০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


চৌগাছায় ২২ বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ : আতঙ্কে পাঠদান

যশোরের চৌগাছার হোগলডাঙ্গা সুরত আলী মৃধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন : নয়া দিগন্ত -

যশোরের চৌগাছা উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনগুলোতে ছাদের পলেস্তারা নেই। বিম আর পিলারের ভেতরে মরিচা ধরা রড বেরিয়ে আছে। আবার রয়েছে বড় বড় ফাটল। সামান্য বৃষ্টিতেই ছাদ থেকে পানি পড়ে সব কিছু ভিজে যাচ্ছে। এ রকম ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান। উপজেলায় ২২টি বিদ্যালয়ের অবস্থা এমনই। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চরম আতঙ্কে আছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। জরাজীর্ণ ভবন ধসে প্রাণহানির আশঙ্কায় বিদ্যালয়ে আসার আগ্রহ হারাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানালেও কোনো সুফল মিলছে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌর শহরে ১৩৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে জরাজীর্ণের তালিকায় রয়েছে হোগলডাঙ্গা, কিসমতখানপুর, বুন্দলীতলা, তাহেরপুর, চন্দ্রপাড়া, হাকিমপুর, স্বরূপদহ, গয়ড়া, টেঙ্গুরপুর, খড়িঞ্চা, মাশিলা, জগদিশপুর, মির্জাপুর মধ্যপাড়া, আড়পাড়া, পাতিবিলা, রামকৃষ্ণপুর, বল্লভপুর, মৎস্যরাঙ্গা, বড়গোবিন্দপুর, ফুরসারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পৌর শহরের চৌগাছা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাঁচনামনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ মোট ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই চলছে এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান। এর মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কারকাজের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ১৬টির তালিকা পাঠানো হয়েছে।
পৌর শহরের পাঁচনামনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরজিনা আক্তার জানান, জরাজীর্ণ হওয়ায় ২০১৩ সালে তার বিদ্যালয় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। নতুন ভবন নির্মাণে জন্য ২০১৮ সালের ৮ মার্চ পুরনো ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়। দুই বছর পার হলেও নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি। ফলে বেশ কিছু দিন খোলা আকাশের নিচেও শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়েছে। শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটের কারণে গাছের নিচে ও পুরনো টিন দিয়ে শেড তৈরি করে শিক্ষাকার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।
হোগলডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাফর আলী জানান, শ্রেণিকক্ষের ছাদ ধসে পড়ে প্রায় ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী ও তিনজন শিক্ষক আহত হয়েছেন। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে বই-খাতা, বেঞ্চ, চেয়ার ও টেবিল ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ভবনটিকে ঊর্ধ্বন কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। পাঠদান করার বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান করতে হচ্ছে। ফলে অভিভাবকেরা তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে অনীহা প্রকাশ করে থাকেন। অনতিবিলম্বে ভবন সমস্যার সমাধান না হলে প্রতিষ্ঠানটি দারুণভাবে শিক্ষার্থী সঙ্কটে পড়বে বলে তিনি মনে করেন।
চৌগাছা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দীন জানান, জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষকেরা পাঠদান করছেন।
শিক্ষক ও শিশু শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপকালে অনেকেই জানায়, স্কুলে সারাক্ষণই ভয় নিয়ে ক্লাস করতে হয়। এ জন্য পাঠদানও ভালো হচ্ছে না। তা ছাড়া বিকল্প ব্যবস্থাও নেই। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্তকর্তাদের অবহিত করেও কোনো ফল হচ্ছে না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্তকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, উপজেলার জরাজীর্ণ বিদ্যালয়ের তালিকা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কারকাজও চলছে। তবে হোগলডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বলে তিনি জানান।
যশোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম জানান, জেলায় জরাজীর্ণ বিদ্যালয়ের তালিকা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কারকাজও চলছে। এই বছর না হোক আগামী অর্থবছরের প্রকল্পের মাধ্যমে সবগুলো জরাজীর্ণ বিদ্যালয়ের কাজ সম্পন্ন করা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেনÑ পিইডিপি-৪ কর্মসূচির আওতায় জেলায় কোনো জরাজীর্ণ বিদ্যালয় ভবন থাকবে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement
বাঁশখালী মালেকা বানু চৌধুরী জামে মসজিদ ইসলামের অনুপম নিদর্শন বিপদসীমার উপরে সুরমা বাড়ছে কুশিয়ারার পানি গৌরনদীতে আ’লীগের দু’পক্ষে সংঘর্ষ, ইউপি চেয়ারম্যানসহ রক্তাক্ত ৫ জন টেকনাফে চেয়ারম্যান প্রার্থীকে লক্ষ্য করে সাবেক এমপি বদির গুলিবর্ষণ! গাজীপুরে কিশোরী শ্রমিককে গণধর্ষণ : ম্যানেজারের হাতে অন্ত:সত্ত্বা আরেক কিশোরী অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে ৭ জন আটক মালয়েশিয়ায় মে দিবস ও ঈদ পুনর্মিলনী উপলক্ষে সাংস্কৃতিক উৎসব চট্টগ্রাম থেকে ১৪ মে হজ ফ্লাইট শুরু এবার ভিসির কাছে সেকান্দারের বিচার চাইলেন আ’লীগ সমর্থক শিক্ষকরা ভোরের বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে স্নিগ্ধ কোমল সকাল দেশকে ভারতের গোলামির জিঞ্জিরে আবদ্ধ করেছে সরকার : মুফতি ফয়জুল করীম

সকল