০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সতেজ ত্বকের কথা

রঙের ঝলক
-

ঈদে টানা কয়েক দিনের হইহুল্লোড় আর দাওয়াতের লম্বা তালিকা শেষ করতে করতে অনেকেই ত্বকের দিকে নজর দিতে ভুলে যান। ফলাফল, উৎসবের আমেজ শেষ হতে-না-হতেই নিস্তেজ হয়ে যায় ত্বক, দেখায় প্রাণহীন। ক্লান্ত সুস্থ ত্বকের জন্য তাই ঈদ-পরবর্তী পরিচর্যা খুব জরুরি। জীবনযাত্রার হেরফেরেই হোক কিংবা অনিয়ন্ত্রিত খাবার খাওয়ার ফলাফলÑ এ সময় শরীরে প্রচুর দূষিত পদার্থ জমে, যা সরাসরি ফুটে ওঠে চেহারায়। তাই দূষণ দূর করার জন্য প্রচুর পানি পান করা প্রয়োজন। শুধু পানিতে স্বাদ না পেলে তৈরি করে নেয়া যেতে পারে মজাদার সব ডিটক্সিফায়িং পানীয়। এগুলো শরীরের পানির ঘাটতি দূর করবে। ত্বককে পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করবে। যত কষ্টই হোক, ত্বকের পরিচর্যায় সিটিএম পদ্ধতি ভুলে গেলে চলবে না। চেষ্টা করবেন প্রাকৃতিক পণ্য ব্যবহার করতে।
ঈদের পরের কয়েক দিন চেষ্টা করুন মেকআপমুক্ত থাকতে। এতে ত্বক অক্সিজেন নেয়ার সুযোগ পাবে। সকালে সানস্ক্রিন আর রাতে হায়ালুরনিক অ্যাসিড যুক্ত রিজুভিনেটিং নাইট সেরাম মাখতে পারলে দেখবেন ত্বক আস্তে আস্তে তার আগের রূপে ফিরে যাচ্ছে। ঈদের পরপর একটা ফেসিয়ালও সেরে নিতে পারেন ভালো কোনো পার্লার থেকে। শরীরের ত্বকের যতœ নিতে ভুলে গেলে চলবে না।
ত্বককে কোমল ও আর্দ্র রাখতে ময়েশ্চারাইজার খুবই কার্যকর। বিশেষ করে গরমের দিনে ত্বকের জন্য এটি খুবই প্রয়োজনীয়। তবে গরমের সময় ত্বকের জন্য ওয়াটারবেজ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
প্রতিদিন অন্তত দু’বার মুখ ও হাত-পায়ের ত্বক পরিষ্কার করুন। এমনকি যদি বাইরে বের না হন বা ত্বক পরিষ্কার আছে মনে হয় তবুও।
ত্বকে এক্সফোলিয়েট করবেন। এর মধ্য দিয়ে ত্বকের মরা কোষ ঝরে যায়, ত্বকে রক্তসঞ্চালন বাড়ায়। বাজারে অনেক ধরনের স্ক্রাবিং ক্রিম পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন অথবা ঘরেও তৈরি করে নিতে পারেন। এর জন্য চার-পাঁচ টেবিল চামচ বেসন, এক চা চামচ হলুদ বাটা, পাঁচ-ছয় ফোঁটা গোলাপজল ও দুই চামচ দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা পর হালকাভাবে ঘষে তুলে ফেলুন।
পেঁপের মধ্যে রয়েছে ত্বককে চকচকে করার অনন্য উপাদান। দুই টেবিল চামচ পাকা পেঁপের কাথ নিন। এর সাথে এক চা চামচ মধু ও একটি ডিমের সাদা অংশ ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন। মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট। এরপর ধুয়ে ফেলুন। ত্বক চকচকে হয়ে উঠবে।
এক কাপ শসা কুরিয়ে নিন। এর সাথে এক টেবিল চামচ টকদই মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। এরপর ধুয়ে নিন। দেখুন ত্বক কত ঠাণ্ডা আরামদায়ক হয়ে ওঠে।
কয়েকটি কার্যকরী মাস্ক
শুষ্ক ত্বকের জন্য শসার মাস্ক
শসা কুরিয়ে নিন। এর সাথে এক কাপ ওটমিল ও এক টেবিল চামচ টকদই মিশিয়ে নিন। কয়েকবার মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন।
মধুর মাস্ক (সব ত্বকের জন্য) : দুই চা চামচ মধু নিয়ে মুখের ত্বকে হালকা করে মেখে নিন। ১০ মিনিট পর প্রথমে হালকা গরম পানি ও পরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
দইয়ের মাস্ক (তৈলাক্ত ত্বকের জন্য) : দুই টেবিল চামচ টকদই ফেটে মুখে লাগিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
কলার মাস্ক (অ্যান্টিএজিং) : পাকা কলা চটকে নিন। এর সাথে অল্প মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট। এবার ধুয়ে নিন। ত্বককে নরম পেলব করতে এই মাস্ক খুবই কার্যকর।
ওটমিল মাস্ক (তৈলাক্ত ত্বকের জন্য) : দুই টেবিল চামচ ওটমিলের সাথে এক চিমটি লবণ ও অল্প পানি দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। মুখে সার্কুলার মুভমেন্টে লাগান। এরপর শুকাতে দিন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
লেবুর রসের মাস্ক (সব ত্বকের জন্য) : এই মাস্ক ত্বকের দাগ দূর করতে সাহায্য করে। লেবুর রসের সাথে ডিম ফেটে নিন। এরপর মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে কিছুটা শক্ত হয়ে যাবে। সারা রাত এভাবে রেখে দিন। সকালে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
নিয়মিত যতœ ত্বককে ভালো রাখার প্রথম কথা। এ সময়ে সজীব থাকতে এবং ত্বককে ভালো ও সুন্দর রাখতে প্রতিদিন নিয়ম করে পরিচর্যা করা খুবই জরুরি।
পোশাক : বিশ্বরঙ, মেকআপ : পারসোনা


আরো সংবাদ



premium cement