২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মহররম ১৪৪৬
`

ঢাকায় সুলভ মূল্যে গরুর গোশতসহ দুগ্ধজাত পণ্য বিক্রি করবে খামারিরা

‘ফারমার্স মার্কেট’ করার প্রস্তাব ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের
-


সাশ্রয়ী মূল্যে ভোক্তাদের নিরাপদ গরু ও খাসির গোশতসহ দুগ্ধজাত পণ্য পৌঁছে দিতে রাজধানী ঢাকায় ‘ফারমার্স মার্কেট’ চালু করতে চায় বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন। এ জন্য ঢাকার অঞ্চলভেদে কৃষক বা খামারিদের জন্য আলাদা মার্কেট বা দোকান (স্টল) বরাদ্দ চায় সংগঠনটি। সিটি করপোরেশন বা সরকারের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা চায় ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন। সরাসরি তৃণমূলের খামারিরা এই ফারমার্স মার্কেটে সাশ্রয়ী মূল্যে গরুর গোশত, খাসির গোশত, দুধ, পনির, ঘি দইসহ দুগ্ধজাতপণ্য বিক্রি করবেন। মাঝখানে কোনো মধ্যস্বত্বভোগী থাকবে না। ফলে ভোক্তা সাশ্রয়ী মূল্যে নিরাপদ পণ্য পাবেন এবং খামারিরাও লাভবান হবেন। ইউরোপসহ উন্নত বিশে^র আদলে এই ফারমার্স মার্কেটের প্রস্তাবনা নিয়ে ইতোমধ্যে সিটি করপোরেশনের সাথে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্যান্য নিত্যপণ্যের মতো গরু ও খাসির গোশতের দাম দৌড়াচ্ছে সমানতালে। গরুর গোশতের কেজি ৭৫০ টাকার উপরে আর খাসির গোশত ১১৫০ টাকা কেজি ছাড়িয়েছে। তৃণমূল তথা খামারিরা গরু ও খাসি বিক্রির পর তা দুই থেকে তিন হাত বদলের পর রাজধানী ঢাকায় কসাই পর্যন্ত পৌঁছে। এতে বেড়ে যায় খরচ। ফলে ভোক্তাদের উচ্চমূল্যে কিনতে হচ্ছে গরু ও খাসির গোশত। এতে মূলত মধ্যস্বত্বভোগীরাই লাভবান হচ্ছেন। এমতাবস্থায় রাজধানী ঢাকাসহ মেট্রোপলিটন বিভাগীয় শহরে ফারমার্স মার্কেট চালু করতে চাচ্ছে বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন। খামারিরা সরাসরি গরু-ছাগল সরবরাহ করবেন, মাঝখানে কোনো হাত বদল না করে জবাই করে গোশত কিনতে পারবেন ভোক্তারা। এতে ভোক্তারা ন্যায্যমূল্যে গোশত কিনতে পারবেন।


খামারিরা বলছেন, এই রমজানে সুলভমূল্যে গরু গোশত ৬৪০ টাকায় এবং খাসির গোশত ৯৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারে গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৮০ টাকায়। খাসির গোশত ১১৫০ টাকার উপরে। অর্থাৎ প্রতি কেজি গরুর গোশতে ১১০-১৪০ টাকার উপরে এবং খাসির গোশত কেজিতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি দরে কিনতে হচ্ছে। বর্তমানে রমজান উপলক্ষে যে সুলভমূল্যে গরু ও খাসির গোশত পাওয়া যাচ্ছে তা সারা বছরই সাশ্রয়ী মূল্যে ভোক্তাকে দেয়া সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, ইউরোপসহ উন্নত বিশে^ ফারমার্স মার্কেট রয়েছে। যেখানে কৃষক বা খামারিরা সরাসরি ফারমার্স মার্কেটে পণ্য সরবরাহ করে থাকে। বাংলাদেশে আমরা যারা খামারি আছি, সরাসরি ফারমার্স মার্কেটে গরু ও খাসি সরবরাহ করব। যেখানে খামারির গরু ও খাসির গোশত ভোক্তাদের কাছে সরাসরি বিক্রি হবে। তিনি বলেন, এখন যেটা হয় সেটা হলো মাঠপর্যায়ের কোনো খামারি বা কৃষকের কাছ থেকে কিংবা স্থানীয় হাট থেকে গরু-খাসি-ছাগল কিনে তা কমপক্ষে দুই তিন হাত বদল হয়ে ঢাকায় কসাইরা জবাই করে বিক্রি করেন। এতে গোশতের মূল্য অনেক বেড়ে যায়। যখন সরাসরি খামারিরা ফারমার্স মার্কেটের নির্ধারিত দোকানে গরু-খাসি সরবরাহ করবেন এতে আর মধ্যস্বত্বভোগী থাকবে না। এতে ভোক্তারা নির্ভেজাল জিনিস পাবেন এবং বাজারমূল্য থেকে কম দামে পাবেন। অর্থাৎ ভোক্তারাও লাভবান হবেন, খামারিরাও লাভবান হবেন।


ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, শুধু গোশত নয়, খামারে উৎপাদিত দুধ, খামারিদের তৈরি পনির, দধি, ঘি, বিভিন্ন রকম মিষ্টান্ন বিক্রি হবে ফারমার্স মার্কেটে। আমরা একটা মার্কেট বানাব, যেখানে সারা দেশ থেকে খামারিরা তাদের পণ্য নিয়ে আসবে। ডেইরি অ্যাসোসিয়েশন থেকে আমরা ভোক্তাদের নিশ্চিত করব যেসব পণ্য ফারমার্স মার্কেটে থাকবে সেগুলো শতভাগ নিরাপদ ভেজালমুক্ত পণ্য।
ইমরান হোসেন বলেন, ধরেন লালমনিরহাটের একজন খামারি বা কৃষক গরু ঢাকায় নিয়ে আসবে, তিনি তা জবাই করে সরাসরি ভোক্তার কাছে বিক্রি করবেন। তাহলে তো ছোট খামারিরা এটা পারছে না-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ছোট খামারিরাও পারবে। সেক্ষেত্রে ছোট খামারিরা কমিউনিটি বেইজড হবে। যারা ২-৩টা করে গরু পালন করে, ১০-২০ জন মিলে একটা কমিউনিটি হলো। তারা একসাথে দুধ সংগ্রহ করে পণ্য বানিয়ে নিয়ে এলো। ডেইরি অ্যাসোসিয়েশন ভালো ও নিরাপদ একটা স্থান করে দেবে এবং মার্কেটিং করবে।
সরকার বা ঢাকা সিটি করপোরেশনের কাছে এই ‘ফারমার্স মার্কেট’-এর জন্য আলাদা জায়গায় মার্কেট বা দোকান (স্টল) বরাদ্দ চায় ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন। ইমরান হোসেন বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ইংল্যান্ড, বেলজিয়ামসহ বিভিন্ন দেশে যেখানে এই প্রক্রিয়ায় খামারিরা বিক্রি করছে এসব মডেল সংশ্লিষ্টদের দেখিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের সাথে দুইবার বসেছি।
তিনি বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় অঞ্চলভেদে এই মার্কেটের জায়গা চাই। সিটি করপোরেশন বা সরকার অবকাঠামো করে দিক। আপাতত দুই থানা মিলে এই মার্কেট করে দেয়া হোক। পর্যায়ক্রমে প্রতি থানায় বা এ সংখ্যা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। আমরা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে খামারিরা উপকৃত হবে। ভোক্তারাও সাশ্রয়ী মূল্যে নিরাপদ পণ্য পাবে।


আরো সংবাদ



premium cement
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রংপুর মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজুসহ গ্রেফতার ১৭ ঢাকায় গুলিবিদ্ধ শিবলুর লাশ ফেনীতে দাফন দেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতেই এমন সহিংসতা : প্রধানমন্ত্রী মার্কিন কংগ্রেসে নেতানিয়াহুর বক্তব্যের জবাবে যা বললেন ইরানের প্রেসিডেন্ট রেমিট্যান্স ও প্রবাসীদের দেশে ফেরা নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছে : পলক অস্ত্রবিরতির জন্য হ্যারিসের আহ্বান, সমালোচনায় ইসরাইলি কট্টরপন্থিরা আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী ‘ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করার পর হাত-পা বেঁধে ফেলেছি’ নাশকতাকারীদের ছাড় দেয়া হবে না : ডিবিপ্রধান হারুন সিলেটে আজ কারফিউ শিথিল ১২ ঘণ্টা

সকল