২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ট্রেনে জন্ম নেয়া শিশুটির নাম রাখা হলো 'লালমনি’

ট্রেনে জন্ম নেয়া শিশুটিকে কোলে নিয়ে ‘লালমনি’ নাম রাখলেন ডিসি - ছবি : ইউএনবি

ঢাকা- লালমনিরহাট পথে আন্তঃনগর ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনে জন্ম নেয়া শিশুর নাম রাখা হয়েছে লালমনি।

জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আবু জাফর কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের তেঁতুলিয়ায় সোমবার হঠাৎ করেই শিশুটির বাড়িতে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী নিয়ে হাজির হয়ে তার নামকরণ করেন।

শিশুটির জন্য পোশাক, প্রসাধনী, শীতের কম্বল ও তার পরিবারের জন্য শুকনো খাবারসহ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। শিশুটকে নিজ হাতে কোলে নিয়ে জেলা প্রশাসক শিশুটির নাম রাখেন ইব্রাহীম হোসেন ‘লালমনি’।

এদিকে জেলা প্রশাসকের দেয়া নামে সম্মত হওয়া শিশুটির বাবা ছকমাল হোসেন বলেন, ‘ছেলে লালমনিকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে রেলের চাকরিতে যোগদান করাতে চাই। সকলের কাছে আমার সন্তানের জন্য দোয়া চাচ্ছি।’

চলবলা ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু বলেন, ‘আমার ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। প্রসূতী নবিয়া ও তার নবজাতক সুস্থ আছে।’

জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিশুটিকে সব সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে। শিশুটির জন্য সবার কাছে দোয়া চান তিনি।

এসময় লালমনিরহাট এডিসি জেনারেল রফিকুল ইসলাম, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হাসান, কালীগঞ্জ উপজেলা পিআইও কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ, চলবলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু ও কালীগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি আমিরুল ইসলাম হেলালও উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, গত ২৪ নভেম্বর রাতে রাজধানীর কমলাপুর থেকে উত্তরবঙ্গের লালমনিরহাটগামী ‘লালমনি এক্সপ্রেসে’ করে নবিয়া ও তার স্বামী ছকমাল মিয়া বাড়ি যাচ্ছিলেন। কিন্তু ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই নবিয়ার প্রসব বেদনা ওঠে। ঘটনা জানাজানি হতে ট্রেনটি শহর থেকে অনেক দূরে চলে যাওয়ায় গভীর রাতে আশপাশে থামার মতো কোনো রেলস্টেশন ছিল না। ফলে নবিয়া ট্রেনেই সন্তানের জন্ম দেন।

ট্রেনটিতে কোনো চিকিৎসক না থাকায় অন্য নারী যাত্রীদের সহায়তায় নবিয়া সন্তানের জন্ম দিলেও তার রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছিল না। পরে সকাল ৭টার দিকে ট্রেনটি বগুড়া স্টেশনে থামলে নবিয়া ও তার স্বামী সেখানে নামেন। সেখান থেকে জরুরি সেবা নম্বর (৯৯৯) ফোন করে বিষয়টি বগুড়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়া হয়। পরে স্টেশন অফিসার আকরামুল হাসানের নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল রেলস্টেশন থেকে প্রসূতি ও নবজাতককে নিয়ে গিয়ে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেন।

প্রসূতী নবিয়ার স্বামী ছকমাল মিয়া পেশায় দিনমজুর। রাজধানীতে রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজ করেন। অপরদিকে পোশাক শ্রমিক নবিয়া সন্তান পেটে আসার পর আর কাজে যাননি। এই দম্পতির আগেও তিনটি ছেলে সন্তান আছে। নবিয়া অন্তঃসত্ত্বা হলেও চিকিৎসকের কাছে না যাওয়ায় সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সম্ভাব্য সময় অজানা ছিল এই দম্পতির।
সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement