২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্ত্রীকে মারপিট : জামিন নামঞ্জুরের পর কারাগারে হিরো আলম

আটকের পর বৃহস্পতিবার হিরো আলমকে আদালতে নেয়া হয় - নয়া দিগন্ত

স্ত্রীকে নির্যাতন ও যৌতুক মামলায় বগুড়া সদর থানা পুলিশের হাতে বুধবার গ্রেফতার হন আলোচিত অভিনেতা আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। স্ত্রী সাদিয়া আক্তার সুমির দায়েরকৃত মামলায় আটকের পর বৃহস্পতিবার হিরো আলমের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় হিরো আলমকে বগুড়ার সদর আমলী আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আহমেদ শাহরিয়ার তারিক শুনানী শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর হিরো আলমকে আদালতের হাজতখানায় কিছু সময় রেখে দুপুর ২টায় বগুড়া কারাগারে নেয়া হয়।

এদিকে হিরো আলমকে দেখতে উৎসুক জনতা সকাল থেকেই সদর থানা ও আদালত চত্বরে ভিড় করেন। এসময় জনতা সামলাতে পুলিশকে বেগ পেতে হয়।
এর আগে বুধবার সাড়ে ১০টায় বগুড়ার কবি নজরুল ইসলাম সড়ক থেকে তাকে গ্রেফতার করে সদর থানা পুলিশ।

বুধবার রাত ১১টায় থানায় হিরো আলম সাংবাদিকদের জানান, পুলিশ মামলা আপোষের কথা বলে তাকে থানায় ডেকে নেয়।

এর আগে হিরো আলমের বিরুদ্ধে স্ত্রী সুমিকে ২ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে মারপিটের অভিযোগে থানায় এজাহার দাখিল করেন তার শ্বশুর সাইফুল ইসলাম। তবে স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করার কথা অস্বীকার করেছেনে হিরো আলম।

আরো পড়ুন : স্ত্রী নির্যাতন মামলায় হিরো আলম গ্রেফতার

বহুল আলোচিত আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমকে স্ত্রী সাদিয়া আক্তার সুমিকে নির্যাতন মামলায় সদর থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় বগুড়া সদর থানার সামনের সড়ক কবি নজরুল ইসলাম সড়ক থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান ওসি এসএম বদিউজ্জামান । । এরপর তাকে থানার এসআইদের রুমে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।

রাত ১১টায় থানায় হিরো আলম সাংংবাদিকদের জানান, পুলিশ মামলা আপোষের কথা বলে থানায় ডেকে নেয়।
এর আগে হিরো আলমের শ্বশুর বগুড়া সদরের এরুলিয়া ইউনিয়নের এরুলিয়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম তার কন্যা সাদিয়া আক্তার সুমিকে মারপিটের অভিযোগে থানায় হিরো আলমের বিরুদ্ধে এজাহার দাখিল করেন।


আগের খবরে বলা হয়, স্ত্রীকে ব্যাপক মারধর করেছেন হিরো আলম। ফলে আহত স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৮টায় বগুড়া সদরের এরুলিয়া ইউনিয়নের এরুলিয়া গ্রামের হিরো আলমের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

হিরো আলমের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার সুমি জানান, মাঝেমধ্যেই হিরো আলম তাকে মারধর করে। দুদিন আগে সে ঢাকা থেকে আসে। রাতে খাবারের পর মোবাইলে কোনো মেয়ের সাথে কথা বলছিল। আমি নিষেধ করলে বলে আমি ১০টা মেয়ে নিয়ে ঘুরবো, যা ইচ্ছে তা-ই করবো। আমি ঢাকায় বিয়ে করেছি। এভাবে থাকতে পারলে থাকো না হলে চলে যাও। এর এক পর্যায়ে আলম আমার গলা চেপে ধরে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করে জখম করে। এখন আমার ৩ ছেলে মেয়ে নিয়ে কোথায় যাবো?


হিরো আলমের শ্বশুর জানান, আশরাফুল হোসেন আলম থেকে হিরো আলম হয়ে যাওয়ার পর থেকেই হিরো আলমের আচার-ব্যবহার পরিবর্তন হয়ে যায়। সে মাঝেমধ্যেই বাড়িতে অশান্তি করে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার পারিবারিকভাবে বিচার করা হলেও হিরো আলম ইদানিং আমার মেয়ের সাথে বেশি দুর্ব্যবহার করছে এবং তাকে মারধর করছে।


বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল আজিজ মন্ডল বলেন, মঙ্গলবার হিরো আলমের মারধরের পর রাত ৯টায় আহত অবস্থায় তার স্ত্রীকে ভর্তি করায় তার পরিবারের লোকজন। সে সময় তার মাথা থেকে রক্ত ঝরছিল। শুনেছি হিরো আলম কারণে-অকারণে প্রায় তার স্ত্রীকে মারধর করতো।

তবে মারধরের এ অভিযোগ অস্বীকার করে হিরো আলম বলেন, দু’চারটা চড় থাপ্পড় মেরেছি। কিন্তু এর জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে- এটি এমন কোনো বিষয় নয়। সংসার করতে গেলে ঝগড়া বিবাদ হবেই। কাজের সুবাদে আমাকে বাইরে যেতে হয়। আমি ১০ দিন, ১৫ দিন পরপর বাড়িতে আসি। আমি বিয়ে করেছি বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

স্ত্রীর অভিযোগের ব্যাপারে হিরো আলম বলেন, তার স্ত্রীই পরকীয়ায় জড়িত। তার স্ত্রী তার কোনো কথা শোনে না। এ বিষয়টি নিয়েই মূলত ঝগড়াঝাটি হয়। সম্প্রতি তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার ডিসের ব্যবসা তার স্ত্রীর নামে লিখে দিতে বলেন। তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে মারধর করে। তাকে ফাঁসাতেই আহত হওয়ার নাটক করে স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে দাবী করেন হিরো আলম।

বগুড়া সদর থানার এস আই আব্দুর রহিম জানান, মারপিটের অভিযোগে বগুড়া সদর থানায় শ^শুরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে হিরো আলম। সে অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারি তার স্ত্রী হিরো আলমের মারপিটে আহত হয়ে শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement