০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ফ্লাক্স

-

শ্রাবণ মাস চলছে। বান্ধবীর বিয়ে, কী গিফট করব বুঝতে পারছি না। সেদিন বান্ধবীকে বললাম, কী রে, কী গিফট নিবি?
বান্ধবী বলল, চিন্তা কর দিনরাত।
রিমঝিম বৃষ্টি পড়ছে। ঘুম পাচ্ছে খুব, কিন্তু ঘুমালে তো চলবে না। বান্ধবীর বিয়ের গিফট রেডি করতে হবে। তাই জলদি রান্না ঘরে গিয়ে চা করে ফ্লাক্স ভর্তি করে নিলাম। কারণ চা খেলে বরাবরই আমার ঘুম ধরে না। সারা রাত চা খেয়ে ঘুম বিদায় করলাম। এভাবে রাতটা কেটে গেল। সকালে ফ্রেশ হয়ে সাজুগুজু করে রওনা দিলাম। সাথে চা ভর্তি ফ্লাক্স। বিয়ের বাড়ি, কী বিরাট বাড়ি, আর কত আয়োজন! তবে নিজের ভেতর গর্ববোধ কাজ করছে। বান্ধবীর ইচ্ছে মতো গিফট দিতে পারছি বলে।
ভেতরে প্রবেশ করলাম, গানবাজনা হচ্ছে খুব। বান্ধবী আমাকে দেখে খুশিতে গদগদ করে উঠল। যতই হোক সাত বছরের বন্ধুত্ব। বলতে গেলে একজন আরেক জনের নোটবুক।
যাই হোক সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো বান্ধবী। খাওয়া-দাওয়া হলো। এক পর্যায়ে বান্ধবীর চাচাতো, ফুফাতো, মামাতোÑ বলতে গেলে সব ‘তো’ ভাইবোন উপস্থিত। সবার কাছ থেকে গিফটগুলো বান্ধবী আগেই নিয়ে নিচ্ছে আর ওর রুমে জমা করছে।
শেষে আমার পালা। বান্ধবী বলল, বল, কী গিফট এনেছিস? তোর গিফট নিয়ে রুম তালা মেরে দেবো। পরে এসে দেখব।
এই শুনে আমি তো ভয়ে থরথর করছি। না জানি কখন আমাকে রুমে রেখে তালা মেরে দেয়। তবুও বললাম, সেদিন তোকে বললাম কী গিফট নিবি? তুই কী বলছিলি মনে আছে?
Ñহ্যাঁ, মনে আছে। বলছিলাম চিন্তা কর দিনরাত।
আমি ফ্লাক্সটা উঁচিয়ে ধরে দেখলাম। বললাম, এটা দেখছিস?
বান্ধবী বলল, এটা তো ফ্লাক্স!
Ñহ্যাঁ। চিন্তা করতে বলেছিলি। আর জানিস তো আমি খুব ঘুম কাতুরে। তাতে শ্রাবণ মাস। বৃষ্টির শব্দ পেলে ঘুম চেপে বসে। অনেক কষ্টে ফ্লাক্স ভর্তি চা করে খেয়েছি আর জেগে জেগে চিন্তা করেছি। তুই যা চাইছিস তাই করছি।
এই কথা বলার পর বান্ধবী এবং ‘তো’ ভাইবোনদের কারো হুঁশ ছিল কি না জানি না, কিন্তু আমার ফ্লাক্সের চা শেষ হয়েছিল। বোধ হয় আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।

 


আরো সংবাদ



premium cement