নেপালকে চীনের ৭ বন্দর ব্যবহারের অনুমতি, দুশ্চিন্তায় ভারত
- রয়টার্স
- ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:৩৯
নেপালকে চারটি সমুদ্রবন্দর ও তিনটি স্থলবন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে চীন। নেপাল সরকার এ কথা জানিয়েছে। শুক্রবার দেশ দু’টির কর্মকর্তারা এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করেছেন। চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর কাঠমান্ডু চীনের তিয়ানজিন, শেনজেন, লিয়ানইয়ুংগাং ও ঝানজিয়াং সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে পারবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে নেপালের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর পাশাপাশি চীনের তিনটি স্থলবন্দর লানঝৌ, লাসা ও জিগাৎসে ব্যবহারেরও সুযোগ দেয়া হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। খসড়ায় বন্দর সংশ্লিষ্ট সড়কগুলোও নেপাল ব্যবহার করতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নেপালের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা রবি শংকর সাইনজু বলেছেন, ‘ভারতের দুটো বন্দরের পাশাপাশি আমরা এখন থেকে চীনেরও চারটি সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ পেতে যাচ্ছি, এটি একটি মাইলফলক।’ দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা হলেও কবে চুক্তি স্বাক্ষর হবে তা জানাতে পারেননি তিনি। সিদ্ধান্তটি কার্যকর হওয়া শুরু করলে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও উত্তর এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে নেপালে আসা কার্গোবাহী জাহাজের সময় ও খরচ দুই-ই সাশ্রয় হবে। বেইজিং ও কাঠমান্ডুর মধ্যে এই সমঝোতা দিল্লির কপালে ভাঁজ ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে। স্থলবেষ্টিত নেপালের সঙ্গে অন্য দেশগুলোর বাণিজ্য ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভারত যে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নিত, চীনা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ তা খর্ব করবে বলেই ধারণা পর্যবেক্ষকদের।
এশিয়ার দুই প্রভাবশালী দেশ চীন ও ভারতের সঙ্গে সীমান্ত থাকা নেপাল এত দিন জ্বালানিসহ জরুরি পণ্য সরবরাহ ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দিল্লির বন্দরগুলোর ওপরই নির্ভরশীল ছিল। ২০১৫-১৬’র কয়েক মাস ভারত নেপালের ওপর অবরোধ আরোপ করলে জ্বালানি ও ওষুধ সঙ্কটে পড়া কাঠমান্ডু তখন থেকেই বিকল্প পথ খুঁজতে থাকে। শুক্রবারের সমঝোতাকে হিমালয়ের দুই পাশের দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির নিদর্শন হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
স্থলবেষ্টিত নেপালের বাণিজ্য যোগাযোগ এখন পর্যন্ত ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কলকাতা বন্দরকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে; নয়াদিল্লি সম্প্রতি নেপালের জন্য দক্ষিণের বিশাখাপট্টম বন্দরও খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চীনের সঙ্গে নেপালকে যুক্ত করতে চাইলে সীমান্তের নেপাল অংশের সড়ক ও শুল্ক ব্যবস্থাপনার ঘাটতি মেটাতে হবে। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত নেপাল থেকে চীনের সবচেয়ে কাছের বন্দরের দূরত্বও দুই হাজার ৬০০ কিলোমিটারের বেশি। উলের কার্পেট রফতানিকারক ব্যবসায়ী অনুপ মাল্লা বলেছেন, চীনের বন্দরে দ্রুত প্রবেশাধিকারের জন্য নেপালকে অবশ্যই তাদের অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটাতে হবে। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, নেপালে ভারতের প্রভাব কমাতে দেশটিতে বিনিয়োগ ও সহায়তার পরিমাণ বাড়াচ্ছে বেইজিং; এর মাধ্যমে দিল্লির প্রতি চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিচ্ছে তারা। নেপালের ভেতর রেলওয়ে, বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন নির্মাণ এবং দুই দেশের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি নিয়েও বেইজিং ও কাঠমান্ডুর মধ্যে আলোচনা চলছে।
আরো পড়ুন :
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৬
এনডি টিভি
নেপালের মধ্যাঞ্চলীয় পাহাড়ি এলাকায় গতকাল শনিবার সাত আরোহীসহ একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ছয় আরোহী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এক আরোহী বেঁচে আছেন বলে জানিয়েছে কাঠমান্ডু পোস্ট।
অ্যালটিটিউড এয়ারের হেলিকপ্টারটি এক পাইলট ও ছয় যাত্রীসহ মধ্যাঞ্চলীয় গোর্খা জেলা থেকে রাজধানী কাঠমান্ডুর উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর একপর্যায়ে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে। যাত্রীদের মধ্যে এক জাপানি ট্রেকারও ছিলেন।
অ্যালটিটিউড এয়ার জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৫ মিনিটের দিকে হেলিকপ্টারটি এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারের সাথে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে। পাইলট নিশাল কেসি হেলিকপ্টারটি চালাচ্ছিলেন। সকাল ৮টা ১৮ মিনিটে হেলিকপ্টারটি ল্যান্ড করবে এমন প্রত্যাশা করা হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (টিআইএ) মহাব্যবস্থাপক রাজকুমার ছেত্রি।
পরে নিউয়াকোট জেলার মাইলুং পাখা গিরিসঙ্কটের বন এলাকায় নিখোঁজ হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পাওয়া যায়। নিকটবর্তী যে স্থানে উদ্ধারকারী হেলিকপ্টারগুলো নামে সেখান থেকে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছতে দুই ঘণ্টা সময় লাগে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজে বিঘœ ঘটে।
নিউয়াকোটের পুলিশ প্রধান এসপি বসন্ত বাহাদুর কুনওয়ারের ভাষ্য অনুয়ায়ী, দুর্ঘটনাস্থলে হেলিকপ্টারটির ছয় আরোহীকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়, কিন্তু এক নারী আরোহী জীবিত আছেন। ওই নারীর নাম আনি দোলমা বলে কাঠমান্ডু পোস্টকে জানিয়েছে অ্যালটিটিউড এয়ারের সূত্রগুলো। হিমালয় পর্বত অঞ্চলের দেশ নেপালের যেসব জায়গায় সড়কপথে পৌঁছানো কষ্টসাধ্য অথবা কোনো সড়কপথ নেই সেসব প্রত্যন্ত এলাকাগুলোয় পর্যটক ও মালামাল পৌঁছানোর কাজে বেসরকারি হেলিকপ্টার সার্ভিস দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কিন্তু পাইলটদের নি¤œমানের প্রশিক্ষণ ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতির কারণে দেশটির এয়ার সেইফটি রেকর্ড তলানির দিকেই রয়ে গেছে। ২০১৬ সালে কাঠমান্ডুর ২২ কিলোমিটার উত্তরে আরেকটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে সাতজন নিহত হয়েছিল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা