২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জামিন নিতে হাইকোর্টে শত শত মানুষের ভিড়

জামিন নিতে হাইকোর্টে শত শত মানুষের ভিড় - ছবি : সংগ্রহ

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় দায়ের করা নাশকতার মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, হানিফ পরিবহনের মালিক কফিল উদ্দিনসহ কয়েক শ’ বিএনপি ও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার তারা হাইকোর্টের বিভিন্ন বেঞ্চে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। 

এ ছাড়া নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জামিন নিতে গতকাল হাইকোর্টের কয়েকটি বেঞ্চে হাজির হন শত শত বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মী। এ কারণে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ, হাইকোর্টে এনেক্স ভবন ও সুুপ্রিম কোর্ট বার ভবনে জামিন প্রার্থনাকারী মানুষের ভিড় দেখা যায়। সুপ্রিম কোর্টে জামিন নিতে আসা শত শত মানুষের মধ্যে কয়েক শ’ বিএনপি নেতাকর্মী জামিন পেলেও অনেকেই জামিনের জন্য অপেক্ষা করছেন। জামিন প্রার্থনাকারী ও তাদের আইনজীবীদের অভিযোগ- এসব গায়েবি ও কাল্পনিক মামলার সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে এসব মামলা করেছে পুলিশ।

শওকত মাহমুদের জামিন : রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দায়ের করা নাশকতার ১০ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল হাইকোর্টে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। 
শওকত মাহমুদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সোহরাব হোসেন। তিনি বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন থানায় গত কয়েক মাসে শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে ১০টি নাশকতার মামলা দায়ের করে পুলিশ। গতকাল এসব মামলায় তিনি পৃথক দশটি আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। 
অন্য দিকে রাজধানীর দারুস সালাম থানায় দায়ের হওয়া ১৫টি নাশকতার মামলায় হানিফ পরিবহনের বর্তমান মালিক বিএনপি নেতা কফিল উদ্দিনকে ৬ সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট বলে তার আইনজীবী জানিয়েছেন। 

এ ছাড়া ঢাকার ৩০ জন, ঠাকুরগাঁওয়ের ১০০ জন, রংপুরের ৭০ জন, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানার ৮০ জন, ভৈরব থানার ৪৬ জন এবং কুমিল্লা দক্ষিণ সদর থানার ২৩ ও মুরাদনগর থানায় শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী নাশকতার মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। 
বিএনপি নেতাদের পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি জয়নুল আবেদীন, বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন, মাসুদ রানা, গাজী কামরুল ইসলাম সজলসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী। 

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের গায়েবি ও কাল্পনিক মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এসব মামলায় পুলিশের হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে বিএনপি নেতাকর্মীরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা যাতে মাঠে নামতে না পরে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও ভীতি সঞ্চার করার জন্য এসব মামলা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমার চেম্বার থেকে গতকাল প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জন বিএনপি নেতাকর্মীর জামিন করানো হয়েছে। 
এ বিষয়ে আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন বলেন, সোমবার হাইকোর্ট থেকে নাশকতার মামলায় জামিন নিতে শত শত বিএনপি নেতাকর্মী আসেন। তাদের মধ্যে সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, হানিফ পরিবহনের মালিক কফিল উদ্দিনসহ কয়েক শ’ নেতাকর্মী নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা গায়েবি মামলায় জামিন পান। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ঠাকুরগাঁওয়ের ১০০ জন, রংপুরের ৭০ জন এবং ঢাকার ৩০ জনসহ ২০০ নেতাকর্মীর জামিন করিয়েছি। 

আইনজীবী মাসুদ রানা জানান, তিনি ঢাকা, বগুড়া, নেত্রকোনাসহ বেশ কয়েকটি থানায় দায়ের করা নাশকতার মামলায় তিন শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীর জামিন করিয়েছেন। 
আইনজীবী গাজী কামরুল ইসলাম সজল জানান, দোহার ও নবাবগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া পৃথক নাশকতার ৪ মামলায় বিএনপি নেতা খন্দকার আশরাফ, আব্দুর রহিম মিয়া, শাহাবুদ্দীনসহ ২৫০ জন এবং বরিশাল জেলার গৌরনদী থানার ২ মামলায় ৬০ জন বিএনপি নেতাকর্মীর জামিন আবেদন করা হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) জামিন শুনানি হতে পারে।
আইনজীবীরা জানান, গত সেপ্টেম্বর থেকে দেশের বিভিন্ন থানায় বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রায় ৪ হাজার মামলা দায়ের করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে লাখ লাখ বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে। সম্প্রতি এসব মামলার তদন্ত করতে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিট আবেদনে ‘গায়েবি ও কাল্পনিক’ এসব মামলা যারা দায়ের করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়। প্রবীণ আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া এ রিট দায়ের করেন।

আইনজীবীরা জানান, ১০ বছর আগে মারা গেছেন এমন লোকদেরও এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে। ২০০৭ সালে মারা গেছেন, কিংবা চলতি বছর হজে ছিলেন, বিদেশে থাকেনÑ এমন লোকদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
খালেদা জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা আটক জীবন্ত মানুষকে গণকবর আগ্রাসন ও যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃষ্টির জন্য সারা দেশে ইসতিস্কার নামাজ আদায় আরো ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট তাপপ্রবাহ মে পর্যন্ত গড়াবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকার ভূমিকা চায় যুক্তরাষ্ট্র বিদ্যুৎ গ্যাসের ছাড়পত্র ছাড়া নতুন শিল্পে ঋণ বিতরণ করা যাবে না মিয়ানমারে ফিরল সেনাসহ আশ্রিত ২৮৮ জন

সকল