২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পদত্যাগের সিদ্ধান্তে অনড় রাহুল গান্ধী

রাহুল গান্ধী - ছবি : সংগ্রহ

কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফার সিদ্ধান্তেই অনড় রাহুল গান্ধী। কার্যত তার বিকল্পের সন্ধানও শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। বাতিল করা হয়েছে তার সব রাজনৈতিক কর্মসূচি। এমনকি, দলের নবনির্বাচিত এমপিদের সঙ্গে দেখা করতেও রাজি হননি রাহুল। দুই বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল এবং কে সি বেণুগোপালের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দিষ্ট করে তার ইস্তফার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। দলের একটি শীর্ষ সূত্রে দাবি, নতুন নেতা খোঁজার জন্যও দুই নেতাকে রাহুল স্পষ্ট বলে দিয়েছেন।

লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর শনিবার দলের কার্যকরী কমিটির বৈঠকেই কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন রাহুল। কিন্তু ওয়ার্কিং কমিটি তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি। বরং দলের দুঃসময়ে এবং লোকসভা ভোটে মোদি তথা বিজেপিকে তিনিই একমাত্র চাপে ফেলতে পেরেছেন বলে রাহুলকেই দলের সভাপতি পদে কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন ওয়ার্কিং কমিটির নেতা-নেত্রীরা। এমনকি, সনিয়া গান্ধী এবং প্রিয়ঙ্কাও তাকে বুঝিয়ে তখনকার মতো নিরস্ত করেন।

সে দিনের মতো বিষয়টি মিটে গেলেও পরে ফের কঠোর অবস্থান নেন রাহুল গান্ধী। সূত্রের খবর, সোনিয়া-প্রিয়ঙ্কা আরো এক দফা বুঝিয়েও রাজি করাতে পারেননি এবং তারাও শেষ পর্যন্ত রাহুলের সিদ্ধান্তেই সায় দিয়েছেন। অসংখ্য নেতা-নেত্রী ফোনে বা দেখা করে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন এই দু’দিনে। কিন্তু দলের একাধিক সূত্রে খবর, রাহুল আর কোনোভাবেই কংগ্রেস সভাপতির পদে ফিরতে রাজি হননি। কংগ্রেসের নবনির্বাচিত এমপিরা তার সঙ্গে দেখা করার আর্জি নিয়ে ফোন করেছিলেন। কিন্তু রাহুল কারো সঙ্গেই সাক্ষাতে রাজি হননি। তার সব অ্যাপয়েন্টমেন্ট, বৈঠক এবং রাজনৈতিক কর্মসূচি সব কিছুই বাতিল করেছে দল। সেটাও যে রাহুলের নির্দেশেই হয়েছে, দলের অন্দরমহলে খবর তেমনই।

রাহুলের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, পদ ছাড়ার ব্যাপারে আর কোনো দ্বিমতই নেই। তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। শুধু নতুন কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন করা পর্যন্ত দায়িত্বভার সামলাবেন তিনি। সেই সময়টুকু দলকে দিতে সম্মত হয়েছেন। তবে এই সময়ের মধ্যেও দলের সাংগঠনিক বা অন্য কোনো বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে তিনি অগ্রণী ভূমিকা নেবেন না বলেই সূ্ত্রের খবর।

রাহুলের এই অনমনীয় অবস্থান বুঝেই তলে তলে পরবর্তী পদক্ষেপও শুরু হয়ে গেছে বলে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সূত্রে খবর। পরবর্তী কংগ্রেস সভাপতি কে হবেন, তা নিয়েও দলের অন্দরে শুরু হয়েছে জল্পনা। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, সিডব্লিউসি-র পরবর্তী বৈঠকেই আনুষ্ঠানিকভাবে রাহুলের পদত্যাগের কথা ঘোষণা করা হতে পারে।

অন্য দিকে শনিবারের কার্যকরী বৈঠকে ইস্তফার ঘোষণার পর এই প্রথম টুইট করলেন রাহুল। সোমবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর মৃত্যু দিবসে শান্তিবনে গিয়ে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান রাহুল গান্ধী। ছিলেন সোনিয়া গান্ধীও। পাশাপাশি টুইটারেও শ্রদ্ধা জানিয়ে রাহুল লিখেছেন, ‘একটি শক্তিশালী, স্বাধীন এবং আধুনিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে দেশকে শক্তিশালী করার জন্য তার মৃত্যু দিবসে চলুন আমরা জওহরলাল নেহরুর অবদানকে স্বীকার করি। তার সেই অবদানের জন্যই ভারতবর্ষে ৭০ বছর ধরে গণতন্ত্র জীবিত।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

 


আরো সংবাদ



premium cement