১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


কাজিপুরে অসময়ে ভাঙছে যমুনা

কাজিপুর উপজেলার যমুনা নদীতে আকস্মিকভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে। ছবিটি গত মঙ্গলবার তোলা : নয়া দিগন্ত -

পৌষ ও মাঘ মাসে শান্ত-স্নিগ্ধ যমুনা নদী হঠাৎ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত দুই সপ্তাহে ভাঙনে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে তেকানী নৌঘাট। কিন্তু ভাঙন রোধে কর্র্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ভাঙনের মুখে পড়েছে ডিগ্রি তেকানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ইতোমধ্যে তেকানী ইউনিয়নের যমুনার তীরবর্তী গ্রামে ব্যাপক আকারে ভাঙন শুরু হয়েছে।
গত মঙ্গলবার ওই ইউনিয়নে যমুনা নদীর তীরে সরেজমিন দেখা গেছে, নিজের জমিতে লকলকিয়ে বেড়ে ওঠা বাড়ন্ত ভুট্টা ও গম ক্ষেতের অপ্রাপ্ত গাছগুলো কাটছেন নতুন তেকানী গ্রামের কৃষক ফজলুল হক ও আয়নাল হক। ভুট্টা ও গমগাছ নয়, যেন নিজের ভাগ্যকেই কাঁচি দিয়ে কাটাছিলেন মধ্যবয়সী এই কৃষক। পৌষ ও মাঘের শীতে ঘামে নয়, তার চোখ দুটো ছলছল করছিল। এই চিত্র এখন এই অঞ্চলের চারটি গ্রামের তিন-চার বছর আগে তেকানী গ্রামের কৃষক ফজলুল হক ও আয়নাল হক এসে আশ্রয় নিয়েছেন চরে। এ নিয়ে পাঁচবার নদী ভাঙনের কবলে পড়েছেন তারা। এক সময় পৈতৃক বসতবাড়ী আর কিছু জমি থাকলেও এখন তিনি উদ্বাস্তু। তাদের ভাগ্যকে যেন গ্রাস করেছে যমুনা।
তেকানী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন-অর-রশিদ জানান, শুষ্ক মওসুমে যমুনা নদীর এমন তাণ্ডব এলাকাবাসী আগে কখনো দেখেনি। দুর্গত মানুষের আহাজারি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা এবং সরকারি দফতরে পৌঁছাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ ধরেই নিয়েছে, বর্ষা মওসুম ছাড়া অন্য সময় নদী ভাঙে না। তিনি আরো বলেন, এই অঞ্চলের পশ্চিম দিকে যমুনার মাঝখানে বিশাল চর জেগে ওঠায় ভাঙনের তীব্রতা এত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। উত্তর বুরুঙ্গী ও চরপানাগাড়ী হবিবার রহমান, কাশেম মণ্ডল ও জহির আলী জানান, ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নেয়ায় আমরা কৃষকরা দিন দিন আরো নিঃস্ব হবো।
তারা আক্ষেপ করে জানান, এই চরে আশ্রিত এমন অনেক পরিবার রয়েছে, যারা এক সময় বিঘা বিঘা জমির মালিক ছিল। অথচ এখন তারা অন্যের জমিতে মজুরি খেটে সংসার চালাচ্ছে। টাকার অভাবে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারছে না। নদীভাঙন রোধে ব্রহ্মহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কারকাজে শত কোটি টাকা খরচ করা হলেও যমুনা নদীর পূর্বদিকের আগ্রাসন বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। প্রতিবছর পূর্বপাড়ের ফসলি জমি আর জনপদ গ্রাস করবে যমুনা। ভাঙন রোধের নামে এক শ্রেণীর ঠিকাদার আর কিছু অসাধু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারী বিস্তর টাকার মালিক হবে। তবে আমার মতো ভাঙনকবলিত নিঃস্ব মানুষগুলোর হাহাকার থেকেই যাবে।
তেকানী ইউপি চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ জানান, যমুনা নদী শুকিয়ে ছোট-বড় চরের সৃষ্টি হয়েছে। নদীটি এখন ছোট খালে পরিণত হয়েছে। ভাঙা-গড়ার খেলায় মেতে নদী আজ যেন ক্লান্ত। জেগে ওঠা চরে এখন চাষ হচ্ছে বিভিন্ন ফসলের। ড্রেজিং করে স্রোতধারা চালু করলে নদীটি রক্ষার সাথে সাথে দুই পাড়ের বাসিন্দাদের ভাঙন থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, যমুনা নদীর ভাঙন রক্ষায় অর্থ বরাদ্দ হলে কাজ শুরু করা হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ২টি গ্রামে আরাকান আর্মির হামলা ‘কিরগিজস্তানকে আমাদের গভীর উদ্বেগ জানিয়েছি, কোনো বাংলাদেশী শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়নি’ আওয়ামী লীগ পরগাছায় পরিণত হয়েছে : জিএম কাদের ইসরাইলের জন্য অস্ত্র বহনকারী ভারতীয় জাহাজ আটকে দিলো স্পেন বন্ধুর বাড়ি থেকে যুবকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার রাণীনগরে ১৪ কেজি ওজনের লক্ষ্মী-নারায়ণ মূর্তি উদ্ধার কিরগিজস্তানে থাকা আতঙ্কিত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা দেশে ফিরতে চায় আধুনিক প্রযুক্তির জ্ঞান অর্জন করে দেশ গঠনে ভূমিকা পালন করতে হবে : মোবারক হোসাইন ওএমএস বিতরণে গাফলতি হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে : খাদ্যমন্ত্রী শিবপুরে পুকুর থেকে মহিলার লাশ উদ্ধার বন্দীদের মুক্ত করতে আলোচনায় বসুন : নেতানিয়াহুকে বন্দীদের পরিবার

সকল