১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


নি ত্যো প ন্যা স

আকাশের ওপারে আকাশ

-

তেরো.

‘জি না। বাবুকে দুধ খাওয়াচ্ছিলাম এতক্ষণ। এখন বাবুর জন্য খিচুড়ি রান্না করে তারপর ভাত বসাব।’
‘ঠিক আছে। ঠিক আছে। তুই যা গিয়ে তোর কাজ কর। আর আমি বেরিয়ে গেলে বাবুর সাথে মারামারি করিস না।’
সে মামার উপর রাগ করে না। মামার জন্য তার মায়া হয়। এই মানুষটি ভালো। বেশ ভালো। খুঁটিনাটি টুকটাক জিনিস নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামায় না।
সাধারণত যখন মামা একা বাড়িতে থাকে তখন তার সাথে খুব ভালো ব্যবহার করে, নরম গলায় কথা বলে। ডেকে এটা ওটা খেতে দেয়। শুধু যখন মামী বাসায় থাকে তখন মেজাজ দেখায়। মামী তো সবার উপরেই মেজাজ দেখায়। মামার উপরেও। মামা সেটা পারে না বলে শুধু তার উপরেই মেজাজ দেখাতে থাকে। তখন আশপাশে থাকলে দুএকটা চড় চাপড়ও খেতে হয়।
গোসল টোসল সেরে ব্যাগ হাতে মামা বেরিয়ে গেলে রিয়াজ টিভি দেখতে থাকা বাবুকে ডিম পোচ ও সবজি খিচুড়ি হাতে তুলে তুলে খাওয়ানোর ফাঁকে নিজেও টিভির দিকে চোখ দেয়। পপাইএর স্পিনাচ কার্টুন হচ্ছে। তার মনে হয় সেও যদি ওরকম স্পিনাচ খেয়ে শক্তিশালী হয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে পারত। তাহলে সে তার মাকে খুঁজে আনত। আর বাবাকেও স্পিনাচ খাইয়ে সুস্থ করতে পারত। কিন্তু সে ছোট হলেও জানে কার্টুন কার্টুনই। বাস্তবতা আর বেঁচে থাকা কার্টুন না।
কিছুক্ষণ মারামারি খুনসুটি দৌড়াদৌড়ির মধ্যে বাবুর খাওয়া আধখাওয়া হয়। সে আরেকটু জোরাজুরি করলে বাবু খাবার মুখে নিয়ে চিবিয়ে থু থু করে তার গায়ে ছিটাতে থাকে। রাগে ঘেন্নায় সে খাবার ময়লার বাস্কেটে ফেলে দেয়। তার পেটে খিদে থাকলেও কারো এঁটো কাঁটা খেতে তার ঘেন্না লাগে। তাছাড়া বাবুর জন্য রান্না করা খিচুড়ি এত বিস্বাদ হয় যে সে মুখে তুলতে পারে না। অধিকাংশ দিনই কাজের চাপের কারণে সে ঠিক মতো খেতে পারে না। সব কাজটাজ শেষ করে তার খেতে খেতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে যায়। ওরকম অসময়ে তার খেতে ইচ্ছে করে না। বমি বমি লাগে। তারপর খাওয়া যা থাকে তা প্রায় সময়ই মামী বা বাবুর না খেয়ে রেখে দেয়া অংশ। (চলবে)

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল