২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অর্ধেক তোলার পর লঞ্চটি একবার উঠছে, একবার নামছে

কয়লা ঘাট এলাকায় স্বজনদের আহাজারি - সৌজন্যে : শফিউদ্দিন বিটু

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে ২৯ জন।

ভোররাত পর্যন্ত চেষ্টা করেও লঞ্চটিকে অর্ধেকের বেশি তোলা যায়নি। কর্মকর্তারা বলছেন, 'টেকনিক্যাল' সমস্যার কারণে লঞ্চটিকে কিছু দূর ওঠানোর পর আবার ডুবে যাচ্ছে। সকাল থেকে লঞ্চটি আবার টেনে তোলার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, লঞ্চটির ভেতরে আরো লাশ আটকে থাকতে পারে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম বেপারী বলছেন, লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পর একটি মরদেহ হাসপাতাল থেকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর বাকি চারটি লাশ উদ্ধারের পর সেগুলো ঘটনাস্থল থেকেই স্বজনদের কাছে দিয়ে দেয়া হয়।

তবে সোমবার সকাল পর্যন্ত কোনো লাশ উদ্ধার করা হয়নি।

এর আগে রোববার বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদীতে কয়লাঘাট এলাকায় একটি নির্মাণাধীন সেতুর কাছে লঞ্চটি ডুবে যায়।

লঞ্চটি নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জের দিকে রওনা দেয়ার পর সৈয়দপুর কয়লাঘাট চায়না ব্রিজের কাছে পৌঁছালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। লঞ্চটি একটি ট্যাংকারের সাথে ধাক্কা লাগার পর সাথে সাথেই ডুবে যায়।

বেপারী জানান, এমভি ছাবিত আল হাসান নামে ওই লঞ্চটি আকারে বেশ ছোট। লঞ্চটিতে ৫০ জনের মতো যাত্রী ছিল বলে ধারণা করছেন তারা।

লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার সময় অনেকেই সাঁতরে আত্মরক্ষা করেছেন বলে জানান তিনি। তবে তাদের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।

'যখন ডোবে ডোবে ভাব তখন কয়েকজন সাঁতরে বা আশপাশের ছোট নৌকায় করে উদ্ধার হয়েছেন,' তিনি বলেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জানান, উদ্ধার করা মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের সময় ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২৫ হাজার করে টাকা দেয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

তিনি বলেন, রাত চারটা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চলে। এরপর উদ্ধার কাজ কিছুক্ষণ বন্ধ রাখা হয়। সকাল থেকে নতুন করে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন বলেন, ঘটনাস্থলে তাদের দুটি ইউনিট কাজ করছে। উদ্ধার কাজ আবারো শুরু হয়েছে।

বেপারী বলেন, 'লঞ্চটি অর্ধেক উঠানো হয়েছিল। কিন্তু টেকনিক্যাল কারণে একবার উঠতেছে আবার নামতেছে এরকম। তবে উদ্ধার কাজ আবার শুরু হয়েছে।'

তবে ঘটনাস্থলে অনেক মানুষ ভিড় করায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা।

পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, ঘটনাস্থলে বেড়েছে নিখোঁজদের স্বজনদের উপস্থিতিও। তাদের অভিযোগ, লঞ্চটি উদ্ধারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।

রোববার সন্ধ্যে সাড়ে ছ'টার দিকে ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকায় কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়, এবং এ সময় নদীতে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল কর্তৃপক্ষ।

সূত্র : বিবিসি

 


আরো সংবাদ



premium cement