২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘৩ বছরে অর্থ পাচারের মামলা হয়েছে ৫০-৬০টি’

‘৩ বছরে অর্থ পাচারের মামলা হয়েছে ৫০-৬০টি’ - ছবি- সংগৃহীত

অর্থমন্ত্রী আ. হ. ম. মোস্তফা কামাল সংসদে সম্পূরক বাজেট আলোচনায় বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, কারা অর্থ পাচার করে সেই তালিকা তার কাছে নেই। তিনি সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, নামগুলো দিলে অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কাজটা সহজ হবে।

বাংলাদেশ থেকে যখন অর্থ পাচারের বড় বড় অভিযোগ রয়েছে তখন মন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর সমালোচনা হচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অর্থ পাচার সংক্রান্ত যেসব অভিযোগ রয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার এখতিয়ার রয়েছে। সংস্থাটির প্রধান আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, গত তিন বছরে অর্থ পাচার সংক্রান্ত ৫০ থেকে ৬০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলার বেশিরভাগ অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়ে গেছে।

খুরশীদ আলম বলেন, দুদকের দায়ের করা বেশিরভাগ মামলায় চার্জশিট হয়ে গেছে। এসবের মধ্যে ৫০ ভাগ মামলা ট্রায়ালে আছে। বিচারিক আদালতে অনেক মামলা বিচারের শেষ পর্যায়ে, অনেক মামলা বিচারের মাঝামাঝি পর্যায়ে। অর্থাৎ দুদক এই ৬০ মামলার ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক। এই মামলাগুলো যদি টাকার অংকে ধরা হয় তাহলে হাজার কোটি টাকা হবে।

গত বছরের ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে ক্যানাডায় টাকা পাচারের সত্যতা পাওয়ার কথা জানান। এরপর থেকে গণমাধ্যমে বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে খবর হতে থাকে।

সেসব প্রতিবেদন নজরে আসার পর গত বছর ২২ নভেম্বর হাইকোর্ট অর্থ পাচারকারীদের নাম-ঠিকানার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না, তা জানতে চায়। যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে জানতে চাওয়া হয় তার মধ্যে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন একটা।

২০১৫ সালে অর্থ পাচারের অভিযোগুলো দেখার জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডিকেও দায়িত্ব দেয়া হয়।

দুর্নীতি নিয়ে কাজ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, অর্থ পাচারের ব্যাপারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায় না। এর মূল কারণ রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। আমাদের দেশে অর্থ পাচারের সাথে জড়িতদের বিচার ও অর্থ ফিরিয়ে আনার দৃষ্টান্ত হয়েছিল ২০০৭/৮ সালে। যে প্রক্রিয়ায় এটা তখন সম্ভব হয়েছিল একই প্রক্রিয়া এখনো বিদ্যমান আছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক সদিচ্ছা নেই, তাই এখন হচ্ছে না।

বাংলাদেশ জাতিসঙ্ঘের দুর্নীতি বিরোধী কনভেনশনের সদস্য রাষ্ট্র স্বাক্ষরকারী। যেসব দেশে অর্থ পাচার হয় তারাও স্বাক্ষরকারী সদস্য রাষ্ট্র। এই কনভেনশনের আওতায় পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে চিহ্নিত করা, অর্থ সম্পদ ফেরত আনা সম্ভব, যারা জড়িত তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাও সম্ভব বলে মনে করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালাক।

তবে দুদক বলছে, অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে তথ্য সংগ্রহ করা। এই তথ্য সংগ্রহ করার জন্য তাদের অনেকটা সময়ক্ষেপণ হয় বলেও জানান দুদক আইনজীবী।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট আর্থিক অপরাধের তদারকি সংস্থা হিসেবে কাজ করে।

দুদকের যদি আর্থিক দুর্নীতির কোনো তথ্যের দরকার হয় তাহলে সেটা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের কাছ থেকে নিতে হয়।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement