২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নতুন অভিযান শুরু করেছে তুরস্কের সেনাবাহিনী

নতুন অভিযান শুরু করেছে তুরস্কের সেনাবাহিনী - সংগৃহীত

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো প্রদেশের মানবিজ শহরের উপকন্ঠজুড়ে মার্কিন সহযোগিতায় টহল দেয়া শুরু করেছে তুর্কি বাহিনী। এই মাসের শুরুর দিকে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী মানবিজ থেকে কুর্দি যোদ্ধাদের প্রত্যাহারের বিষয়ে সম্মত হয়েছিল। তুরস্ক কুর্দি যোদ্ধাদের সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করে।

সোমবার মানবিজ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নতুন অভিযান শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে তুর্কি সেনাবাহিনী। গত দুই বছরে সিরিয়ায় চালানো বিভিন্ন অভিযানে এই অঞ্চলগুলোতে বেশ প্রভাব সৃষ্টি করেছে তুরস্ক।

এক টুইটে সেনাবাহিনী জানায়, পূর্বে সম্মত হওয়া মানবিজ রোডম্যাপ এন্ড প্রিন্সিপালস অনুসারে, তুর্কি সশস্ত্র বাহিনী ও মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর সেনারা মানবিজ ও (তুরস্ক- নিয়ন্ত্রিত) এলাকার মধ্যকার রেখায় স্বাধীনভাবে টহল কার্যক্রম শুরু করেছে।

এ বিষয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এক সমাবেশে দেয়া ভাষণে বলেন, আমরা আগেই বলেছি যে, ওই সন্ত্রাসী সংগঠনটি মানবিজ ছেড়ে যাবে। আমরা মানবিজে টহল অভিযান শুরু করা নিয়ে কথা বলেছি। তুর্কি মানবিজ ও তুরস্ক-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ১৯০জন সেনা মোতায়েন করেছে। ৫ জুলাইয়ের মধ্যে সেখানে আরো সেনা মোতায়েন করা হবে।

মানবিজ ২০১৬ সালের আগ পর্যন্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসের নিয়ন্ত্রণে ছিল । তবে ২০১৬ সালে মার্কিন সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স (এসডিএফ) আইএসের কাছ থেকে শহরটি পুনর্দখল করে। সেসময় এসডিএফের একটি বড় অংশ ছিল-কুর্দিশ পিপল’স প্রটেকশন ইউনিটসের(ওয়াইপিজি)- সদস্য দিয়ে তৈরি।

৪ই জুন এক বৈঠক শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও (ডানে) ও তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলভুত কাভুসগলু (বামে), মানবিজ থেকে কুর্দি যোদ্ধাদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে সম্মত হওয়ার ঘোষণা দেন।

তবে তুরস্ক ওয়াইপিজি কে কুর্দিস্তান ওয়ার্কারস পার্টি (পিকেকে) সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে। তুরস্কে পিকেকে’কে একটি অবৈধ দল হিসেবে ঘোষিত। দেশটিতে পিকেকে ও ওয়াইপিজি, উভয় সংগঠনকেই সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু কুর্দি যোদ্ধাদের প্রতি মার্কিন সমর্থন থাকার বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ হয় তুর্কি। তারা সিরিয়ার আফরিনে অভিযান চালানোর হুমকি দেয়। এতে করে সেখানে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের সঙ্গে তাদের সংঘাতে জড়ানোর সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

তবে ৪ই জুন উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে এক বৈঠক শেষে তারা ঘোষণা দেয় যে, মানবিজ থেকে কুর্দি যোদ্ধাদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে তারা সম্মত হয়েছে। এর একদিন পরেই মানবিজ থেকে তাদের সামরিক উপদেষ্টাদের সরিয়ে নেবার ঘোষণা দেয় ওয়াইপিজি।

অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানে সমৃদ্ধ হচ্ছে তুরস্ক

আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই মার্কিন এফ-৩৫ জঙ্গি বিমানের প্রথম চালান পাচ্ছে তুরস্ক। তুর্কি দৈনিক সাবাহ এ খবর দিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে তুরস্ককে ৩০টি বিমান দেয়া হচ্ছে।

তুরস্ক ১৯৯৯ সালে এক শ'টি এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান কেনার জন্য আমেরিকার সঙ্গে চুক্তি করেছে। এর মধ্যে ৩০টি বিমান কয়েক দিনের মধ্যেই হস্তান্তর করা হবে। এ জন্য তুরস্ক সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী নুরুদ্দিন জানকিলি বলেছেন, জঙ্গিবিমান ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তিতে দেয়া সব প্রতিশ্রুতি আঙ্কারা পুরণ করেছে। এরইমধ্যে ৮০ কোটি ডলারের বেশি পরিশোধ করা হয়েছে।

চুক্তি সইয়ের পর থেকেই আমেরিকার বেশ কয়েকজন আইন প্রণেতা তুরস্ককে এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান দেওয়ার বিরোধিতা করে আসছে।

যে কারণে এস-৪০০ কিনবে তুরস্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির কারণেই রাশিয়ার কাছ থেকে তুরস্ক এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তুর্কি বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল এরদোগান কারাকুন এ কথা বলেছেন।

রুশ স্পুতনিক সংবাদ সংস্থাকে তিনি আরো বলেন, রুশ-তুর্কি সম্পর্ক বিস্তারের মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতার ভারসাম্যের ওপর প্রভাব পড়বে। এতে এ অঞ্চলে আরো সংকট সৃষ্টি হওয়াকে হয়ত প্রতিহত করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তৈরি এফ-৩৫ জঙ্গি বিমান তুরস্ককে দেয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় আঙ্কারাকে বিকল্প সামরিক সহযোগিতার পথ বেছে নিতে হয়েছে। পাশাপাশি তুরস্কের নিজস্ব যুদ্ধবিমান তৈরির প্রচেষ্টা ব্রিটেনের বিরোধিতার মুখে পড়েছে বলেও জানান তিনি।

তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে অস্ত্র সহযোগিতার উভয় দেশের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement