২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যে দেশে লাঠিই নারীদের রক্ষাকবচ

ওরোমো জাতিগোষ্ঠী
ওরোমো জাতিগোষ্ঠীর নারীর রক্ষাকবচ এই লাঠি - বিবিসি

ওরোমো জাতিগোষ্ঠীর নারীরা নিজের রক্ষাকবচ এই লাঠি হাতে নিয়ে চক্রাকারে ঘুরছে আর নিজেদের ভাষায় গান গাইছে। মুখ দিয়ে বিচিত্র এক শব্দ করছে। মাঝখানে একজন মহিলা বসে আছেন।

এই পরিস্থিতির পিছনে রয়েছে বহু পুরনো ইতিহাস। ওরোমো নারীদের যখন বিয়ে হয় তখন তারা এই কাঠের লাঠিটা পেয়ে থাকে মা-বাবার কাছ থেকে। সিনকিউ নামের এই লাঠিকে ওই নারী এবং তার পরিবারের রক্ষার প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।

ওরোমো সংস্কৃতির বিশেষজ্ঞ, সারা ডুবে বলছিলেন, "এখানকার ঐতিহ্যবাহী যে আইন আছে তাতে বলা হয়েছে, একজন বিবাহিত নারীকে অপমান, বা কোন ধরণের নির্যাতন করা যাবে না। এটা একটা অপরাধ।"

বিষয়টা আসলে কেমন হয় সেটা বোঝাতে পূর্বপরিকল্পিত একটা পরিস্থিতির অবতারণা করা হয়েছে।

এখানে দেখানো হচ্ছে, একজন পুরুষ লাঠি হাতে একটি ঘরের মধ্যে ঢুকছে, উদ্দেশ্য তার স্ত্রীকে মারবেন তিনি। ঠিক সেই মুহূর্তে মহিলাটি তার শিশুকে কোলে নিয়ে হাতে সেই সিনকিউ নিয়ে বের হয়ে আসছেন। আর মুখে উচ্চারণ করছেন এই শব্দ।

এই শব্দ করার উদ্দেশ্য যাতে করে আশেপাশের অন্যান্য নারীরাও জানতে পারে যে তার উপর নির্যাতন হয়েছে।

সাথে সাথে পাড়া-প্রতিবেশীদের মধ্যে যারা নারী রয়েছেন তারা তাদের সিনকিউ নিয়ে দৌড়ে চলে আসলেন। মহিলাটা মাঝখানে বসে পরলেন। আর তাকে ঘিরে এই নারীরা ঘুরতে থাকলো- যেন তাকে রক্ষা করা হচ্ছে সব বিপদ থেকে।

ইথিওপিয়ার ওরোমো নারীদের জন্য প্রাচীন যে গাডা ব্যবস্থা আছে তার একটি অংশ এই সিনকিউ।

ওরোমো সংস্কৃতির বিশেষজ্ঞ, সারা ডুবে বলছিলেন "যখন এই গাডা সিস্টেম চালু করা হয় তখন পুরুষদেরকে বিভিন্ন অস্ত্র দেয়া হত যাতে করে তারা পশু শিকার করতে পারে এবং শত্রুর বিরুদ্ধে লড়তে পারে।"

তিনি আরো বলছিলেন, "মেয়েদের হাতে দেয়া হয় সিনকিউ, যাতে তারা তাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য লড়াই করতে পারে।"

এদিকে নারীদের এই শব্দ শুনে গ্রামের মুরুব্বিরা চলে আসেন একটা বিচার বসানোর জন্য।

চলতে থাকে শুনানি। নারীরা বলেন, "তাকে মারা মোটেই উচিত হয়নি। তার স্বামীর বিচার না করা পর্যন্ত আমরা শান্ত হব না।"

শুনানির পর গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠরা তাদের রায় শোনালেন। রায় অনুযায়ী, মহিলার স্বামী সবার সামনে ওই নারীর কাছে মাফ চাইলেন। একই সাথে সবার সামনেই প্রতিজ্ঞা করলেন আর কখনো তাকে মারবেন না। রায়ে আরো বলা হল যদি সে এর ব্যতিক্রম করে তার জন্য ভবিষ্যতে তাকে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।

বয়োজ্যেষ্ঠরা বলছেন, "নারীরা কখনো এসব ক্ষেত্রে মিথ্যা বলেন না।"

এই সম্প্রদায়ের একজন বয়োজ্যেষ্ঠ, জি আললাক গুই বলছেন, "ঈশ্বর সব সময় তাদের পাশে থাকে যারা মিথ্যা বলেন না।" তারা এই ঐতিহ্যকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম নিয়ে যেতে চান।

বিয়ের সময় মেয়ের বাবা এই সিনকিউ তৈরি করেন। আর মেয়ের মা সেটা মেয়ের হাতে তুলে দেন।

গারবি তাফিসি নামে এক নারী বলছেন, "এটা আমি আমার মায়ের কাছ থেকে পেয়েছি, এবং আমি নিশ্চিত করবো যাতে করে এটা আমি আমার মেয়ের কাছে আমি পৌঁছে দিতে পারি।"


আরো সংবাদ



premium cement
বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল