১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


আফগানিস্তানে ঐকমত্যের সরকার চায় যুক্তরাষ্ট্র

-

যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদ আফগানিস্তানে ঐকমত্যের সরকারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানির অভিষেক পিছিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত বুধবার পরপর বেশ কয়েকটি টুইট বার্তায় তিনি এ কথা বলেন। একই সাথে তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রেসিডেন্টের অভিষেক পিছিয়ে যাওয়াার ফলে প্রয়োজনীয় শলাপরামর্শ করার সুযোগ হবে। এতে আফগানিস্তানের জনগণের সর্বোচ্চ স্বার্থ প্রতিফলিত হবে এবং নতুন সরকার এগুলো রক্ষা করতে পারবে।
নির্বাচনে জয়ী আশরাফ গানির দ্বিতীয় মেয়াদে অভিষেকের কথা ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। তবে বুধবার আফগান প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ থেকে ঘোষণা করা হয়, এই অভিষেক অনুষ্ঠান এখন আগামী ৯ মার্চ হবে। প্রাসাদের ঘোষণায় বলা হয়, আফগানিস্তানে করোনাভাইরাসের গুজবের কারণে এই অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে একদিন আগে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছিল ভিন্ন কারণ।
ওয়াশিংটনের বিবৃতি ও সংবাদমাধ্যমের খবরে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল, ট্রাম্প প্রশাসন চাইছে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি যেন অভিষেক অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেন। কেননা তার অভিষেক তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে নির্বাচনী বিরোধ চাঙ্গা করতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি প্রচেষ্টা নস্যাত করতে পারে। কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তালেবানের শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের কথা আগামীকাল ২৯ ফেব্রুয়ারি। আশা করা যাচ্ছে, এতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে শান্তি ফিরে আসবে এবং আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্যের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাহারের পথ সুগম করবে। শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পাকিস্তানও উপস্থিত থাকবে। দুই বছর ধরে শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী জালমে খলিলজাদও বৃহস্পতিবারের অভিষেক অনুষ্ঠানে সমস্যা সৃষ্টি হবে বলে উল্লেখ করেছেন। যদিও আফগান সরকার করোনাভাইরাসকে এই বিলম্বের কারণ বলে বর্ণনা করেছে।
তিনি লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানির এই অনুষ্ঠান ৯ মার্চ পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। যেহেতু নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে, সুতরাং বিজয়ী হিসেবে ঘোষিত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি ও অন্য নেতারা নতুন সরকারকে ঐকমত্যের করা ও আফগান জনগণের আকক্সক্ষার প্রকিফলন ঘটানো নিশ্চিত করতে পারবেন। কাবুলে সরকারিভাবে এই অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেয়ার ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মরগান অরতাগুস আফগান প্রেসিডেন্টের অভিষেক পিছিয়ে দেয়ার জন্য দেশটির সরকারকে ধন্যবাদ জানান। এই নির্বাচন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর ওপর সুবিধাজনক অবস্থান করে দিয়েছে। আবদুল্লাহ নির্বাচনী ফল মেনে নিতে অস্বীকার করেছেন এবং নিজের স্বার্থ রক্ষায় রাজধানী কাবুলের বিভিন্ন স্থানে নিজস্ব বাহিনী মোতায়েন করেছেন। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে সংবাদ ব্রিফিংয়ের সময়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এই নির্বাচনী বিরোধ নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র কোনো ভূমিকা পালন করবে কি না। জবাবে তিনি বলেন, আমরা এটা নিশ্চিত করতে চাই, রক্তপাত, কান্না, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ইত্যাদি যেন আফগান জনগণের আকাক্সক্ষা নস্যাত করতে না পারে। গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রায় পাঁচ মাস পর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানের নির্বাচন কমিশন আশরাফ গানিকে বিজয়ী ঘোষণা করে।
প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেয়াকে ওয়াশিংটন কেন স্বাগত জানায়, এ সম্পর্কে অরতাগুস বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। আমরা চাই সাংবিধানিক ও আইনি প্রক্রিয়ায় এসব উদ্বেগের নিরসন করা হোক।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল