২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঝুপড়ি ঘরে রানী’র মানবেতর জীবন!

ঝুপড়ি ঘরে রানী’র মানবেতর জীবন! - ছবি : নয়া দিগন্ত

‘মোগো দেখার কেউ নাই, মোরে একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দেবেন। একখানা ঘরের ব্যবস্থা করি দিলে আল্লাহ তোমারে ভাল করবে। কথাগুলো এক নিশ্বাসে বল্লেন নিপা রানী। তার এই আবেগ মাখা আর্তনাদ হয়তো কারো কাছে পৌছাবে না বলে মনে করেন সে। স্বামী-সন্তানদের নিয়ে নিপা রানীর থাকার মতো একটি ভালো ঘরও নেই। তিন সন্তান নিয়ে অনেক কষ্টে সংসার চালাতে হয় তাকে। তবুও তার ভাগ্যে জোটেনি সরকারি ঘর। তিনি মনে করেন, টাকা ছাড়া ঘর পাওয়া যায় না। তাই টাকার অভাবে ঘরও পাচ্ছেন না। বর্তমানে পরিবারের স্বামী-সন্তান নিয়ে সে একটি জড়াজীর্ণ ঝুপড়িঘরে ঝুঁকি নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর গাবুয়া গ্রামের নিপা রানী হাওলাদার পরিবার নিয়ে তার বসবাস। ঘরটি পাতার বেড়া দিয়ে তৈরি, আর ভাঙ্গা টিনের ছাউনি দিয়ে বানানো ছোট একটি দো-চালা ঘরে বাস করছেন তারা। বৃষ্টি এলে ঘরের এক কোণে কোনো মতে নির্ঘুম রাত কাটে তার পরিবারের ৫ সদস্যের। স্বামী অনিল চন্দ্র হাওরাদার অন্যের জমিতে কামলা(কাজ) করে সংসার চালান। গত ১৪ বছর আগে উত্তর গাবুয়া গ্রামের অনিল চন্দ্র হাওলাদারের সাথে বিয়ে হয়। তার ঘরে আরো এক স্ত্রী ছিলো।

সতীনের সংসারে এসে অভাব যেন তার নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়। সতীন অরুনী রানী মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় সতীনের ছেলেকেও বড় করা এবং নিজের ২ মেয়েকেও লালন-পালন করতে হয়। অনিল চন্দ্র হাওলাদার মানুষের সাথে দৈনিক শ্রমিক হিসেবে কাজ করে এবং নিপা স্বামীর সাথে কাজে সহযোগীতা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিপা রানী বলেন, আমার জন্মের পরেই দরিদ্র পরিবারে হাতাশা লেগে রয়েছে। ছোট সময়ে মা-বাবা মারা যাওয়ার পরে ছোট একটি ভাইকে নিয়ে মানুষের ঘরে কাজ করে পেট চালাতে হয়েছে।

পরে উপজেলার পশ্চিম কাকড়াবুনিয়া গ্রামের দিদিমা (দাদি) কাজ না করিয়ে এনে এলাকার বিত্তবানদের কাছে ভিক্ষা করে আমাকে সতীনের সংসারে বিবাহ দেয় অল্প বয়সে। সে সংসারে ২ মেয়ে। মেয়ে হওয়ার যন্ত্রনাটা সহ্য করতে হয়েছে। আমাদের থাকার মতো একটু জমি থাকলেও, নেই ঘর, মানুষের জমিতে শ্রম দিয়ে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে কোন রকম সংসার চলে।

তার আশা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী, মুজিববর্ষে হয়তো সরকারের পক্ষ থেকে নতুন একটি ঘর পাবেন। যে ঘরে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে একটু শান্তিতে থাকতে পারবেন। কিন্তু এমন আশাও বাস্তব হওয়া যেন অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। ঝড় বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে ঝুপড়িতে মানবেতর জীবনযাপনই যেন নিপা রানীর নিয়তি! তার আক্ষেপ সরকার এত ঘর তৈরি করে মানুষকে দিচ্ছে। যদি সরকারীভাবে একটি ঘর দিত তাহলে আমরা সরকারের কাছে চির ঋণী থাকতাম।

কাকড়াবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম মাষ্টার বলেন, নিপা রানীর পরিবার আসলেই অসহায়। অন্য মানুষের সাথে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। সরকারীভাবে সে একটি ঘর পেলে তারা সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারবে।


আরো সংবাদ



premium cement
বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল