২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাকিস্তানকে ৮টি সাবমেরিন দিচ্ছে চীন, প্রচণ্ড চাপে ভারত

পাকিস্তানকে ৮টি সাবমেরিন দিচ্ছে চীন, প্রচণ্ড চাপে ভারত - ছবি : সংগৃহীত

পাকিস্তানের সাথে সবসময়ই ভালো সম্পর্ক রক্ষা করে চলে চীন। এবার ফের পাকিস্তানকে সামরিক দিক থেকে আরো শক্তিশালী করার দিকে নজর দিল তারা। জানা গেছে, পাকিস্তানের জন্য চীনে আটটি সাবমেরিন তৈরি হচ্ছে। এই সাবমেরিনগুলো পাকিস্তানের হাতে চলে গেলে সমস্যায় পড়ে যাবে ভারতীয় নৌবাহিনী।

ভারতীয় মিডিয়া সূত্রের খবর, প্রজেক্ট হাঙ্গুরের আওতায় সাবমেরিন তৈরি করছে চীন। খুব শিগগিরই সেগুলো পাকিস্তানের হাতে তুলে দেয়া হবে। ভারতের এখন পর্যন্ত ১৬টি সাবমেরিন রয়েছে। আর পাকিস্তানের সাবমেরিন সংখ্যা ১০। নতুন এই সাবমেরিনগুলো পাকিস্তানের হাতে পৌঁছে গেলে তাদের সাবমেরিনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া চীনের তৈরি নতুন এই সাবমেরিনগুলো পানির নিচেও যুদ্ধ করতে সক্ষম।

সাবমেরিন পাওয়ার ফলে পাকিস্তানের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে। ভারতীয় মিডিয়ায় বলা হয়, এই পদক্ষেপটি তখনই নেয়া হলো, যখন চীন দু’টি রিমোট স্যাটেলাইট লঞ্চ করেছে। এর সাহায্যে মহাকাশ থেকে ভারতের উপর নজরদারি চালাবে চীন। আর সাবমেরিনের সাহায্যে পাকিস্তান নজর রাখবে ভারতের উপর। পাকিস্তানের গদরে চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর তৈরির ক্ষেত্রে যাতে কোনো বাধা না আসে, সেই কারণেই এই দুই দেশ এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

স্যাটেলাইট PRSS-1 ও PakTES-1A উত্তর পশ্চিম চীনের জিউকুয়ান স্যাটেলাইট সেন্টার থেকে ছাড়া হয়েছে। লং মার্চ 2C রকেট থেকে এই স্যাটেলাইট দু’টি ছাড়া হয়। PRSS-1 হলো প্রথম রিমোট স্যাটেলাইট যেটি পাকিস্তানের হাতে তুলে দেয় চীন। চায়না অ্যাকাডেমি অফ স্পেস টেকনোলজির তৈরি করা ১৭তম স্যাটেলাইট এটি। বলা হচ্ছে, এই স্যাটেলাইটটি সার্ভে, জাতীয় বিপর্যয় পর্যবেক্ষণ, কৃষির গবেষণা, শহরের উন্নয়নের মতো কাজে ব্যবহার করা হবে। সবটাই হবে চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর বেল্টের মধ্যে।

খবরে বলা হয়, চীনের এই সাবমেরিন প্রদানের মধ্যে শুধু চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর স্বার্থ নেই। ভারতীয় প্রতিরক্ষাকে সাঁড়াশি চাপে রাখতে চাইছে চীন। সেই কারণেই একে একে স্যাটেলাইট ও সাবমেরিনের সাহায্যে সাগর ও আকাশ থেকে ভারতীয় ভূখন্ডে নজরদারি চালানোর ব্যবস্থা পাকা করতে চাইছে তারা।

আরো পড়ুন :

মহারাষ্ট্রে ৩ মাসে ৬ শতাধিক কৃষকের আত্মহত্যা
এনডিটিভি
 
মহারাষ্ট্রের রাজস্বমন্ত্রী চন্দ্রকান্ত পাতিল জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত ওই রাজ্যে তিন মাসে ছয় শতাধিক কৃষক আত্মহত্যা করেছে। বিজেপি শাসিত ওই রাজ্যের বিধান সভায় বিরোধী দলীয় বিধায়কের এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি। এ রাজ্যে কৃষকদের আত্মহত্যা প্রবণতা সব থেকে বেশি। ক’দিন আগে দাবি আদায়ের মিছিলে নেমেছিলেন মহারাষ্ট্রের কৃষকেরা। মুম্বাইয়ের উদ্দেশে তাদের ডাকা লং মার্চে সংহতি জানিয়েছিল সারা ভারতের কৃষকসহ সচেতন জনতা।

সারা বিশ্বেই কৃষকরা বিপন্ন। তবে ভারতে এই বিপন্নতা অন্য অনেকের চেয়েই গভীর। ক্ষুদ্র কৃষকেরা সেখানে বাস করছেন দুর্যোগের কিনারায়। মহারাষ্ট্র সেই বিপন্নতার এক জীবন্ত দলিল। বিভিন্ন পরিসংখ্যান ও সংবাদমাধ্যমের খবর বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তীব্র খরা, বিপুল পরিমাণ ঋণের বোঝা, করপোরেট বাজার ব্যবস্থার উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে টিকতে না পারায় সেখানে আত্মহত্যায় প্ররোচিত হয় কৃষক। মহারাষ্ট্রে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ২৫ হাজারের বেশি কৃষক দেনার দায়ে আত্মহত্যা করেছেন। 

বিশ্লেষকেরা বলছেন, সুরক্ষার প্রশ্নে কার্যকর নীতি-পরিকল্পনার অভাব থাকার কারণেই সেখানে ক্রমাগত ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন কৃষকরা। তাদের মতে, দশকের পর দশক ধরে ঋণের বোঝা থাকা, খরা ও আয় কমে যাওয়া ভারতের গ্রামাঞ্চলে কঠোর প্রভাব ফেলেছে। রাজ্য বিধান পরিষদে বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পাতিল শনিবার জানিয়েছেন, ‘১ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে ৬৩৯ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। সরকারী বিবেচনায় ফসল নষ্ট, ঋণ ও ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের ব্যর্থতার ভিত্তিতে এদের মধ্যে ১৮৮ জনের পরিবারকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা প্রদান করা হয়েছে।’ পাতিল জানান, ‘আত্মহত্যা করা ১৮৮ কৃষকের মধ্যে ১৭৪ জনের পরিবার এরই মধ্যে ক্ষতিপূরণ পেয়েছে।’ তিনি জানিয়েছেন, আত্মহত্যাকারী ৩২৯ কৃষকের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে আর ১২২ জনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। 

বিরোধী নেতা ধনঞ্জয় মুণ্ডে রাজ্য বিজেপি সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বলেছেন, ঋণ মাফ, ফলন না হওয়ার জন্য ক্ষতিপূরণ, শস্য ঋণ বা ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের মতো সরকার পরিকল্পনাগুলো ব্যর্থ হওয়ার কারণেই কৃষকেরা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন। বিজেপি সরকারের নির্লিপ্ত আচরণ এবং মিথ্যা আশ্বাস কৃষকদের আত্মহত্যার দিকে বার বার ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী নেতারা। মুন্ডে অভিযোগ করেছেন, গত ৪ বছরে রাজ্যে ১৩ হাজার কৃষক আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। কিন্তু গত এক বছরেই ১৫০০জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন।

এ বছর মার্চ মাসেই কৃষক বিক্ষোভে শুধু মহারাষ্ট্রই নয়, কেঁপে উঠেছিল গোটা দেশই। কৃষকরা এক সপ্তাহ ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হেঁটে এসে অবস্থান করেছিলেন মুম্বাইয়ে। ১০ হাজার কৃষক নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে পথ হাঁটা শুরু করেছিলেন। সেই মিছিল যখন অবশেষে মুম্বাইয়ে এসে পৌঁছেছিল তার সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ৪০ হাজার।

চাকচিক্যের মুম্বাই শহরের এই অগণিত মানুষ তাই পুষ্পবৃষ্টিতে সাদর অভ্যর্থনা জানায় তাদের। তৃষ্ণা আর অভুক্ত জীবনের ধারাবাহিকতা ঘোচে ছাত্রদের তুলে দেয়া পানি কিংবা বিস্কুটের প্যাকেটে। কৃষকদের নিদারুণ অবস্থা বিজেপি সরকারকে সেদিন বেশ বেকায়দায় ফেলেছিল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ জানিয়েছিলেন, সম্পূর্ণ কৃষি ঋণ মওকুফ, এম এস স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন, বনাঞ্চলের অধিকার প্রশ্নে কৃষকদের সব দাবিই তার সরকার মেনে নেবে। তা সত্ত্বেও সেই মার্চ থেকে মে পর্যন্ত কৃষক আত্মহত্যার এমন ভয়াবহচিত্র।


আরো সংবাদ



premium cement