২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বারান্দায় সবুজের ছোঁয়া ইন্টেরিয়র

-

প্রচণ্ড রোদে প্রাণ যখন যায় যায় অবস্থা, তখন সবুজ গাছের ছায়ায় কে না ঠাঁই চায়! সবুজের নিচেই যেন সব প্রশান্তি। ঠিক তেমনি হাঁসফাঁস করা গরমে স্বস্তি পেতে বাড়ির বারান্দায় সবুজের আস্তানা গড়ে তোলেন অনেকেই। ব্যস্ততম দিনের এক ফাঁকে কয়েক মিনিটের জন্য হলেও সবুজ বারান্দায় গিয়ে উঁকি দিতে পারেন। মন-প্রাণ জুড়িয়ে যাবে নিঃসন্দেহে। শহুরে বাড়িতে ছোট্ট বারান্দা, এত গাছ লাগানোর জায়গাইবা কই? এমন প্রশ্ন যাদের মনে, তাদের জন্য রয়েছে কিছু সমাধান। মেনে চলুন সেসব কৌশল আর বারান্দা করে তুলুন সবুজের আঁধার।
ঘরময় খেলা করুক বিশুদ্ধ বাতাস, এমন চাওয়া সবারই। তাই তো বিশুদ্ধ বাতাসের ব্যবস্থা করতে অনেকেই বারান্দা ভরে ফেলেন গাছ লাগিয়ে। কিন্তু পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে যারা গাছ লাগানোর শখটিকে পাত্তা দিচ্ছিলেন না, তারা কিন্তু এবার একটু নড়েচড়ে বসতে পারেন। ছোট্ট বারান্দায় একটা বড় কিংবা মাঝারি পাত্রে কয়েক ধরনের গাছ লাগাতে পারেন। এতে জায়গা কম লাগবে, আবার শখের গাছগুলো স্থান খুঁজে পাবে এক চিলতে বারান্দায়। সে ক্ষেত্রে বেছে নিন হার্বজাতীয় উদ্ভিদ। বড় আকৃতির পাত্র হলেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে গাছ না লাগিয়ে আলাদাভাবে ভাগ করে ভিন্ন ভিন্ন গাছ লাগান। বারান্দার এক কোণে রেখে দিতে পারেন বড় টব বা পাত্রটি।
বড় আকৃতির পাত্র বা টব রাখার জায়গা না থাকলে সে ক্ষেত্রে দেয়ালকে কাজে লাগাতে পারেন। বারান্দার এক পাশের দেয়ালে বেশ কয়েকটি হুক লাগিয়ে নিন। খুব ভালো হয় যেদিকে রোদ পড়ে, সেদিকের দেয়াল বেছে নিলে। দেয়ালে হুক ঠিক ততটাই লাগাবেন, যতটা ছোট টব ঝোলাতে চান। দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখার জন্য ছোট ছোট টব নির্বাচন করাই ভালো। হুকগুলো এমনভাবে লাগান, যাতে পাশাপাশি দুটো হুকের মাঝখানে যথেষ্ট জায়গা থাকে। এবার আসা যাক সৌন্দর্যের কথায়। দেয়ালে ঝোলানোর ক্ষেত্রে রঙিন, নকশা করা টব বেছে নিলেই ভালো। এতে দেখতে ভালো লাগবে। মাটি, চীনামাটি, পটারি, ধাতব, প্লাস্টিকের বিভিন্ন পাত্র পাওয়া যায়। এ ছাড়া বোতল কেটে বাড়িতেও তৈরি করে নিতে পারেন আকর্ষণীয় পাত্র। প্লাস্টিকের বোতল কেটে এর বাইরের অংশ পরিষ্কার করে রঙ-তুলিতে এঁকে নিতে পারেন পছন্দসই নকশা। এবার সেখানে মানিপ্লান্ট, পাতাবাহারের মতো গাছ রাখতে পারেন অনায়াসে।
পুরো বারান্দায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে টব রাখার জায়গা নেই বলে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। বেশ কয়েকটি টব রাখতে পারবেন অল্প জায়গাতেই। বাড়িতে পুরনো কোনো বুক শেলফ থাকলে সেটি কাজে লাগাতে পারেন। অথবা বুক শেলফের আদলে তক্তা দিয়ে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন প্লান্ট শেলফ। কয়েকটি তাকসহ শেলফে রাখতে পারবেন বাহারি গাছ। নিজে বানিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন পর পর দুটো তাকের মাঝামাঝি স্থানে যাতে যথেষ্ট জায়গা থাকে। অন্যদিকে ক্যাকটাস, পাথরকুচি, পাতাবাহার, মানিপ্লান্টের মতো গাছগুলো যেমন সেখানে রাখতে পারবেন; তেমনি রাখতে পারেন গুল্ম, লতানো উদ্ভিদগুলোও। প্লান্ট শেলফটি আরো খানিকটা আকর্ষণী করে তুলতে দু-একটি গাছের ফাঁকে রাখতে পারেন বিভিন্ন শোপিস, টেরাকোটার নকশা করা মূর্তি কিংবা শৌখিন কোনো কিছু। এছাড়া শেলফের একটি তাকে ছোট একটা কাচের জারে দুটো গোল্ডফিশ রেখে দিলেও কিন্তু ভালো লাগায় ছেয়ে যাবে।
আলাদা একটি শেলফ রাখার মতো জায়গা নেই বলে গাছ রাখা যাবে না বারান্দায়, তা কিন্তু নয়। কেননা বারান্দার গ্রিলে দড়ি দিয়ে আটকে ছোট ছোট টব ঝুলিয়ে দিতে পারেন। মানিপ্লান্ট রাখতে পারেন সেখানে। মানিপ্লান্টের লতা গ্রিল বেয়ে তরতর করে উপরের দিকে উঠে যাবে। দেখতে ভালো লাগবে আবার সবুজের সান্নিধ্যও খুঁজে পাওয়া যাবে আপনার এক চিলতে বারান্দায়।
অনেকেরই ছোট ফ্ল্যাট বা বাসার বারান্দায় বাগান করার ইচ্ছা থাকে। কিন্তু বাগান মানে দুই-তিনটা টবে এলোমেলোভাবে গাছ লাগানো নয়। পরিকল্পনা করে নিজের ইচ্ছামতো শৈল্পিকভাবে গাছ লাগাতে হবে। তবেই বারান্দায় বাগান বোঝা যাবে। বারান্দায় বাগান করার কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। নার্সারি থেকে টবের গাছ বাসায় আনার পর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়। এর প্রধান কারণ, গাছটি সঠিক পরিবেশ ও যতœ কোনোটিই পায় না। এ জন্য অনেক সময় গাছের পাতা হলুদ হয়ে পড়ে, পাতা ঝরে যায় বা গাছটিই মরে যায়।

 


আরো সংবাদ



premium cement