রোগীর ছেলেকে মারধর করা সেই ডাক্তারের পক্ষে টাকার বিনিময় মানববন্ধন!
- গোলাম কিবরিয়া,বরগুনা ও এএসএম জসিম, পাথরঘাটা
- ১৮ মে ২০১৯, ২১:৫২, আপডেট: ১৮ মে ২০১৯, ২২:০১
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিতর্কিত চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহকে কর্মস্থলে পূনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন করেছে কতিপয় ব্যক্তিরা। ওই মানবন্ধনে কতিপয় ব্যক্তিদের টাকার বিনিময়ে নিয়ে আসা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
টাকা দেয়ার ভিডিও সাংবাদিকদের হাতে এসে পৌঁছেছে। টাকা কম দেয়ার কারণে ওই নারীদের মধ্যে কথা কাটাকাটির সৃষ্টি হয়। শনিবার (১৮ মে) সকাল ১০টার দিকে পাথরঘাটা পৌর শহরের শেখ রাসেল স্কয়ারে ওই মানববন্ধন করা হয়।
এসময় বক্তারা বলেন, আনোয়ার স্যার খুব ভাল মানুষ, তার জন্য আমরা ভাল চিকিৎসা পাইতেছি পাথরঘাটায়। যারা আনোয়ার স্যারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে তাদেরকে আইনের মাধ্যমে শাস্তি দিতে হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার (১৩ মে) সকালে হাসপাতালের বেডে অসুস্থ্য হয়ে পরে দুলিয়া নামে এক রোগী। নার্সরা তার কোন খোঁজ না নেয়ার কারণে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুলিয়ার জা রহিমা বেগম দুলিয়ার ছেলে জিলানীকে খবর দেয়। জিলানী দ্রুত হাসপাতালের এসে তার মাকে মেঝেতে অজ্ঞান অবস্থায় পরে থাকতে দেখে তাকে বেডে তুলে নার্সদের ডেকে নিয়ে আসেন।
পরে নার্সরা চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহকে ডেকে নিয়ে আসেন। চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহ আসার পরে জিলানী তার মায়ের এ অবস্থার কথা জানতে চাইলে চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহ জিলানীকে কয়েক দফায় মারধর করেন। এসময় জিলানীর মাকেও লাঞ্চিত করার ঘটনাও ঘটে। ওই সময় কোন একজন সেই মারধরের ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল করে।
সেই ভিডিও নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিষয়টি নিয়ে আলোচিত হওয়ায় ঘটনা স্থলে বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। উপস্থিত কয়েকশো লোককে আস্বস্ত করেন আনোয়ার উল্যাহকে পাথরঘাটা থেকে পাঠিয়ে দেয়া হবে। এসময় আনোয়ার উল্যাহ ভুক্তভোগী কয়েকশো লোকজনের রোষানলে পরেন।
পরে বিভিন্ন মহল থেকে শোনা যাচ্ছে ওই আনোয়ার উল্যাহকে স্বপদে রাখার জন্য বিসমিল্লাহ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজন বিভিন্নভাবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাকে হাসপাতালে পূর্নবহালের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যায় করছে। যা চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমে অপ্রয়োজনীয় টেস্ট দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
মানববন্ধনে আসা মর্জিনা, খাদিজা ও হাফসা বলেন, আমাদেরকে ২০০ টাকা দেয়ার কথা বলে নিয়ে আসছে এখন আমাদেরকে ১০০ টাকা দেয় তারা।
ভারায় চালিত মটরসাইকেলের ড্রাইভার কালাম জানান, আমাদেরকে লোক নিয়ে আসার জন্য অল্পকিছু টাকা দেয়া হয়েছে। যে পরিমান টাকা দেয়া কথা তা তারা দেয় নাই।
এবিষয়ে বিসমিল্লাহ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মো. হারুন জানান, এবিষয়ে আমি কিছু জানিনা। ডাক্তার থাক বা না থাক তাতে আমার কোন লাভ নেই।
অভিযুক্ত চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহ মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি কেটে দিয়ে বন্ধ করে রাখেন।
পাথরঘাটা উপজেলা নাগরিক অধিকার ফোরামের সাধারন সম্পাদক মেহেদী সিকদার বলেন, চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাৎ একজন বিতর্কিত লোক। তার বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন যা ব্যাবস্থা নিয়েছেন তা উপজেলার সকল মানুষ সন্তুস্টচিত্তে মেনে নিয়েছেন। আনোয়ার উল্যাহ কোন মহলকে দিয়ে টাকার বিনিময়ে এই মানববন্ধন করেছেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।