ে জেলা পুলিশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সারা বাংলাদেশের পুলিশদের মাধ্যমে লাশটির পরিচয় জানার চেষ্টা চালায়। 

তিনি আরো জানান, ১৯ আগস্ট নিহতের পরিবার আলামত দেখে লাশটি সনাক্ত করে। ১৭ দিন পর লাশের পরিচয় পেয়ে পুলিশ ১৯ আগস্ট সেলিম মণ্ডলের সাভারের  বাড়িতে অভিযান চালায়। সেদিন তাকে পাওয়া না গেলেও তার ভাই জুয়েল মণ্ডলকে আটক করে পুলিশ। তাকে আয়েশা হত্যা মামলার আসামি দেখানো হয়েছিল। 

এদিকে ইতালি পালানোর সময় গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে মানিকগঞ্জ পুলিশের সহায়তায় অভিবাসন পুলিশ হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করে সেলিম মণ্ডলকে সিংগাইর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। সিংগাইর থানা পুলিশ তাকে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মানিকগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিমের কাছে হাজির করে রিমান্ড আবেদন জানায়। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের চতুর্থ দিন মানিকগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করেন সেলিম। 

সেলিম মণ্ডল আদালতকে জানান, নিহত আয়েশা আক্তার বকুল তার দ্বিতীয় স্ত্রী ছিল। অনেক দিন ধরে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। হত্যার দিন রাতে তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে স্ত্রীকে হত্যা করেন সেলিম। এরপর বিছানার চাদর দিয়ে লাশ মুড়িয়ে সহযোগীদের নিয়ে নিজস্ব প্রাইভেটকারে করে  সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের জামালপুর এলাকায় যান। সেখানে পেট্রোল দিয়ে লাশটি পুড়িয়ে ফেলা হয়। 

সেলিম মণ্ডল আরো জানান, লাশটি পোড়ানো সময় ফজরের আজান দিচ্ছিল। এসময় তারা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

জানা যায়, সেলিম মণ্ডল ও তার ভাই মহসিন মণ্ডল এবং জুয়েল মণ্ডলের নামে তিনটি শটগানের লাইসেন্স আছে। এ সব কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পেত না। আয়শা হত্যার ঘটনায় সম্প্রতি জুয়েল মণ্ডলকে শটগানসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আরো পড়ুন : ভরণ-পোষণের জন্য উচ্চশিক্ষিত ৩ ছেলের বিরুদ্ধে বাবার মামলা
চট্টগ্রাম ব্যুরো ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৮:০২

উচ্চ শিক্ষিত তিন পুত্র সন্তানের বিরুদ্ধে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইনে এবার অভিযোগ দায়ের করেছেন এক অসহায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের (বিএইচআরএফ) আইনি সহায়তায় মোহাম্মদ সাইদুল হক (৭২) মামলাটি দায়ের করেছেন। তিনি অবসরপ্রাপ্ত পরিসংখ্যান কর্মকর্তা এবং মিরেশরাই পূর্ব মালিয়াইশ গ্রামের ধনমিয়া বাড়ীর বাসিন্দা মরহুম মোঃ সোবহানের পুত্র।

বুধবার চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট হেলাল উদ্দীনের আদালতে অভিযোগটি শুনানি শেষে বাদির তিন পুত্র মোঃ নাজমুল হক হেলাল (৪৪), মোঃ সাইফুল হক (৩৬) ও মোঃ মাইনুল হকের (৩৪) বিরুদ্ধে আদালত সমন জারি করেন।


অভিযোগে উল্লেখ করেন, বহু কষ্টে অর্ধাহারে অনাহারে জীবনের সমস্ত অর্থ, শ্রম ব্যয় করে সন্তানদের লালন পালন ও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেন। বড় সন্তান মোঃ নাজমুল হক হেলাল ঠিকাদার, দ্বিতীয় সন্তান মোঃ সাইফুল হক এমকম পাশ এবং সিএন্ডএফ ফার্ম রাজিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল চৌমুহুনী আগ্রাবাদে কর্মরত সিনিয়র এসিষ্টেন্ট ও তৃতীয় সন্তান মোঃ মাইনুল হক রনি ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড ঢাকার গুলশান শাখার অফিসার। বাদির সন্তানরা আর্থিকভাবে সামর্থবান হওয়া সত্ত্বেও মাতাপিতার কোনো ভরণপোষণ দেয়া দূরে থাক তাদের সঙ্গদান এবং চিকিৎসা ও ওষুধের খরচও প্রদান করে না।

বাদি ২০০৪ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরে আসলে সামান্য পেনশনের টাকায় পরিবারের খরচ চালানো সম্ভব না হওয়ায় ইতিমধ্যে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। মেয়ের স্বামীদের সাহায্যে বাদি চোখের অপারেশন করলেও তিন সন্তান তাকে হাসপাতালে দেখতে পর্যন্ত যায়নি।

তিনি তিন সন্তান হতে মাসিক ৩০ হাজার টাকা নিয়মিত খোরপোষ বা মাতা-পিতার ভরণপোষণের দাবিতে অভিযোগটি দায়ের করেন। আদালত বাদির জবানবন্দি গ্রহণ ও দাখিলীয় দলিলপত্র বিবেচনায় প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে নিয়ে সমন জারির আদেশ দেন।

বাদি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মানবাধিকার আইনজীবীবৃন্দ যথাক্রমে এডভোকেট এ.এম জিয়া হাবীব আহসান, এডভোকেট এ এইচ এম জসিম উদ্দিন, এডভোকেট প্রদীপ আইচ দীপু, এডভোকেট সাইফুদ্দিন খালেদ, এডভোকেট মোঃ হাসান আলী প্রমুখ।

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement