০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ব্যর্থ হলো বিএসইসির উদ্যোগ, ফের পতনের পথেই পুঁজিবাজার

এক ধাক্কাতেই বাজার থেকে চলে গেল ৩ হাজার ১৮১ কোটি টাকা
-

দেশের পুঁজিবাজারের পতন রোধে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উদ্যোগ ব্যর্থ হলো। কোনো কাজে আসলো না তাদের সেই দেড় ঘণ্টার বৈঠক। আবার পতনের পথেই ফিরল পুঁজিবাজার। ৭৮.২৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর হারিয়েছে। আর মন্দার কারণে শেয়ার ছেড়ে দেয়ার মানসিকতায় ছিলেন ৭৭ শতাংশ বিনিয়োগকারী। মাত্র ২৩ শতাংশ ক্রেতা ছিল বাজারে। এক ধাক্কাতে একদিনেই বাজার থেকে চলে গেল তিন হাজার ১৮১ কোটি ১১ লাখ টাকা।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাজ শুধু বৈঠকেই শেষ। কিন্তু বাজারে এর কোনো পদক্ষেপ নেই তাদের। এ, বি, এন এবং জেড শ্রেণীর শেয়ার বিক্রির চাপে ছিল। ব্যাংক, বীমা, জ্বালানিসহ ১৯টি খাতই গতকাল বিক্রির চাপে ছিল। দরপতনের কারণে লেনদেন ও টাকায় বেচাকেনা বাড়লেও কমেছে বাজারমূলধন। ডিএসইর বাজারমূলধন কমেছে তিন হাজার ১৮১ কোটি ১১ লাখ টাকা বা ০.৪৫ শতাংশ।
লেনদেনের তথ্য থেকে বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, লেনদেনের শুরুর দিকে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে প্রথম দুই ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই বদলে যেতে থাকে বাজারের চিত্র। দাম বৃদ্ধির তালিকা থেকে একের পর এক কোম্পানি ছিটকে পড়ে। ভারী হতে থাকে দাম পতনের তালিকা। ফলে বিক্রির চাপ বাড়তে শুরু করে। কিন্তু বাজারে কেনার মতো তেমন ক্রেতা ছিল না। ৭৭ শতাংশ ছিল বিক্রির নেশায়। পতনের বাজারে কেউই শেয়ার কিনতে আগ্রহী না।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪১.২৫ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৬৩৩.৬০ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৭.৩৬ পয়েন্ট কমে এক হাজার ২৩৫.৭৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৩.৪৮ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৯৮০৪২ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ডিএসইতে ১৮ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার তিন শ’টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড ৫৭৯ কোটি ৫৬ লাখ ৯ হাজার ৭০৮ টাকা বাজারমূল্যে হাতবদল হয়েছে। গত সোমবার লেনদেন হয়েছিল ৫৭৪ কোটি ৯২ লাখ টাকার। আগের দিনের চেয়ে লেনদেন তিন কোটি টাকা বেশি ছিল। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯৬টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫০টির, কমেছে ৩১০টির বা ৭৮.২৮ শতাংশে এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির।
ঢাকায় ব্লক মার্কেটে গতকাল ৪০টি কোম্পানির ৯৩ লাখ ৯৮ হাজার ৮৬৮টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ২৪ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা বাজারমূল্যে। তবে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, লাভেলো আইসক্রিম এবং বিচ হ্যাচারি লিমিটেড। এই তিন কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ৯ কোটি ৩০ লাখ টাকার, লাভেলো আইসক্রিমের চার কোটি ৬৬ লাখ ৪২ হাজার টাকার এবং বিচ হ্যাচারি লিমিটেডের তিন কোটি ৪২ লাখ ১৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ৫৫ লাখ ৮৭ হাজার ৫৮৮টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ১৫ কোটি ৬৯ লাখ ৮৯ হাজার ২৯৪ টাকা বাজারমূল্যে। গত সোমবার লেনদেন হয়েছিল ১১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার। সিএসইতে ২১৫টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিলেও এদের মধ্যে দর বেড়েছে ৪৩টির, কমেছে ১৪৫টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির। সিইএসই-৩০ সূচক ছাড়া সবগুলো সূচকই গতকাল আবার পয়েন্ট হারিয়েছে। সিএএসপিআই সূচক থেকে ৩৪.৭০ পয়েন্ট ও সিএসসিএক্স থেকে ১৮.১২ পয়েন্ট চলে গেছে। তবে সিএসই-৩০ সূচকে ২৪.৪৭ পয়েন্ট নতুন করে যুক্ত হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement