২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাকৃবিতে ভিসির সামনেই অফিসারদের হাতাহাতি

ভিসির সামনেই প্রো-ভিসির দিকে তেড়ে যান অফিসার পরিষদের নেতারা। - ছবি: নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভিসি কার্যালয়ে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার পরিষদের কর্মকর্তারা বিভিন্ন দাবি নিয়ে কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই হঠাৎ ভাইস চ্যান্সেলরের কার্যালয়ে প্রবেশ করে হট্টগোল ও উত্তেজিত হয়ে নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ভাইস চ্যান্সেলরের সামনেই প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরের প্রফেসর ড. মো. জসিমউদ্দিন খানকে মারতে তেড়ে যান অফিসার পরিষদের কয়েকজন নেতা।

বাকৃবি কর্মকর্তাদের সংগঠন অফিসার পরিষদের নেতারা বিভিন্ন দাবি নিয়ে পূর্ব অনুমতি ছাড়াই কথা বলতে ভাইস চ্যান্সেলরের প্রফেসর ড. মো. আলী আকবরের কাছে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী দুপুর ১২টায় ভিসি কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথমবর্ষের ভর্তি বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কোনো অনুমতি ছাড়াই প্রায় ৩০-৩৫ জন কর্মকর্তা ভিসির কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন। তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভিসির সঙ্গে উত্তেজিতভাবে কথা কাটাকাটি ও গালিগালাজ করতে শুরু করেন।

এ সময় প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. জসিমউদ্দিন খান অফিসারদের সবাইকে হট্টগোল না করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কথা বলতে ও আলোচনায় বসার কথা বলেন। এতে তারা আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং ভিসি, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), প্রক্টর, ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টার (ভারপ্রাপ্ত) সামনেই অফিসাররা প্রো-ভিসির দিকে তেড়ে যান এবং গালিগালাজ করতে থাকেন।

কর্মকর্তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবুল বাসার আমজাদ, ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান মো: খাইরুল আলম নান্নু, ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তাইন কবীর সোহেল উত্তেজিতভাবে তেড়ে যান। পর কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে হাতা-হাতিতে জড়িয়ে পড়েন।

এ সময় ঘটনাস্থলে প্রক্টর এবং ভারপ্রাপ্ত ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা উপস্থিত থাকলেও কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. জসিমউদ্দিন খান বলেন, আমি অফিসার পরিষদের নেতাদের কথা বলতে এবং অন্যদের সাপ্লিমেন্ট করতে বলি। এতে ওরা আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে এবং নিজেদের মধ্যে ঝগড়া শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবকের সামনে অফিসারদের এমন আচরণ নিয়ম বহির্ভূত।

সাত দফা দাবিতে অফিসার পরিষদের চলমান কর্মবিরতির মধ্যে রেজিস্ট্রার ওই সভায় উপস্থিত থাকায় কর্মকর্তারা তার উপরও চড়াও হন। পরে কর্মকর্তারা রেজিস্ট্রারের হাত ধরে টানাটানি শুরু করেন এবং কার্যালয় থেকে বের করে নিয়ে যান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ মো. ছাইফুল ইসলাম বলেন, অফিসাররা বিভিন্ন সময় আমাকে তাদের দাবির সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করতে বলেন। ভিসি স্যারের আমন্ত্রণে একটি অনুষ্ঠানে থাকায় আমি তাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারিনি।

ঘটনার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের হাত থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে অফিসার পরিষদের যুগ্ম-সম্পাদক জিয়াউল হক টিটু, ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের মোহাম্মদ মোস্তাইন কবীর সোহেল, মোহাম্মদ আবুল বাসার আমজাদ, সংস্থাপন শাখার মোহাম্মদ আশিকুল আলম বাচ্চু, এনামটি অ্যান্ড হিস্টোলজি বিভাগের সেকশন অফিসার মো. মেহেদি হাসান রাসেল।

এ সময় তারা বিভিন্নভাবে সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি দেয় এবং ছবি মুছে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কয়েকজন কর্মকর্তার এমন আচরণে দুঃখ প্রকাশ করেন অফিসার পরিষদের সভাপতি মো. আরীফ জাহাঙ্গীর বলেন, বিষয়টা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক। বিভিন্ন বিষয়ে প্রশাসনের ওপর ক্ষোভ থেকে এই ঘটনা ঘটেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আলী আকবর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পক্ষের বিভিন্ন বিষয়ে দাবি-দাওয়া থাকতেই পারে। দাবিগুলো একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূরণ করতে হয়। হুট করে প্রশাসনের সর্বোচ্চ বডির সঙ্গে এ ধরনের আচরণ কখনও কাম্য নয়। শিক্ষক সমিতি ও গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

আরো পড়ুন: অফিসার ও কর্মচারীদের আন্দোলনে স্থবির বাকৃবি

বাকৃবি সংবাদদাতা, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

অফিসার ও কর্মচারীদের পৃথক আন্দোলনে শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশাসনিক কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি)। ক্যাম্পাস খুলতে না খুলতেই দুই দফা দাবিতে অফিসার পরিষদ ও ৯ দফা দাবিতে কর্মচারী ঐক্য পরিষদ পৃথকভাবে আন্দোলনে নেমেছেন। এ আন্দোলনে বিঘিœত হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ। মাইকের উচ্চশব্দ, কর্মচারী-কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি ক্লাস-পরীক্ষায় মরাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করছে। স্থবির হয়ে পড়েছে প্রশাসনিক কার্যক্রম।

আন্দোলনরত কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণ, শূন্য পদের বিপরীতে পদ প্রদর্শন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য কোটা চালু, ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধি, কর্মচারীদের নীতিমালা সংশোধনসহ ৯ দফা দাবিতে তারা এ আন্দোলন করছেন। 

অন্য দিকে কর্মকর্তারা জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ বাস্তবায়ন ও পদোন্নয়নের দাবিতে গত জুন থেকে আন্দোলন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার পরিষদ। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিটি করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেয়া হয়, কিন্তু কমিটির চূড়ান্ত আশ্বাস না পেয়ে তারা ঈদের পর প্রথম কর্মদিবস থেকে আবারও আন্দোলনে যায়। 

কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক মো: নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কর্মচারীদের দাবি বাস্তবায়নে আমরা প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো সন্তোষজনক জবাব পাইনি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।’ 

অফিসার পরিষদের সভাপতি আরিফ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ন্যায্য এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’ তিনি আরো জানান অতি দ্রুত দাবি আদায় না হলে সামনে আরো কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো: আলী আকবর বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবির বিষয়ে দু’টি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাদের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরো পড়ুন: সিনিয়র প্রফেসরকে প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে বাকৃবি শিক সমিতির মানববন্ধন

বাকৃবি সংবাদদাতা ০২ মার্চ ২০১৮

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র প্রফেসর, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের (কেবি কলেজ) পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনকে প্রাণনাশের হুমকি ও তার বাসায় সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক সমিতি।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বাকৃবি শিক সমিতির নেতারা। শিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আমিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাকৃবির প্রোভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো: জসিমউদ্দিন খান, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সচ্চিদানন্দ দাস চৌধুরী, গণতান্ত্রিক শিক ফোরামের সভাপতি প্রফেসর ড. মো: আবুল হোসেন, প্রফেসর ড. শহীদুর রহমান খান, প্রফেসর ড. কাজী শাহনারা আহমেদ, প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, প্রফেসর ড. এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার, প্রফেসর ড. মো: আলমগীর হোসেনসহ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বাকৃবি প্রাতিষ্ঠানিক কমান্ডের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও ছাত্রনেতারা বক্তব্য রাখেন।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা শিকের ওপর হামলা ও প্রাণনাশের হুমকির তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং এ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

 

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement
বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল