১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


ছেলেকে কলেজে ভর্তি করানো হলো না আবুল কাশেমের

নিহত আবুল কাশেম - ছবি : নয়া দিগন্ত

জীবনের পুরো সময়টা কাটিয়েছিলেন প্রবাসে। সুখ নামক সোনার হরিণ ধরা হয়নি ওমানের তপ্ত রোধে ১৮ বছরের বেশি সময় হাঁড়ভাঙা পরিশ্রম করেও। ব্যর্থ হয়ে ফিরে এলেন দেশে। ততোদিনে বড় হয়েছে পরিবার। দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের বাবা তিনি। সংসারের চাকা ঘুরতে হলে অর্থ উপার্জনের বিকল্প নেই। আবার নামলেন জীবনযুদ্ধে। শিল্প প্রতিষ্ঠান বিএসআরএমে শ্রমিকের কাজ নিলেন। উপার্জিত অর্থে বেশ ভালোই চলছিলো সংসার। পরিশ্রম করে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা করাচ্ছিলেন। বড় ছেলে সদ্য প্রকাশিত মাধ্যমিক পরিক্ষায় সফলতার সাথে উর্ত্তিণ হয়েছে। মনে মনে ভেবেছিলেন, আর তো কয়টা বছর। ছেলেটার একটা গতি হলেই আমার অবসর! কিন্তু ছেলের আর গতি হয়নি। তবে অবসরে গিয়েছেন আবুল কাশেম। চির অবসরে। শনিবার মিরসরাইয়ের বিএসআরএম শিল্প প্রতিষ্ঠানে ফার্নেশ বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন তিনি।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গের পূর্ব দিক থেকে আসছিল চাপা কান্নার শব্দ। সেখানে গাছের নিচে বসে কাঁদছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহেদুল ইসলাম রানা। নিহত আবুল কাশেমের শ্যালক পরিচয় দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘দুলাভাই সব সময় স্বপ্ন দেখতেন তার ছেলে পড়ালেখা শিখে একদিন পরিবারের দুঃখ-কষ্ট দূর করবে। পরিবারে দায়িত্ব নিয়ে সত্যিকার অর্থে বড় ছেলের দায়িত্ব পালন করবে। সেজন্য নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছেন। সদ্য প্রকাশিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় সরকার হাট এন আর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ভালো ফলাফল করে আমার ভাগিনা।’

তিনি আরো বলেন, দুলাভাই আমাকে ফোনে জানিয়েছেন আগামীকাল (রোববার) বাড়িতে আসবেন। আমার সাথে ছেলের ভর্তি নিয়ে কথা বলবেন। তিনি ঠিকই বাড়িতে যাবেন, তবে লাশ হয়ে! ছেলের ভর্তি নিয়ে কথাও হবে না। ছেলেকে ভর্তি করার স্বপ্নও পূরণ হবে না!

আবুল কাশেমের বাড়ি উপজেলার হাইতকান্দি ইউনিয়নের কচূয়া গ্রামে। ভালো মানুষ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। তার মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না। শিশু সন্তান সাইদুর রহমান ইফাতকে বুকে নিয়ে নিথর আবুল কাশেমের স্ত্রী সাহিনুর আক্তার। বিলাপ করতে করতে জ্ঞান হারান, জ্ঞান ফিরলে আবার বিলাপ..।

ছেলে তানভীর আহমেদ ইমন আর মেয়ে সাদিয়া আফরিন ইভাকে সান্ত্বনা দিয়েও আটকাতে পারছেন না প্রতিবেশীরা। বারবার বাবাকে ফিরিয়ে দেয়ার আকুতি জানিয়ে বিলাপ করছেন তারা।

পরিবারে একমাত্র উপর্জক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে শোকাহত পরিবারটির সামনে এখন ভয়াবহ বাস্তবতা।

নিহতের শালা জাহেদুল ইসলাম রানা বলেন, আমার দুলাভাই জীবনে যা উপার্জন করেছেন সব পরিবারে জন্য ব্যয় করেছেন। কোথাও কিছু জমা নেই যে পরিবারটি চলবে। এখন ওদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন! আশা করছি বিএসআরএম অসহায় পরিবারটির দিকে খেয়াল রাখবেন।


আরো সংবাদ



premium cement
লটারিতে মোটরসাইকেল জিতছে মা, সংসার ভাঙল মেয়ের আমাদেরকে পরকালের জন্য তৈরি হতে হবে : অ্যাডভোকেট জুবায়ের ওমানে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পরোক্ষ আলোচনা ইরানের দক্ষতা অর্জন করে নিজেদের মানকে উন্নত করতে হবে : আবদুল হালিম বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু মধ্য রাতে, চিন্তিত জেলেরা ভোটে জেতার ৬ মাসের মধ্যেই আজাদ কাশ্মিরকে ভারতের অংশ বানাতে চান যোগী পোরশায় অটোরিকশার ধাক্কায় শিশু নিহত কালশীতে পুলিশ বক্সে আগুন অটোরিকশা চালকদের ২১ কেজির ভোল মাছ সাড়ে ৩ লাখে বিক্রি ভিন্নভাবে গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদ জানালো অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কটিয়াদীতে চেয়ারম্যান পদে ৪ প্রবীণ ২ নবীনের লড়াই

সকল