২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এরদোগানের নতুন প্রতিশ্রুতি

এরদোগানের নতুন প্রতিশ্রুতি - সংগৃহীত

ঐতিহাসিক ইস্তাম্বুল নগরীকে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যেপ এরদোগান।সম্প্রতি ইস্তাম্বুলের ‘ইয়েনিকাপি স্কোয়ারে’ জাস্টিজ এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) বিশাল নির্বাচনী সমাবেশে এরদোগান এই প্রতিশ্রুতি দেন।

সমাবেশে হাজার হাজার এরদোগান সমর্থক ও সাধারণ ভোটাররা অংশ নেন। তাদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্য করার মতো। দেশটির গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনে ইস্তাম্বুলের ফলাফলকে একটি নির্ধারক হিসেবে দেখা হয়।

সমাবেশে বক্তৃতাকালে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যেপ এরদোগান বলেন, গত ১৬ বছরে ইস্তাম্বুল প্রকল্পে ৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং এতে শহরের শিক্ষা, অবকাঠামো ও বাণিজ্যিক জীবন ব্যাপকভাবে উন্নতি লাভ করেছে। তার সরকার দেশের ২১টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়িয়ে ৫৭টি বিশ্ববিদ্যালয় করেছে। আতাতুর্ক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পুনর্নির্মাণসহ ইস্তাম্বুলকে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্প অব্যাহত রয়েছে।

সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম বলেন, ইস্তাম্বুলের জন্য সাতটি প্রধান অবকাঠামো প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে, ইস্তাম্বুলে আরো একটি বিমানবন্দর নির্মাণ, মেট্রো লাইন এবং ইস্তাম্বুল-ইজমির হাইওয়ে প্রতিষ্ঠা।

তিনি আরো বলেন, একে পার্টির সরকার সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে দাঁড়িয়েছে। তিনি বিরোধীদলের সন্ত্রাসবিরোধী কৌশলগুলি ব্যাখ্যা করার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশে বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীও উপস্থিতিও ছিল লক্ষ্য করার মতো, বিশেষত আফ্রিকান দেশগুলির অনেক ছাত্র-ছাত্রী সমাবেশে অংশ নেয়।

স্থানীয় ‘এনটিভি টেলিভিশন’ এর প্রতিবেদককে এসব বিদেশির একজন জানান, তাদের সমস্যা সমাধান করার জন্য এরদোগানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে সমাবেশে এসেছেন।

গত এপ্রিলে প্রেসিডেন্ট এরদোগান নির্ধারিত সময়ের এক বছরেরও বেশি আগে নির্বাচন আহ্বান করেন। অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য তুরস্কের একটি শক্তিশালী নির্বাহী প্রেসিডেন্সির প্রয়োজনের কথা বলে এরদোগান আগাম নির্বাচন দেন।

গত বছরের গণভোটে একজন শক্তিশালী প্রেসিডেন্টের পক্ষে রায় দেয় দেশটির জনগণ। এই রায়ের ফলে প্রধানমন্ত্রীর পদ বাতিল করা হয় এবং প্রেসিডেন্টকে বিচারপতিদের নিয়োগ এবং ডিক্রি জারির ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। গণভোটের আগে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট পদটি ছিল কেবলই আনুষ্ঠানিকতা।

নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের মুখে এরদোগান!

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান চলতি মাসে অনুষ্ঠেয় তুরস্কের নির্বাচনে নজিরবিহীন প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হতে যাচ্ছেন। বিরোধীরা নতুন একটি ঐক্য গড়ে তুলেছে। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জোর নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে।

২০০৩ সালে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণকারী এরদোগান এখন দেশটির প্রেসিডেন্ট। তিনি নিজেকে তুরস্কের নির্বাচনে বিজয়ী দেখতে চান। খবর এএফপি’র।

কিন্তু বিশ্লেষকরা বলেন, তার ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি) ২৪ জুনের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিরোধী জোটের কাছে হেরেও যেতে পারে।

এরদোগান দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করবেন ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। গত বছরের গণভোটের মাধ্যমে তার ক্ষমতাকে বহুগুণ বাড়ানো হয়েছে এবং একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এরদোগানের বিজয় সম্পর্কে আগে থেকেই কিছু বলা যাচ্ছে না। এই নির্বাচনটি দ্বিতীয় পর্যায়ে যেতে পারে।

প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস’ পার্টি (সিএইচপি) নেতা কেমাল কিলিকদারোগলু নিজেই প্রার্থী না হলে এমপি মুহারেম ইনসেকে মনোনিত করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন। আর ইনসের দল ভিন্নমতাবলম্বী জাতীয়তাবাদী সাবেক মন্ত্রী মেরাল আকসেনের ও রক্ষণশীল সাদেত পার্টির সঙ্গে বৃহৎ জোট গড়ে তোলেন।

ইউরোপীয় পরিষদের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কর্মকর্তা এসলি আইদিনতাসবাস বলেন, ‘এই প্রথমবারের মতো তুরস্কের বিরোধী দলগুলো এ ধরনের সমন্বয় ও ঐক্য গড়ে তুলছে।’ এই নারী কর্মকর্তা আরো বলেন, একেপি ইনসেকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়নি। কিলিকদারোগলুকে একটি সহজ প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হয়েছিল। অর্থনৈতিক সংকট বৃদ্ধির মধ্যেই নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

এ বছর তুরস্কের মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে ১২.১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এবং ডলারের বিপরীতে লিরার মান ২০ শতাংশ কমে গেছে।
লেভিন বলেন, তুরস্কতে বর্তমানে ৩৫ লাখ সিরীয় শরণার্থী অবস্থান করছে। দেশের মানুষ ক্রমেই এদের প্রতি বিরূপ ও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। বিরোধী দলগুলো জনগণের এই মনোভাবকে পুঁজি করে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement