২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ছেলের বিরুদ্ধে ভোটে জিতলেন মা

মা জাহরা বুতুল ও ছেলে সৈয়দ হারুন আহমদ সুলতান - ছবি : সংগ্রহ

পাকিস্তানে রোববার অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে একটি আসনে লড়াই হয়েছে মায়ের সাথে ছেলের। ভোটের সেই লড়াইয়ে ছেলেকে পরজিত করে এমপি নির্বাচিত হয়েছে মা। পাঞ্জাব প্রদেশের মুজাফফরগড় এলাকা গিয়ে গঠিত পিপি-২৭২ আসনে মা ও ছেলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়।

মা জাহরা বুতুলের বিপক্ষে তার ছেলে সৈয়দ হারুন আহমদ সুলতান ভোটে দাড়ান। মা ক্ষমতাসীন তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রার্থী এবং ছেলে হারুন সুলতান ছিলেন একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

জাহরা বুতুলের স্বামী আবদুল্লাহ শাহ বুখারিও পাকিস্তান পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন। আর গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে তার বড় ছেলে বাসিত সুলতান এই আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। একই সাথে বাসিত জাতীয় পরিষদের এনএ-১৮৫ আসন থেকেও নির্বাচিত হন। এরপর বাসিত আঞ্চলিক পরিষদের আসনটি ছেড়ে দিলে সেখানে উপনির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয় মা জাহরা বুতুলকে। কিন্তু মায়ের বিপক্ষে স্বতন্ত্র নির্বাচন করেন আরেক ছেলে হারুন আহমদ সুলতান।

মজার ব্যাপার হলো সুলতান বিগত সাধারণ নির্বাচনেও ভাই বাসিত সুলতানের বিপক্ষে প্রার্থী হয়েছিলেন। সেখানেও তিনি পরাজিত হন। তবে সুলতানও অতীতে তিনবার এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন, দুই দফায় প্রাদেশিক পরিষদের মন্ত্রীও ছিলেন।

রোবারের উপনির্বাচনে ওই আসনে পাঁচজন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয় মা ও ছেলের মধ্যে। মা বুতুল ২৪ হাজার ১৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন, আর ছেলে হারুন সুলতান পেয়েছেন ১৮ হাজার ৭২ ভোট।

৩৫ আসনে উপ নির্বাচন
পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক ৩৫টি আসনে রোববার উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। দেশজুড়ে সাত হাজার ৪৮৯টি পোলিং স্টেশনে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ভোট গণনা শুরু হয়। নির্বাচনে ফলাফল সোমবার রাত নাগাদ পাওয়া যেতে পারে। তবে আগাম পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, নওয়াজ শরিফের দলের আসন বৃদ্ধি পেতে পারে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসি ও সাবেক রেলমন্ত্রী সা’দ রফিকসহ মোট ৬৪১ জন প্রার্থী এই উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন । এতে ভোটার ছিলেন ৯২ লাখ ৮ হাজার ৩৭৪ জন। সাত হাজার ৩৬৪ জন প্রবাসী পাকিস্তানিও এবারের নির্বাচনের ভোট দেয়ার জন্য তালিকাভুক্ত হন। পাকিস্তানের নির্বাচনে দেশের বাইরে অবস্থান করে ভোট দেয়ার ঘটনা এটিই প্রথম।

৩৫টি আসনের মধ্যে জাতীয় পার্লামেন্টে ১১টি আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। এ ছাড়া পাঞ্জাব পার্লামেন্টের ১১টি, খাইবার পাখতুনখাওয়াতে ৯টি এবং সিন্ধু ও বেলুচিস্তানে দু’টি করে আসনে উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হয়। পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন জানায়, এক হাজার ৭২৭টি পোলিং স্টেশনকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে এ স্টেশনগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল।

উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ (পিটিআই) পাঞ্জাব, সিন্ধু ও খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে বিরোধীদলের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, জাতীয় পরিষদ ও পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের ১১টি করে আসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা ক্ষমতাসীন পিটিআই উভয় পরিষদের সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement