২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
গবেষণাপত্র উপস্থাপন অনুষ্ঠানে বক্তারা

কৃষকদের জন্য প্রয়োজনীয় বীজ ও চারা সরবরাহ করা প্রয়োজন

-

নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক (ইনক্লুসিভ) পুনর্বাসন পলিসি গ্রহণ এবং স্থানীয় কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহাসিক বিষয়গুলোকে রক্ষাকল্পে বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ প্রয়োজন। এ ছাড়াও দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকদের জন্য রবি মওসুমের নতুন ফসলগুলোর জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কর্তৃক প্রয়োজনীয় বীজ ও চারা সরবরাহ করা প্রয়োজন।
গতকাল রোববার রাজধানীর সিরডাপ আন্তর্জাতিক কনফারেন্স হলে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইসলামিক রিলিফ ওয়ার্ল্ডওয়াইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘সমন্বিত টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক গবেষণাপত্র উপস্থাপন অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব বলেন।
ইসলামিক রিলিফ ওয়ার্ল্ডওয়াইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আকমল শরীফের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: শাহ কামাল এবং বাংলাদেশ এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব কে এম আবদুস সালাম। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সংস্থার প্রকল্প ব্যবস্থাপক এনামুল হক সরকার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এম রেজাউল ইসলামের নেতৃত্বে ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন, তজুমদ্দিন, দৌলতখান ও উপজেলায় নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের সামাজিক মর্যাদা ও জীবিকায়ন অবস্থা বিষয়ে এক গবেষণার ফলাফল উপস্থাপনে তিনি জানান, ভোলা জেলার ৯৪.৬ শতাংশ মানুষ নদীভাঙনের ফলে স্থানান্তরিত হয়েছে এবং তন্মধ্যে সর্বোচ্চ ১১ বার স্থানান্তরিত হওয়ার বিষয়টিও উঠে আসে। তিনি আরো জানান, নদীভাঙ্গনের ফলে মধ্যবিত্ত ও সম্ভ্রান্ত পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে তাদের সামাজিক অবস্থান ও মর্যাদায় আমূল পরিবর্তন হয়। তিনি বলেন, বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় ৮৪.৬ ভাগ মানুষ নদীতে মাছ ধরাকে নিজেদের জীবিকায়নের উৎস হিসেবে বেছে নিয়েছে।
ড. এম রেজাউল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মসূচি ও নীতিতে নদীভাঙনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য বেশ কিছু কার্যক্রম থাকলেও বাস্তবে এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নে টেকসই উদ্যোগকে খুব একটা বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় না। অধ্যাপক ইসলাম বলেন, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চিন্তা করা প্রয়োজন যেমন: নদীভাঙন ক্ষতিগ্রস্তবান্ধব দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মসূচি গ্রহণ, কমিউনিটিভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণ, দুর্যোগ-উত্তর সমষ্টিভিত্তিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচি এবং সর্বোপরি নদীভাঙন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সঠিক খাদ্য নীতি গ্রহণ করা প্রয়োজন।
প্রকল্পটির চূড়ান্ত মূল্যায়ন দলের প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালমা আক্তার জানান, প্রকল্পভুক্ত ৩ হাজার পরিবারকে এককালীন ১৬ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের ফলে তারা পছন্দমতো আয়বৃদ্ধিমূলক কাজে সম্পৃত্ত হতে পেরেছে। ফলে তাদের মাসিক আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৬৩ শতাংশ, প্রকল্পের শুরুতে তাদের গড় আয় ৩৫১১ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ১২ হাজার ৭৬৩ টাকা হয়েছে। সংস্থার ৩০০০টি স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা এবং ৫২টি গভীর নলকূপ স্থাপনের ফলে অতি দরিদ্র পরিবারের মধ্যে পানিবাহিত সংক্রামক রোগব্যাধি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুদের জন্য ১২টি টয়লেট, ২ বছর ধরে শিক্ষাসামগ্রী প্রদান শিক্ষার্থীদের ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


আরো সংবাদ



premium cement