২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

শব্দদূষণরোধে সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ

-

শব্দদূষণরোধে সমন্বিত উদ্যোগে জোর তাগিদ দিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন এমপি বলেছেন, শব্দদূষণের প্রত্যক্ষ শিকার সাধারণ জনগণ। এ জন্য আমাদেরকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। কারণ শব্দদূষণ একটি নীরব ঘাতক। জলবায়ু অভিযোজনের জন্য আমরা যেভাবে কাজ করছি, ঠিক একইভাবে শব্দদূষণ নিয়ে কাজ করতে হবে। শব্দদূষণ কারা করছে তা নির্ণয় করে আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারি। গতকাল সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে পরিবেশ অধিদফতরের ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প’-এর আওতায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের নিয়ে একটি সচেতনতামূলক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরিবেশ অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পে জরিপ ও মতবিনিময় সভার কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতায় আছে ইকিউএমএস কনসালটিং লিমিটেড এবং বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের সাবেক ভিসি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকীর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন- ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রবিউল আলম, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন স্টামফোর্ড বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন প্রকল্পের মাঠ সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার মো: নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারী।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা, ডাক্তার, বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মী, গাড়িচালক, সামাজিক ও পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা।
স্বাগত বক্তবে স্টামফোর্ড বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, শব্দদূষণসহ পরিবেশদূষণ রোধে আমাদের দেশে পর্যাপ্ত আইন রয়েছে, তবে আইনের প্রয়োগ হোক সর্বেশেষ পদক্ষেপ এবং সচেতনতাই হোক সর্বপ্রথম পদক্ষেপ।
সভাপতির বক্তব্যে স্থপতি মোহাম্মদ আলী নকী বলেন, শব্দ একটি আঘাত সৃষ্ট বাস্তব ঢেউ, এই ঢেউ অসহনীয় পর্যায়ে গেলে তা শব্দদূষণে পরিণত হয়। এই ঢেউয়ের ভেতর একজন মানুষ কত সময় বা কতদিন ধরে অবস্থান করছেন তা গুরুত্বপূর্ণ। এটির ওপর নির্ভর করে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা বেশি। শব্দদূষণরোধে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রবিউল আলম বলেন, ডিটিসিএ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে কাজ করে শব্দদূষণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও সমন্বয় করতে সহযোগিতা করবে। সরকারের এনফোর্সমেন্ট কর্তৃপক্ষকে শব্দমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র প্রদান করতে হবে, যেন তারা শব্দের তীব্রতা পরিমাপ করে পদক্ষেপ নিতে পারেন। এ ছাড়াও তিনি শব্দদূষণরোধে রাস্তার পাশে সাউন্ড ব্যারিয়ারের জন্য গাছ লাগানোর পরামর্শ দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, যানবাহনের সৃষ্ট শব্দদূষণের প্রত্যক্ষ শিকার সাধারণ জনগণ। তাই নিজ স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমাদের নিজেদেরই হর্ন বাজানো বন্ধ করতে হবে। শব্দদূষণের উৎস চিহ্নিত হলে প্রাধান্য ভিত্তিতে সমাধান করতে হবে এবং পরিবেশ অধিদফতর, বিআরটিএ, বিআরটিসি, পুলিশ, রাজউক, সিটি করপোরেশনকে পৃথকভাবে দ্বায়িত ভাগ করে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement