২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জেএনইউতে দীপিকা, অভিনেত্রীর ছবি বয়কট আহ্বান বিজেপি নেতার

জেএনইউতে দীপিকা - ছবি : সংগৃহীত

ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লির জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটিতে ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের উপর হামলার পর থেকেই উত্তাল ভারত। রোববার ওই হামলার পর থেকেই জায়গায় জায়গায় চলছে প্রতিবাদ।

সোমবার মুম্বইতে অনুরাগ কাশ্যপ, তাপসী পান্নো, জোবা আখতারের মতো বলিউডের শিল্পীদের পথে নামতে দেখা গিয়েছে। আর মঙ্গলবার খাস জেএনইউ-তে পৌঁছে গেলেন দীপিকা পাডুকোন।

‘ছপক’ ছবির প্রোমোশনের ব্যস্ততা কাটিয়েই এদিন তিনি গাড়ি নিয়ে সোজা জেএনইউ-তে চলে যান। সেখানে ছিলেন কানহাইয়া কুমার, ঐশী ঘোষ। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের কথা শোনেন তিনি।

এরপরই বিজেপি নেতা তাজিন্দর বাগ্গা ট্যুইটারে লেখেন, টুকরে টুকরে গ্যাং আর আফজল গুরুকে সমর্থন করার জন্য দীপিকার ছবি বয়কট করা উচিৎ।

এ দিকে সোমবার মুম্বইয়ে জেএনইউ তাণ্ডবের প্রতিবাদে যে মিছিল হয়েছিল তাতে যোগ দিয়েছিলেন অনুরাগ কাশ্যপ, অনুরাগ বসু, তাপসী পান্নু, গহর খান, বিশাল ভারদ্বাজ, রিচা চাড্ডা, আলি ফজল, রীমা কাগতি, দিয়া মির্জা-সহ বলিউডের বেশ কিছুচেনা মুখ। অনিল কপূর এবং আদিত্য রয় কপূরও মঙ্গলবার এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেন।

জেএনইউর ছাত্ররা জানিয়েছেন, রোববার বিকেল থেকেই ক্যাম্পাসে আচমকা ভিড় জমতে শুরু করে। মুখোশধারী গুন্ডারা প্রথমে সবরমতী ধাবার বাইরে জড়ো হয়। অভিযোগ, এর পর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এবিভিপি নেতা-নেত্রীরা ভাড়াটে গুন্ডাদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়েন। তাদের অভিযোগ, এর পর, রড, লাঠি, বাঁশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপরে চড়াও হয় তারা। হস্টেলের আলো নিভিয়ে দিয়ে হামলার পাশাপাশি সবরমতী, কাবেরী, পেরিয়ার হস্টেলে ভাঙচুরও চলে। সভানেত্রী ঐশী ঘোষসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী ছাড়াও আহত হন বেশ কয়েকজন অধ্যাপকও। যদিও এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করেনি দিল্লি পুলিশ।

এ নিয়ে মঙ্গলবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। তার মতে, ‘মানুষ ভয়কে জয় করে যেভাবে রাস্তায় নামছেন, তা সত্যিই অসাধারণ।’

দিল্লিতে নিজের আসন্ন ছবি ‘ছপাক’-এর প্রচারে গিয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি থেকে জেএনইউয়ের ঘটনা, সব কিছু নিয়েই নিজের প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিবাদ করলেন ৩৪ বছরের অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘ভীতসন্ত্রস্ত না থেকে আমরা জোর গলায় নিজেদের বক্তব্য জানাচ্ছি-এটাই আমার কাছে অত্যন্ত গর্বের। রাস্তায় নেমে মানুষের প্রতিবাদের ছবি দেখে একটাই কথা আমার মনে হয়েছে, সবাই দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবচ্ছেন। যদি আমরা দেশ বা সমাজে পরিবর্তন চাই, তাহলে প্রতিবাদের ভাষা আরো জোরালো করতে হবে। এটা খুবই জরুরি।’ ছবির পরিচালক মেঘনা গুলজারও একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সামাজিক জীব। আমাদের এই সমাজেই থাকতে হবে। তাই আমরা প্রতিবাদ করছি। চারিদিক যা ঘটছে, তা দেখে আমি অত্যন্ত ব্যথিত, মর্মাহত, চিন্তিত।’

প্রতিবাদের একই ভাষা শোনা গেছে অভিনেতা অজয় দেবগনের গলায়। তিনি বলেন, ‘জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা লজ্জাজনক। হিংসা কোনও সমস্যার সমাধান নয়।’ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অজয় দেবগন বলেন, ‘সোমবার সকাল থেকে আমি টিভির উপরই নজর রেখেছি। ঠিক যেন একটি যুদ্ধ চলছে। এই ঘটনার পিছনে যে এজেন্ডা থাকুক না কেন, এটা আমাদের দেশের ক্ষতিই করবে। হামলার জন্য কারা দায়ী, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তাই কী বলব, জানি না। কিন্তু যা ঘটছে, তা মোটেই ভালো হচ্ছে না।’

কলকাতা ও বর্তমান


আরো সংবাদ



premium cement