আমাদের দেশের তরুণদের তারুণ্য হুমকির মুখে। একজন তরুণের তারুণ্য ধ্বংসে যা কিছু প্রয়োজন, তা সব আজ হাতের নাগালে। বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্যÑ মদ, গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা আজ তরুণদের হাতে হাতে। আগেকার দিনে পাঠ্যবই অধ্যয়ন শেষে তরুণদের সময় ব্যয় হতো বিভিন্ন গল্পের বই পড়ে, খেলাধুলার মাধ্যমে। কিন্তু আজকের তরুণদের সেই সময়টা ব্যয় হয় মোবাইল, কম্পিউটার ও ল্যাপটপে। ছোট্ট একটি যন্ত্রের নাম মোবাইল। এটি আকারে ছোট হলেও ভেতরে বিশাল। দিনের পর দিন, মাসের পর বছর চলে গেলেও মোবাইলের ভেতরের পুরো অংশ ঘুরে আসা যাবে না। আমি বলছি না স্মার্ট ফোন খারাপ। কারণ, একটি স্মার্ট ফোনে খারাপের চেয়ে ভালো বেশি রয়েছে। তাই ভালোকে ডিঙ্গিয়ে খারাপকে টানা যাবে না। ভালোর দিকটা বেশি হলেও তরুণেরা তারুণ্যের উত্তেজনায় বশবর্তী হয়ে গ্রহণ করছে খারাপ দিকটা। কিছু কিছু তরুণ রয়েছে যারা ভালো, খারাপ কোনোটা গ্রহণ না করে ব্যস্ত থাকে গেম নিয়ে। এমনকি খাওয়া-দাওয়ার চিন্তাও মাথায় থাকে না।
ছেলে সমীহ করে না বাবাকে। বাবা কিছু বললে ছেলে উল্টো বলেÑ ‘আমার চেয়ে বেশি বুঝবে না’। আগে শিক্ষক দেখলে নমনীয় ভাব দেখাত ছাত্ররা। আর এখন শিক্ষকের গা ঘেঁষে চলে যায় ছাত্র। এমনকি সামান্য বিষয়ে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার নজিরও স্থাপন করেছে আজকের তরুণরা।
রাজনৈতিক নেতাদের দেয়া অদৃশ্য শক্তি আজকের তরুণদের ঠেলে দিচ্ছে ধ্বংসের মুখে। নেতার অদৃশ্য শক্তিতে শক্তিমান হয়ে আজকের তরুণেরা খুব সহজেই নিজেকে জড়াচ্ছে ধর্ষণের মতো অপরাধে। কয়েক মাস আগে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র ইসপার আদনানকে নিজদলীয় বিরোধী গ্রুপ ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে অতি সামান্য বিষয়ে। যারা হত্যা করেছে তারা সবাই তরুণ, যুবক। তারা কার ইশারায়, কার বলে এমন মারাত্মক একটি ঘটনা ঘটিয়েছে তা গ্রেফতার-পরবর্তী আদালতে স্বীকার করেছে। এসব ঘটনার জন্য হত্যাকারী এবং হত্যার নির্দেশ, উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে আদালতের পাশাপাশি সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত নিতে হবে দলকে।
তরুণদের এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে দেশের, সমাজের কর্তাদের এখনই ভাবতে হবে। পরিবারের কর্তাদের ছেলের খোঁজ রাখতে হবে। ছেলে স্কুল, কলেজে যাওয়ার নামে বাড়ি থেকে বের হয়ে ঠিক মতো স্কুলে যাচ্ছে কি না, কার সাথে চলাফেরা করছে, কার সাথে বন্ধুত্ব করছে? নয়তো আগামীতে খারাপ ফলে আসবে আজকের তরুণ প্রজন্ম। তরুণ প্রজন্মকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের দূরে রাখতে হলে আত্মনিয়োগ করতে হবে গবেষণামূলক, সৃজনশীল কাজে। গবেষণামূলক কাজ বলতেÑ লেখালেখি, বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা, শিক্ষামূলক বই পড়া ইত্যাদি। হ
লেখক : ছাত্র, সরকারি হাজী মুহম্মদ মুহসীন কলেজ, চট্টগ্রাম