১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলকদ ১৪৪৫
`


১৯ ভোটে উৎরে গেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে - সংগৃহীত

ব্রেক্সিট ইস্যুতে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর অনাস্থা ভোটে উৎরে গেছেন প্রধানমন্ত্রীর টেরিজা মে। মাত্র ১৯ ভোটের ব্যবধানে টিকে গেছে তার সরকার।

বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দীর্ঘ আলোচনার পর এই ভোটাভুটিতে টেরিজা মের সরকারের প্রতি সমর্থন জানান ৩২৫ জন এমপি, অপরদিকে অনাস্থা জানান ৩০৬ জন।

এর আগে মঙ্গলবার ব্রেক্সিট ইস্যুতে দীর্ঘ আলোচনার পর এক ভোটাভুটিতে ২৩০ ভোটের রেকর্ড ব্যবধানে পরাজিত হয় মিসেস মে'র ব্রেক্সিট চুক্তিটি।

প্রস্তাবটি বাতিলের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন ৪৩২ জন সংসদ সদস্য, যেখানে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন ২০২ জন।

পার্লামেন্টে বিরোধী দলের সদস্যদের পাশাপাশি নিজ দলের ১১৮জন এমপি বিরোধী দলের সঙ্গে মিসেস মে'র চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেন। তার পরপরই টেরিজা মে'র সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন বিরোধী লেবার পার্টির প্রধান জেরেমি করবিন।

টেরিসা মে'র প্রশাসনকে "জম্বি" উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে মিসেস মে সরকার পরিচালনার সব ধরণের অধিকার হারিয়েছেন।

তবে অনাস্থা ভোটে টিকে যাওয়ার পর টেরিজা মে বলেন, ব্রেক্সিটের ব্যাপারে একটি সমঝোতায় আসতে তিনি পার্লামেন্টের সব দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন।

এছাড়া ব্রেক্সিট পরিকল্পনার পক্ষে নিজ এমপিদের সমর্থন আদায় করাটাও তার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।

আস্থা ভোটে টিকে থাকার প্রতিক্রিয়ায় মিসেস মে এমপিদের বলেন, "গণভোটের ফলাফল অনুযায়ী ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার যে প্রতিশ্রুতি তিনি দেশের জনগণকে দিয়েছেন সেটা তিনি পূরণ করতে কাজ চালিয়ে যাবেন"।

ব্রেক্সিটের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি আজ বুধবার রাত থেকেই সব পার্টির নেতাদেরকে সাথে আলাদা আলাদা বৈঠক করারও আমন্ত্রণ জানান।

এসময় তিনি সবার কাছে "গঠনমূলক মনোভাব" নিয়ে তাদের সাথে আলোচনায় অংশ নেয়ার আহ্বান জানান। মে বলেন, "আমাদের এমন একটি সমাধানে আসতে হবে যেটা আলোচনা সাপেক্ষ এবং পার্লামেন্টের জন্যও সহায়ক হবে"।

তবে করবিন বলেন যে যেকোনো ইতিবাচক আলোচনার আগেই প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিট চুক্তি বাতিল করতে হবে।

তিনি বলেন, "চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের কারণে বড় ধরণের বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা রয়েছে। সেজন্য এই সরকারকে এখুনি পুরোপুরি সরিয়ে দিতে হবে।"

করবিনের এই অনাস্থা প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেট পার্টিসহ সব বিরোধী দলগুলো। কিন্তু কারবিন তার নিজদল এবং অন্যান্য বিরোধীদলের কয়েকজন এমপির চাপের মুখে পড়েছেন, যেন তিনি আরেকটি ইইউ গণভোটের আহ্বান জানান।

তবে প্রধানমন্ত্রীর সবার সাথে আলোচনার যে প্রস্তাব দিয়েছেন সেটাকে স্বাগত জানিয়েছেন ওয়েস্টমিনস্টারের স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির এমপি ইয়ান ব্ল্যাকফোর্ড।

তার দল সরকারের সাথে গঠনমূলকভাবে কাজ করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও তিনি জানান।

তবে তিনি ব্রেক্সিটের আইনী প্রক্রিয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে এ সংক্রান্ত আরেকটি গণভোট আয়োজনের সেইসঙ্গে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টিকে আলোচনার টেবিলে আনার আহ্বান জানান।

মূলত ২০১৬ সালের গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় আসলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করেন। পরে টেরিজা মে তার স্থলে এসে বিচ্ছিন্নতার প্রক্রিয়া শুরু করেন।

সে অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাওয়ার কথা।

এ অবস্থায় পরবর্তী সম্পর্কের রূপরেখা নিয়ে জোটটির সঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর যে চুক্তি হয়েছিল সেটার অনুমোদনের বিষয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এই ভোটাভুটি হয়।

ওই চুক্তিতেও ২৯ মার্চের মধ্যে ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার শর্ত নির্ধারণ করা হয়েছিল ।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল