২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অ ভি ম ত : নতুন প্রশ্ন ও প্রাথমিক সমাপনী

-

ক’দিন পরেই দেশব্যাপী শুরু হতে যাচ্ছে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা। পরীক্ষায় সবার সফলতা কমান করছি। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (ঘঅচঊ)-এর সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শতভাগ যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্নের পাশাপাশি এবার সব ধরনের গঈছ টাইপ প্রশ্ন তুলে দেয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন করা হয়েছে সংযোজন। বলা যায়, নতুন প্রশ্ন কাঠামোতে এবার প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে এ সিদ্ধান্তটি খুব স্বল্প সময়ে নেয়া হয়েছে! ইতোমধ্যে বিদ্যালয়গুলোতে নানা প্রস্তুতিমূলক মূল্যায়ন সম্পন্ন হয়েছে। চলছে রিভিশন। বাতলে দেয়া হচ্ছে পরীক্ষায় ভালো মার্কস পাওয়ার কলাকৌশল।
পরীক্ষায় অ+ পেতে হলে ছয়টি বিষয়ের (বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, প্রাথমিক বিজ্ঞান এবং ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা) প্রত্যেকটিতে আলাদাভাবে ৮০ নম্বর বা তারও বেশি নম্বর পেতে হবে। এ জন্য কঠোর পাঠ, অনুশীলন ও পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলোর ব্যাপারে বেশি যতœবান হতে হবে। কারণ, এখানে সব শুদ্ধ উত্তরের জন্য তেমন নম্বর কাটার সুযোগ থাকে না যা পরীক্ষক দিতে বাধ্য থাকেন।
রচনামূলক প্রশ্নগুলোর পাশে দেয়া পূর্ণমান দেখে তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে উত্তর লিখতে হয়। এখানে বেশি বা কম লেখার সুযোগ থাকবে না। খেয়াল রাখতে হয় সময়ের দিকেও। একটা কথা মনে রাখতে হবেÑ পরীক্ষার খাতায় যা লিখবে তার মধ্যে যতটুকু শুদ্ধ হবে ততটুকুতে অবশ্যই নম্বর পাবে। এক লাইন সঠিক হলেও তাতে নম্বর পাবে। তাই যা লিখবে, তা যেন সঠিক ও শুদ্ধ হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এবারে যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন থাকবে ১০০ নম্বরের। প্রতি বিষয়ের জন্য যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্নের উত্তর প্রশ্নে দেয়া তথ্যের আলোকে লিখতে হবে। যথাযথ উত্তর হলে পূর্ণ নম্বর পাওয়া যাবে। কখনোই প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া চলবে না। অবশ্য, একটু বুঝে লেখার চেষ্টা করতে হবে। প্রশ্ন কর্তারা পরীক্ষার উপযোগী প্রশ্ন তৈরি করার চেষ্টা করেন।
পরীক্ষায় প্রত্যেক বিষয়ে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো প্রশ্নের উত্তর যেন বাদ না পড়ে, সে দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। ভালো রেজাল্ট করতে প্রত্যেক প্রশ্নের উত্তর সঠিক ও যথাযথ হওয়া চাই। মেধাবীদের অবশ্য আরো ভালো করতে হবে। কারণ, এ পরীক্ষা থেকেই প্রাথমিক বৃত্তি প্রদানের জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়। অবশ্য অনেকে মনে করেন, আগের নিয়মে আলাদাভাবে বৃত্তি পরীক্ষা চালু করলে মেধাবীদের সহজে যাচাই করার সুযোগ থাকত। অথচ এখন সব ছাত্রের উপযোগী করে প্রশ্ন তৈরি করতে হয়। খেয়াল রাখতে হয় সব দিকেই।
পরীক্ষা ঘনিয়ে আসার পর প্রস্তুতির গতি আরো বাড়াতে হবে। ভালোভাবে আয়ত্ত করতে প্রচুর অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। রিভিশনের পালা চালু রাখতে হবে। আগের সাময়িক পরীক্ষা ও মডেল টেস্টের প্রশ্নগুলো বারবার দেখা যেতে পারে। করা যেতে পারে পুনর্মূল্যায়ন। ফলে ছোটখাটো ভুল সংশোধন করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
বাদ দিতে হবে খেলাধুলা, টিভি দেখা, বেড়ানো ইত্যাদি। এ ব্যাপারে অভিভাবকের সচেতনতা জরুরি। সন্তানের জীবন সঠিক ও সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে মা-বাবা অভিভাবকের ভূমিকা অপরিসীম। সে জন্য জীবনের প্রতি পদক্ষেপে, সন্তানের শিক্ষাগ্রহণ যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
শিক্ষার্থীদের সমাপনী পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে যেন কোনো ধরনের ঘাটতি না থাকে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সচেতনতা জরুরি। পরীক্ষার্থীর ঘুম, স্বাস্থ্য ইত্যাদির প্রতিও নজর দিতে হবে।
প্রথমবারের মতো নতুন প্রশ্নপত্রের আলোকে যেহেতু পরীক্ষার্থীদের উত্তর দিতে হবে, সেহেতু শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে হবে। পরীক্ষকদেরও এ ব্যাপারে অত্যধিক কঠোরতা পরিহার করা উচিত। শিক্ষার্থীদের বলব, ভালোভাবে পড় এবং সুন্দরভাবে পরীক্ষা দাও আর পড়ালেখার পাশাপাশি মহান আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো। দেখবে সফল হতে পেরেছ। হ
লেখক : শিক্ষক


আরো সংবাদ



premium cement