স্ত্রীর যৌতুকের মামলায় জেল, জামিনে বেরিয়ে হত্যা : স্বামীর যাবজ্জীবন
- গোলাম কিবরিয়া, বরগুনা
- ১৮ অক্টোবর ২০২১, ২১:৫৫
বরগুনায় বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দিতে না পারায় ঘুমন্ত স্ত্রীকে হত্যার মামলায় স্বামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বরগুনার তালতলী উপজেলার বড় আমখোলা গ্রামের মোতাহার গাজীর ছেলে মোস্তফা গাজী (৪০) রায় ঘোষণার সময় পলাতক রয়েছেন।
জানা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার জাকিরতবক গ্রামের মোতাহার বিশ্বাসের মেয়ে মোর্শেদা বেগমকে (৩৫) মোস্তফা গাজী ৯ বছর আগে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছু দিন পর থেকে মোস্তফা শ্বশুরের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন।
স্ত্রী এ টাকা এনে দিতে না পারায় তাকে প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন করতেন স্বামী মোস্তফা। এরপর ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাতে গৃহবধূ মোর্শেদাকে ঘুমন্ত অবস্থায় বুকে-মুখে আঘাত করেন তিনি। পরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করেন মোর্শেদাকে। পরে গৃহবধূর বাবা মোতাহার বিশ্বাস তালতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মোর্শেদার বাবা মোতাহার বিশ্বাস বলেন, ‘আমার মেয়ে এর আগে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে যৌতুক দাবির অভিযোগে মামলা করেছিল। সেই মামলায় আপসের শর্তে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামিনে গিয়ে আবার আমার মেয়ের কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় মেয়েকে হত্যা করে সে। আদালতের উপর প্রত্যাশা ছিল সত্যের জয় হবেই। আশা করছি খুব শিগগিরই আসামিকে গ্রেফতার করে এই শাস্তি কার্যকর করা হবে।’
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটি অন্য হত্যাকাণ্ডের মতো নয়। একবার যৌতুক চেয়ে নির্যাতন করেছে। আপসে জামিনে গিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় মারধর করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় মোর্শেদাকে হত্যা করেছে। বাদি ন্যায় বিচার পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।