১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা

বুধবার আবারো কারাগারে বসবে খালেদা জিয়ার বিচারের আদালত, চিকিৎসার রিটের শুনানি হয়নি

বেগম খালেদা জিয়া - সংগৃহীত

ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় করাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বিরুদ্ধে দুদকের করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর পুরোনো কেন্দ্রীয় করাগারে স্থাপিত এই আদালতে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে করে আনা হয়। ওই দিন শুনানি শেষে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোঃ আখতারুজ্জামানের আদালত ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের শুনানির তারিখ ধার্য করেন।

তবে ওই দিন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে তার গুরুতর অসুস্থতার কথা তুলে ধরে বলেছিলেন, আমার শারীরিক অবস্থা ভালো না। আমার ফুলা পায়ে পুজ এসেছে। আপনাদের যা মনেচায় যতদিন ইচ্ছা সাজা দিতে পারেন, আমি অসুস্থ, এ অবস্থায় বার বার আসতে পারব না। আমার বাম হাত প্যারালাইজড, বাম পায়ে প্রচ- ব্যাথা। এভাবে বসে থাকলে আমার পা ফুলে যাবে। ডাক্তারের রিপোর্ট দেখলে আপনা বুঝবেন আমি কতটা অসুস্থ। ন্যায়বিচার এখানে হবে না। এখানে আমি ন্যায় বিচার পাব না। সরকারের ইচ্ছায় এখানে বিচার হচ্ছে। আমার প্রতি অবিচার করা হচ্ছে।

গত ৫ সেপ্টেম্বর পুরোনো কেন্দ্রীয় করাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে খালেদা জিয়ার কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আজ বুধবার খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা থাকবেন কি না জানতে চাইলে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বুধবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার শুনানির তারিখ ধার্য রয়েছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর অসুস্থ খালেদা জিয়াকে জোর করে কারাগারে স্থাপিত আদালতে আনা হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় জোর করে তাকে কাঠগড়ায় হাজির করায় তার সাংবিধানিক ও আইনজী অধিকার ক্ষুন্ন করেছে। গত তারিখে তিনি বলেছেন, তিনি গুরুতর অসুস্থ আদালতে আসতে পারবেন না। এক্ষেত্রে বেগম খালেদা জিয়া আদালতে না থাকলে আইনজীবীদের যাওয়ার প্রয়োজন নেই বলে আমি মনেকরি।

এ দিকে বেগম খালেদা জিয়ার মামলার বিষয়ে পরামর্শ করতে গতকাল সুপ্রিম কোর্ট বারের কনফারেন্স রুমে আলোচনায় বসেন তার আইনজীবীরা। খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের সদস্য ব্যারিষ্টার জমির উদ্দিন সিরকার, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, আবদুর রেজাক খান, জয়নুল আবেদীন, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, মাহবুবউদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, বদরুদ্দোজা বাদল, কায়সার কামাল প্রমুখ এতে অংশ নেন।

বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা চেয়ে রিটর শুনানি হয়নি: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের যেকোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের ওপর গতকাল মঙ্গলবারও নট টু ডে (শুনানি আজ নয়) আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।

আদেশের পর আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, সরকার বেআইনীভাবে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রেখেছেন। তিনি সেখানে বিনা চিকিৎসায় রয়েছেন। চিকিৎসা পাওয়া তার সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার। সেই অধিকার থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সরকার তাকে বারবার বঞ্চিত করছে। এর প্রতিকার চেয়ে আমরা হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করি।

সেই রিট আবেদনটি আজ (মঙ্গলবার) হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ছিলো। আমরা আদালতকে জানিয়েছি, আজকের জন্য আমরা আবেদনটি পরিচালনা করতে চাই না। তখন আদালত এর কারণ জানতে চাইলেন। তখন সরকার পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছু উন্নতি হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তখন আমি বললাম, আমাদের বিএনপির প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সেটার পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে পাঁচজন ডাক্তারের নাম চাওয়া হয়েছিলো। সেই তালিকাও দেয়া হয়েছে।

কায়সার বলেন, যেহেতু সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে তাই আমরা আশা করছি, অন্যান্য অধিকার ক্ষুন্ন হলেও উনাকে সরকার চিকিৎসা দিবেন। সেই প্রত্যাশায় সরকারের পদক্ষেপ আমরা পর্যবেক্ষণ করছি এবং সময় নিচ্ছি। তবে আদালতকে জানিয়েছি, সরকার যদি খালেদা জিয়ার পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেন সেক্ষেত্রে হয়ত আমাদের এ মামলা পরিচালনা না করাও হতে পারে। তখন আদালত বলেন, আপনারা তো ইউনাইটেড হাসপাতালে তার চিকিৎসা করতে চাচ্ছেন বলে পত্র-পত্রিকায় দেখছি। জবাবে আমরা বলি, তার উপযুক্ত চিকিৎসা যেখানে নিশ্চিত হবে সেখানেই তার চিকিৎসার দাবি করছি। তার অসুস্থতা অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট যেখানে হবে সে ধরণের হাসপাতালেই তার চিকিৎসা চাচ্ছি।

এরপর আদালত খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, যেহেতু আপনারা বিষয়টি পদক্ষেপগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন সেক্ষেত্রে নট টু ডে থাকলো। তবে পরবর্তিতে মামলাটি কার্যতালিকায় থাকবে।

রোববার দেশের বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়। রিট আবেদনে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একটি বিশেষ বোর্ড গঠন করার নির্দেশনাসহ তার চিকিৎসাসেবা-সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সোমবার খালেদা জিয়ার আবেদনটি শুনানির প্রস্তুতির জন্য আরো সময় প্রয়োজন উল্লেখ করে হাইকোর্টের কাছে সময় আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে নট টু ডে আদেশ দেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ খালেদা জিয়াকে ৫ বছর কারাদন্ড প্রদান করে। রায় ঘোষণার পরই আদালত থেকে তাকে রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় করাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন তিনি সেখানেই আছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশের জন্য মনোনীত মার্কিন বিশেষ রাষ্ট্রদূত মিল আগে যেসব দায়িত্ব পালন করেছেন বান্দরবানে কেএনএফের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন বম উজিরপুরে বিশ্বনবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল তামিমের ব্যাটে বাংলাদেশের উড়ন্ত শুরু নাটোরে এক প্রার্থীর সমর্থককে মারপিট করায় অপর প্রার্থী গ্রেফতার বিশ্বকাপ দলে সুযোগ না পেয়ে অবসরে নিউজিল্যান্ডের ওপেনার কক্সবাজারে ৩ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ সরকারের জনসমর্থন শূন্যের কোঠায় : গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দস্যুর দখলে লক্ষ্মীপুরের দ্বীপ চর মেঘা, বিপাকে দেড়শতাধিক কৃষক রেলপথ উন্নয়নে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করল চার দেশ একাদশে ৩ পরিবর্তন, টসে হেরে ব্যাট করছে বাংলাদেশ

সকল