২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনার সময়ে ব্যক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি

-

করোনা মহামারীর এই বর্তমান অবস্থায় সবাই আজ ঘরবন্দী। সবার হাতে অফুরন্ত সময়। বিশেষ করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ দিন ধরে ছুটিতে। কখন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান শুরু হবে আগের মতো তা বলা মুশকিল। এ সময়টা হেলায় না হারিয়ে, প্রয়োজন ব্যক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে নজর দেয়া। পরিস্থিতি বুঝে মেধাকে কাজে লাগানো। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস চলমান। ছুটি থাকলেও পড়াশোনায় তাদের ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়েও বিচ্ছিন্নভাবে ক্লাস হচ্ছে। তা ছাড়া এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত। লকডাউন শেষ হলে, অথবা করোনা আয়ত্তে এলে সরকার খুব কম সময়ের মধ্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে। পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পরই আবার খুব কম সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি শুরু হবে। গত বছরগুলোর মতো এবার আর কোচিং ক্লাসে ভর্তি থেকে শুরু করে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার জন্য, সময় নিয়ে প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে। সুতরাং এই সময়টা এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের হাতেও অনেক সময় নেই ব্যক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য।
বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য এ সময়টা খুবই উত্তম সময় বলা চলে। বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস হচ্ছে না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়া হলেও পড়াশোনার চাপ তেমন একটা নেই। এ সময়টা বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা বৃদ্ধিতে নিজেকে কাজে লাগানো যেতেই পারে। অনলাইনে সেলফ- ডেভেলপমেন্টের জন্য বিভিন্ন রকম কোর্স চালু আছে। সেগুলো করা যেতে পারে। আমাদের মধ্যে অনেকেই ছবি আঁকতে পছন্দ করে। এ সময়টায় খোলা আকাশের নিচে সবুজের সমারোহে বসে ছবি আঁকা যেতে পারে। যারা লেখালেখি করতে পছন্দ করে, তাদের জন্য এ সময়টা অনেকটা সুখকর হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের অনলাইন লেখা প্রতিযোগিতা, দৈনিক পত্রিকাগুলোতে লেখা পাঠানো, যাদের ইচ্ছা আগামী বইমেলায় বই প্রকাশ করাসহ বিভিন্ন রকম ব্যক্তিগত উন্নয়নে অংশগ্রহণ করার জন্য এ সময়টা কাজে লাগানো দরকার। এই দীর্ঘ ছুটিতে বিসিএস, ব্যাংক জবসহ বিভিন্ন ধরনের সরকারি-বেসরকারি চাকরির প্রস্তুতি নেয়া যেতে পারে। যাদের স্কলারশিপ নিয়ে বাইরে গিয়ে নামী-দামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা আছে, এ সময়ে তারা ঘরে বসে ইংরেজি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।
যারা কৃষি নিয়ে পড়াশোনা করছেন, তারা এ সময়টায় তাদের থিওরিটিক্যাল ও ব্যবহারিক বিষয়গুলো হাতে-কলমে আরেকবার ঝালাই করে নিতে পারেন। কেউ কেউ এই সময়ে অনলাইনে ঘরে বসে ব্যবসা করছেন। এখন আম, কাঁঠালের মৌসুম। তাই এগুলো যুক্ত হতে পারে ই-বিজনেস কাঠামোয়। তা ছাড়া মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এগুলো এর আওতায় আনা যেতে পারে। সর্বোপরি আমরা কেউই জানি না এই মহামারীর শেষ কবে। চীন, জার্মানি, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের খ্যাতনামা বিজ্ঞানীরা দিন-রাত চেষ্টা করছে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য। সে জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
সময় থেমে নেই। সে তার নিজ নিয়মে চলমান। আমাদের থেমে থাকলে চলবে না। করোনার শত শত নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যেও আমাদের কিছু ইতিবাচক দিক খুঁজে বের করে এ পরিস্থিতিতে জ্ঞানের পরিসর বাড়াতে চেষ্টা করতে হবে। হতাশা নিয়ে বসে না থেকে বিশ্বায়নের যুগে সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। প্রতিযোগিতার দৌড়ে টিকে থাকতে হলে একটু সময়ও অবহেলায় কাটিয়ে দেয়া সমীচীন নয়। আমাদের মতো শিক্ষার্থী, যাদের হাতে এখন অফুরন্ত সময়, তারা নিজেদের ব্যক্তিগত সামর্থ্য অর্জন, দক্ষতা বৃদ্ধিতে এ সময়টা কাজে লাগাতে পারি; যাতে করোনা পরবর্তী সময়ে আমরা পিছিয়ে না পরে দেশ তথা নিজেদেরকে আর্থসামাজিক কাজে যুক্ত করতে পারি। সব মিলিয়ে সময়টাকে অলসভাবে পার না করে দক্ষতা উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারলে, এই মহামারীর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের পাশাপাশি আমরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারব।
লেখক : শিক্ষার্থী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতে দ্বিতীয় পর্বে ৮৮ আসনে ভোট খালেদা জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা আটক জীবন্ত মানুষকে গণকবর আগ্রাসন ও যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃষ্টির জন্য সারা দেশে ইসতিস্কার নামাজ আদায় আরো ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট তাপপ্রবাহ মে পর্যন্ত গড়াবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকার ভূমিকা চায় যুক্তরাষ্ট্র বিদ্যুৎ গ্যাসের ছাড়পত্র ছাড়া নতুন শিল্পে ঋণ বিতরণ করা যাবে না

সকল