চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো হয়েছে। নদীর আটটি পয়েন্টে এসব ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। অবৈধ জাল ফেলে মা মাছ ধরা, ইঞ্জিন চালিত নৌকার চলাচল বন্ধ, বালু উত্তোলন ও ডলফিন রক্ষায় নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য এসব সিসি ক্যামেরা ব্যবহার হবে।
ক্যামেরাগুলোর মাধ্যমে নজরদারি চালাবে নদীটির নিরাপত্তায় থাকা নৌ পুলিশের একটি ইউনিট।
হালদা নদী বাংলাদেশের একটি প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র, বাংলাদেশের সরকার নদীটিকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ বলে ঘোষণা করেছে। এপ্রিল মাসেই নদীটিতে মাছের প্রজনন মৌসুম। এর আগেই হালদা নদীর প্রাকৃতিক প্রজনন বৈচিত্র্য রক্ষায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে নজরদারির এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মনজুরুল কিবরিয়া বলেছেন, ‘হালদা নদীর জৈববৈচিত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই নদী থেকে গোপনে জাল পেতে মাছ ধরা, ডলফিন হত্যা করা বা বালু তোলার অভিযোগ পাওয়া যায়। বিভিন্ন সময় পুলিশের অভিযানে জাল ও ট্রলার আটকও করা হয়েছে। অনেক সময় নদীতে থাকা ডলফিনের মৃত্যু বা হত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে।
ড. মুহম্মদ মনজুরুল কিবরিয়া বলছেন, ‘এখন তো আমাদের ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবী হালদা নদীর মা মাছ পাহারা বা সুরক্ষায় কাজ করছে। কিন্তু এতো বড় একটি নদীকে এতো কম মানুষ দিয়ে পাহারা দেয়া সম্ভব না। আমরা অনেকদিন ধরেই সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা বলে আসছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘এই ক্যামেরাগুলো বসানোর ফলে কয়েকটা সুবিধা পাওয়া যাবে। যেকোনো স্থান থেকে নদী নজরদারি করা যাবে, রাতেও নদীতে কেউ জাল বসাচ্ছে কিনা, বালি উত্তোলন বা ডলফিন হত্যা করছে কিনা, অবৈধ কিছু করা হচ্ছে কিনা, সেটা বোঝা যাবে। সেই সাথে যারা অবৈধ মাছ ধরে বা বালু তোলে, তাদের মধ্যেও একটা ভীতির তৈরি হবে।’
নৌ পুলিশের বসানো আটটি ক্যামেরায় প্রজনন ক্ষেত্রের ছয় কিলোমিটার এলাকা কাভার করছে।
অধ্যাপক কিবরিয়া বলছেন, ‘নদীর প্রজনন ক্ষেত্রের কমপক্ষে ১৫ কিলোমিটার এলাকা সিসি টিভির আওতায় আনতে হবে। নৌ পুলিশের পাশাপাশি একটি বেসরকারি সংস্থাও বাকি এলাকায় ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, ‘তাদের ক্যামেরায় মদুনাঘাট থেকে আমতোয়া পর্যন্ত নজরদারি করা হচ্ছে। ইন্টারনেট সংযুক্ত থাকায় যেকোনো স্থান থেকে এসব সিসি ক্যামেরায় নজরদারি করা যাবে।
সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাটনাতলী পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎসাহিত হয়ে চট্টগ্রামের ভেতর দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে মিশেছে।
প্রায় ৮১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ নদীটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র বলে মনে করা হয়। সাধারণত এপ্রিল থেকে জুন মাস হালদা নদীতে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউসের মতো কার্প জাতীয় মাতৃমাছ প্রচুর পরিমাণ ডিম ছাড়ে। এসব ডিম সংগ্রহ করে কার্প পোনা উৎপাদন করা হয়। ২০২০ সালে হালদা নদী থেকে রেকর্ড ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল।
সূত্র : বিবিসি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা