০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


পিরিয়ড, ‘অপবিত্র’..... অতঃপর মৃত্যু

পিরিয়ডকালে এই ঘরে থাকতে বাধ্য করা হয় নারীদের - ছবি : সংগ্রহ

‘পিরিয়ডকালীন ঘরে’ দমবন্ধ হয়ে নেপালে মৃত্যু হয়েছে ২১ বছরের এক নারীর। প্রচণ্ড শীতে জানালাবিহনী ঘরটিকে উষ্ণ রাখতে তিনি সেখানে আগুন জ্বেলেছিলেন, আর তাতেই ধোয়ায় দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাবর্তী বোগাতিকে ওই ঘরে মৃত অবস্থায় আবিষ্কার করেন তার শাশুড়ি।

শাশুড়ি লক্ষী বোগাতি কাঠমান্ডু পোস্টকে বলেছেন, হয়তো পরের দিন তার পিরিয়ড হয়তো শেষ হয়ে যেত, আর এটা ভেবে সে কিছুটা উত্তেজিত ছিলো।

ঘটনাটি নেপালের দোতি জেলার। নেপালের আরেকটি জেলায় সপ্তাহ দুয়েক আগেও এই ‘পিরিয়ডকালীন ঘরে’ দমবন্ধ হয়ে মারা গেছে এক নারী ও তার দুই শিশু সন্তান। ঘটনাটি তখন বেশ আলোড়ন তুলেছিল।

নেপালের কিছু অঞ্চলে চালু আছে একটি উদ্ভট এক সংস্কৃতি- যেখান পিরিয়ড শুরু হলে নারীদের ঘরের বাইরে পৃথক ছোট ঘরে থাকতে বাধ্য করা হয়। জানালাবিহীন ছোট্ট এক দরজার ওই ঘরে কাটাতে হয় পিরিয়ডের কয়েকটি দিন। পিরিয়ডকালীন নারীদের অপবিত্র মনে করে তাদের এভাবে রাখা হয়। সদ্য সন্তান প্রসব করা নারীদেরও একই বিবেচনায় রাখা হয় এ ধরনের ঘরে। এ সময় নারীরা কিছু খাবার, কোন ধর্মীয় বস্তু ও পুরুষদে স্পর্শ করতে পারেন না।

স্থানীয় পুলিশ অফিসার লাল বাহাদুর ধামী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছন, আমরা ধারণা করছি জানালাবিহীন ঘরটিরে দরজা বন্ধ করে আলো জ্বালানোর কারণে ধোয়ায় দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার। শীত থেকে বাঁচতে তিনি আগুণ জ্বালিয়েছিলেন।

প্রচণ্ড শীতের দিনে মাটির ঘরগুলো রাত কাটানো খুবই কষ্টকর। ঠাণ্ডা ছাড়াও আরো বিভিন্ন সমস্যা ঘটতে পারে। কিছুদিন আগে এক তরুণ ওই ঘরে সাপের কামড়ে মারা গেছে।

২০০৫ সালে নেপালে আইন করে এই কুসংস্কার বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, ২০১৭ সালে আরেক আইনে এম ঘটনার জন্য শান্তির বিধানও রাখা হয়েছে। তথাপি অনেক গ্রামাঞ্চলে এটি চালু আছে।

জানুয়ারিতে পশ্চিমাঞ্চলীয় বাজুরা গ্রামে দুই শিশু সন্তানসহ এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয়রা ‘ছাউপাদি’ নামের ওই ঘরগুলো ভেঙে দিয়েছিলেন। চারদিকে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা চললেও তা পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে না।


আরো সংবাদ



premium cement