মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছে : ড. মঈন খান
- নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
- ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০৫
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, এ সরকার উন্নয়নের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে। দেশনেত্রী আমাকে কিছুদিনের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আজ যখন সরকারের কেউ ১০ কোটি টাকা প্রকল্প নিয়ে যায় সরকার সেটিকে বাড়িয়ে ১০০ কোটি টাকা করে নিয়ে যেতে বলে। ৫০ কোটি করে ভাগাভাগি।
গতকাল বুধবার বিকেলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সাইনবোর্ড এলাকায় পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন গলিতে বিএনপির এক দফা দাবিতে চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফতুল্লার সমাবেশে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, এ সরকার গণতন্ত্রকে হরণ করেছে। এ গণতন্ত্রকে আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। তাই আজ নারায়ণগঞ্জের মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছে।
আপনাদের ফতুল্লা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু পুলিশের গুলিতে চোখ হারিয়েছেন। বিএনপির কত নেতাকর্মী জীবন দিয়েছে। তাদের এই আত্মত্যাগ যেন বৃথা যেতে না পারে। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা ও মানুষের গণতন্ত্র রক্ষা করা। এ স্বৈরাচারী সরকার দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দেশ চালাচ্ছে। তাদের দাবি, তারা নাকি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। যে সরকার গণতন্ত্র হরণ করে আজ অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে। এ সরকার কোনো দিন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হতে পারে না। এ সত্য আজ শুধু বাংলাদেশের ভেতরে নয়, বাংলাদেশের বাইরের মুক্তিকামী বিশ্বের প্রতিটি মানুষ এটা টের পেয়ে গেছে।
দ্রব্যমূল্যে মানুষের নাভিশ্বাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আজ মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। রিজার্ভ এত দ্রুত কেন কমল তার জবাব এ সরকারকে দিতে হবে। যারা সুশাসনে বিশ্বাস করে তারা এদের বিরুদ্ধে। রিজার্ভ খালি করে ওরা আইএমএফের কাছে যেতে বাধ্য হয়েছে। অর্থনীতিকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। এর জন্য সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের মানুষ। ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা বলতাম- পাকিস্তান ২২টি ধনী পরিবার সৃষ্টি করেছে। আমরা এর প্রতিবাদ করেছিলাম। এই সালামরা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক অধিকার রক্ষা করার জন্য। আওয়ামী লীগ একই কায়দায় কতগুলো পরিবার সৃষ্টি করেছে যারা মানুষের সম্পদ বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে।’ বলেন ড. মঈন খান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বলে বিএনপির জন্ম নাকি ক্যান্টনমেন্টে। আমরা বলতে চাই- বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে হয়নি, আওয়ামী লীগের জন্ম তো ক্যান্টনমেন্টে হয়নি। সে ব্যাপারে আমি কথা বলব না বললে তারা লজ্জা পাবে। আওয়ামী লীগের জন্ম তো গণতান্ত্রিকভাবে হয়েছিল। কেন তারা স্বাধীনতার দুই তিন বছরের মাথায় বাকশাল কায়েম করেছিল। বিএনপি গণতন্ত্র হরণ করেনি, উল্টো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
মঈন খান বলেন, ডাক্তাররা বলেছেন- বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হবে। সরকার মানবাধিকার ক্ষুণœ করে তাকে আটকে রেখেছে। এর জবাব আওয়ামী লীগকে দিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা আন্দোলন করছি ক্ষমতার জন্য নয়। আমরা আন্দোলন করছি মানুষের ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য। আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি। আওয়ামী লীগ ভালো কাজ করে থাকলে মানুষ তো তাদের ভোট দেবেই। স্পষ্ট করে বলতে চাই। আওয়ামী লীগ যদি মানুষের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা করে তাহলে আমরা ইতোমধ্যে দেখিয়ে দিয়েছি মানুষ আওয়ামী লীগকে ঘৃণা করে। আওয়ামী লীগ চলে যাক। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক। আওয়ামী লীগ সে নির্বাচনে বিজয়ী হলে আমিও তাদের অভিনন্দন জানাব। কিন্তু ওরা জানে- ওরা কত অপকর্ম করেছে। তাই ওরা সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে ভয় পায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা বিভাগীয়সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহঅর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, আজহারুল ইসলাম মান্নান প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা