১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


শায়েস্তাগঞ্জে একটি সেতুর অভাবে ২০ গ্রামের দুর্ভোগ

শায়েস্তাগঞ্জের চরহামুয়া গ্রামে খোয়াই নদী পারাপারের ভরসা দড়ি টানা নৌকা : নয়া দিগন্ত -

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার কলিমনগর সংলগ্ন চরহামুয়া গ্রামে খোয়াই নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে ২০ গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার অধিবাসী ৫০ বছর ধরে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অনেক জনপ্রতিনিধি এ সেতুটি নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আশপাশের লোকজন ৫০ বছর ধরে এ সেতুর অপেক্ষায় দিন গুনছেন। খোয়াই নদীর পশ্চিম পাড়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার চরহামুয়া গ্রাম, পূর্বপাড়ে সদর উপজেলার লস্করপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চরহামুয়া গ্রাম। এই দুই উপজেলার গ্রামগুলোকে যুক্ত করেছে নদীর বুকে টানানো একটি রশি। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার চরহামুয়া গ্রামের খোয়াই নদীর ওপর প্রতিশ্রুত সেতুটি ৫০ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি। দৃশ্যত এই দুই গ্রামকে দুই ভাগ করে রেখেছে খোয়াই নদীটি। কিন্তু এখানে নেই পারাপারের কোনো সেতু।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নদীর এপার-ওপার উভয় পাড়কে সংযুক্ত করে টানানো হয়েছে একটি মোটা রশি। ছোট্ট একটি নৌকার যাত্রীরা টানানো দড়ি ধরে টেনে টেনে নদীর এপার থেকে ওপারে যাচ্ছেন। ওই রাশিকে অবলম্বন করে ছোট নৌকায় দিনে-রাতে নদী পার হচ্ছে দুই পারের মানুষজন। একটি মাত্র সেতুর অভাবে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীকে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ।
জানা যায়, কেনাকাটা, চিকিৎসা ও দাফতরিক কাজসহ নানান প্রয়োজনে চরহামুয়াসহ আলাপুর এলাকাবাসীকে যেতে হয় শায়েস্তাগঞ্জ ও হবিগঞ্জ সদরে। তা ছাড়া উপজেলার শতবর্ষী শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়, বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, ব্যাংক ও হাসপাতালে যেতে হলে এলাকাবাসীকে খোয়াই নদী পার হতে হয়। নদীর বুকে রশি দিয়ে ছোট নৌকা টেনে টেনে প্রতিদিন শত শত মানুষ পারাপার হচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। বর্ষা মৌসুমে যখন বানের পানিতে নদীটি ভরে টইটুম্বুর হয়ে যায় তখন নদী পারাপারে জীবনের ঝুঁকি আরো বেড়ে যায়। শুষ্ক মৌসুমে নদীতে যে পানি থাকে তাতে ঠিক মতো নৌকা চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। এলাকাবাসীর দাবি, খোয়াই নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হলে পাল্টে যাবে নদীর উভয় পাড়ে বসবাসরত ৪০ হাজার মানুষের জীবনযাত্রা।
দক্ষিণ চরহামুয়া গ্রামের মাদরাসা শিক্ষক নজরুল আলম বলেন, এ সেতুটি নির্মাণ করা হলে চরহামুয়া, বনগাঁও, সুঘর, নোয়াবাদ ও লস্করপুরের হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত সুগম ও নিরাপদ হবে। বিশেষ করে ওই এলাকার কৃষিজীবীরা তাদের কৃষিপণ্য স্থানান্তর করতে পারবেন। এতে তারা উৎপাদিত পণ্যের সঠিক মূল্য পাবেন। দক্ষিণ চরহামুয়া নিবাসী বস্ত্র ব্যবসায়ী মুনাজেরা আহমেদ সুজন বলেন, আমরা শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকায় স্থায়ীভাবে ব্যবসা বাণিজ্য করি। খোয়াই নদী পার হয়ে প্রতিদিন আমাদের আসা-যাওয়া করতে হয়। এমনকি জেলা শহর হবিগঞ্জ যাতায়াতেও আমাদের এ নদী পার হয়ে যেতে হয়। আমাদের এলাকায় সারা বছর কৃষিপণ্য উৎপাদন করা হয়। নদী পারাপারে কলিমনগর চরহামুয়া সেতুটি নির্মাণ করা হলে ওই এলাকার কৃষিপণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো সহজ হবে। এতে কৃষিজীবী মানুষ যারপরনাই উপকৃত হবে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল