২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গাসিক নির্বাচন হাসান সরকারকে নিয়ে সচেতন নাগরিক পরিষদের লিফলেট

-

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ২০ দলীয় জোট মেয়র পদপ্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে দুই পৃষ্ঠার একটি লিফলেট ছেড়েছে সচেতন নাগরিক পরিষদ গাজীপুর। লিফলেটটি এলাকায় বেশ সাড়া জাগিয়েছে। একজন সাবেক অধ্যক্ষের তত্ত্বাবধানে এলাকার প্রবীণ সমাজহিতৈষী ব্যক্তিরা নিজ উদ্যোগে লিফলেটটি প্রকাশ করেছেন বলে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ধানের শীষের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়কারী ডা: মাজহারুল আলম জানান। তিনি বলেন, এ লিফলেটের ফলে নবীনরা এলাকার বর্ষীয়ান রাজনীতিক হাসান উদ্দিন সরকার সম্পর্কে জানতে পারবে। লিফলেটটি এরই মধ্যে ভোটারদের মধ্যে বেশ সাড়া জাগিয়েছে। আলোচিত লিফলেটের শিরোনাম হলো, ‘আমরা কেন গাজীপুর মহানগরবাসী আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৯৭১ এর রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শ্রমজীবী মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট মনোনীত প্রার্থী আলহাজ হাসান উদ্দিন সরকারকে মেয়র পদে সমর্থন করলাম?’ হাসান উদ্দিন সরকারের সমর্থনে ২২টি কারণ উল্লেখ করে প্রকাশিত লিফলেটটি হুবহু তুলে ধরা হলোÑ
‘গাজীপুর জেলার সামাজিক-রাজনৈতিক অঙ্গনের এক কৃতী পুরুষ আলহাজ হাসান উদ্দিন সরকার। সত্য ও বাস্তবতার প্রকৃত মূল্যায়নে বলতে হয় হাসান উদ্দিন সরকার শুধু একটি নাম নয়... একটি আদর্শ, একটি সংগঠন, একটি প্রতিষ্ঠান, একটি দর্পণ ও একটি সমাজের আর্থসামাজিক উন্নয়নের উজ্জ্বল, গতিশীল নেতৃত্বের এক গৌরবদীপ্ত প্রতীক।
১। দেশমাতৃকার সুযোগ্য ও সাহসী সন্তান হাসান উদ্দিন সরকার। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে তিনি এ দেশকে পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করার জন্য রণাঙ্গনে যে সাহসী ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তা গাজীপুরের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। স্বাধীনতা যুদ্ধে গাজীপুরের যে গৌরব গাথা ও বীরত্বপূর্ণ ইতিহাসÑ এ ইতিহাসের এক চেতনাদীপ্ত নায়ক ও বীর পুরুষ হাসান উদ্দিন সরকার। ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১, ছয়দানা মালেকের বাড়িতে সর্বশেষ যে যুদ্ধ হয়েছিল তার নেতৃত্ব দেন তিনি। পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন নঈম তারই গুলিতে ধরাশায়ী হন।
২। শিক্ষা বিস্তারে তার অনন্য ভূমিকা-অবদান গাজীপুরের আর্থসামাজিক উন্নয়নকে বহুদূর এগিয়ে নিয়েছে। অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কারিগর এই সমাজ নিবেদিত ব্যক্তিটি। তারই অকান্ত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে টঙ্গী শিল্পনগরী আজ শিক্ষা নগরীতে রূপান্তরিত হয়েছে।
৩। তিনি শুধু শিক্ষা বিস্তারেই বিশ্বাসী নন, বরং গুণগত ও মানসম্মত শিক্ষায় বিশ্বাসী। আর তার এই চিন্তা-চেতনা ও দর্শনের ফসল তারই প্রতিষ্ঠিত সারা বাংলাদেশে পরিচিত মডেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজ’।
৪। তিনি যখন টঙ্গী পৌরসভার চেয়ারম্যান তখন জনজীবনের উন্নয়নের লক্ষ্যে বহু উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেন এবং তার কর্মপ্রচেষ্টা দিয়ে টঙ্গী পৌরসভাকে দেশের একটি মডেল পৌরসভা হিসেবে রূপান্তরিত করেন। পরবর্তী সময় তিনি যখন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য তখন গোটা গাজীপুরের উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন।
৫। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে তিনি একসময় যে সোচ্চার ও আপসহীন ভূমিকা রাখেন, তা সর্বমহলে স্বীকৃত। শ্রমিক আন্দোলনের এক দিকনির্দেশক এই সংগ্রামী মানুষটি।
৬। সত্যান্বেষী ও ন্যায়নিষ্ঠ মানুষ হাসান উদ্দিন সরকার। দেশের অনেক রাজনীতিবিদের জীবনে দুর্নীতির কালিমা লেগে আছে। কিন্তু তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে... টঙ্গী পৌরসভার চেয়ারম্যান, গাজীপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য থাকাকালে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ কোনো দিন ওঠেনি। এটা তার রাজনৈতিক জীবনের একটা বড় ও উল্লেখযোগ্য দিক বলে আমরা মনে করি।
৭। মানবহিতৈষী ও সমাজসেবী ব্যক্তিত্ব হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে ব্রতী হন। তিনি তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন সমস্যার সমাধান, শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও সন্ত্রাস-চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখেন। দুস্থ-অসহায় মানুষকেও তিনি বিভিন্নভাবে সহায়তা করে থাকেন।
৮। গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনায় উজ্জীবিত হাসান উদ্দিন সরকার। আর তাই তিনি রাজনৈতিক ও দলীয় কর্মকাণ্ডসহ সব ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ও পারস্পরিক সহনশীলতাকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
৯। দলীয় আদর্শের প্রতি তার রয়েছে গভীর আনুগত্য ও শ্রদ্ধাবোধ। দলীয় আদর্শ ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তিনি যে একজন নিবেদিত প্রাণ সৈনিক এ বিষয়ে কিছুই বলার অবকাশ নেই।
১০। তার ব্যক্তিত্ব প্রশাসনিক ও নৈতিকতাভিত্তিক। তাই তিনি দলীয় বা রাজনৈতিক কর্মী বা কারো কোনো উচ্ছৃঙ্খলতাকে কখনও প্রশ্রয় দেননি।
১১। তিনি নির্বাচনী মাঠসহ সব ক্ষেত্রেই সমাজ গঠনমূলক অনেক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করেন এবং নির্বাচনসহ সব ক্ষেত্রে পরিমিত অর্থ ব্যয়ের উপদেশ দিয়ে থাকেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক যে, নির্বাচনে কিছু প্রার্থী অযাচিতভাবে কোটি কোটি টাকা খরচ করে দেশের তরুণ-যুব সমাজের চরিত্রকে হনন করেন, যা প্রকারান্তরে সমাজকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং রাজনীতিকে কলুষিত করছে।
১২। তার জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো জ্ঞান অর্জন ও জ্ঞানের অনুশীলন। আর এ লক্ষ্যে তার নিজ বাড়িতে গড়ে তোলেন এক সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। তিনি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে বইপুস্তক অধ্যয়নের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করেন। ‘এলমে তাসাউফ’-এর চর্চা ও শিক্ষায় তার রয়েছে গভীর মনোযোগ। আলেম-ওলামাদের প্রতিও তার রয়েছে গভীর শ্রদ্ধাবোধ। তিনি ইসলামি জ্ঞান, শিক্ষা বিস্তার ও চর্চার জন্য আহসানউল্লাহ সরকার ইসলামিক কমপ্লেক্স ও রিসার্চ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন।
১৩। অনেক সুদূরপ্রসারী চিন্তা-চেতনার মানুষ হাসান উদ্দিন সরকার। আর তাই টঙ্গীতে বসবাসরত মানুষের মৃত্যু হলে দাফন-কাফনের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য তিনি ১৯৭৪ সালে মরকুনে ২৪ বিঘা জমির ওপর এক স্থায়ী কবরস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।
১৪। তিনি কর্মপ্রবণ, কথাপ্রবণ নন। এটিই তার ব্যক্তিত্বের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য; যা তিনি করবেন তাই বলেন এবং যা বলেন তা করার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করেন।
১৫। তিনি একজন উচ্চমানের বাগ্মী। তার উৎসাহব্যঞ্জক ও প্রাণবন্ত বক্তব্য সবাইকে সমাজসেবায় উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করে থাকে।
১৬। তার মধ্যে কোনো রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা বিদ্বেষ নেই। তিনি সবার প্রতি উদার মানসিকতা পোষণ করেন। তিনি সংসদ সদস্য থাকাকালে বা তার ক্ষমতাকে ব্যবহার করে কোনো দিন কাউকে হয়রানি করেছেন এমন প্রমাণ টঙ্গী-গাজীপুরের ইতিহাসে নেই।
১৭। এক বিচক্ষণ ও নির্ভীক ব্যক্তি হাসান উদ্দিন সরকার। আদালতে যেসব সমস্যার সমাধান কঠিন ও জটিল সেসব বিষয়েও তিনি তার জ্ঞান-দক্ষতাকে ব্যবহার করে সামাজিকভাবে ফায়সালা দিতে পারেন।
১৮। তিনি একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ। তার চিন্তা-চেতনায় রয়েছে মানব কল্যাণের এক উজ্জ্বল দিকনির্দেশনা।
১৯। সামাজিক মূল্যবোধ ও রাষ্ট্রীয় আইনকানুনের প্রতি তার রয়েছে গভীর শ্রদ্ধাবোধ ও আনুগত্য।
২০। তিনি একজন ধর্মপরায়ণ ব্যক্তি। তিনি সময়ানুবর্তিতা ও নিয়মানুবর্তিতাকে অনেক গুরুত্বের সাথে দেখেন এবং ব্যক্তিজীবনে অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করেন।
২১। তিনি একজন চৌকস, জ্ঞান ও বুদ্ধিদীপ্ত মানুষ। তিনি লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে। আমরা মনে করি, তিনি তার মেধা, প্রজ্ঞা, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, গতিশীল চিন্তা-চেতনা ও নেতৃত্ব দিয়ে অত্র সিটি করপোরেশনকে একটি মডেল সিটি হিসেবে রূপান্তরিত করতে পারবেন ইনশা আল্লাহ।
২২। আমরা তাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করি তার গভীর ব্যক্তিত্ব, প্রজ্ঞা, সামাজিক অবদান তথা মানবহিতৈষী কার্যক্রমের জন্য এবং দোয়া করি মানবকল্যাণে আল্লাহ যেন তাকে দীর্ঘ হায়াত দান করেন।
‘মানুষ তার কর্মের মধ্যেই বেঁচে থাকে। তাই বলতে হয়Ñ মানব কল্যাণে তার অবদানই তাকে চিরস্মরণীয় করে রাখবে, ইনশা আল্লাহ।’Ñ নিবেদক, সচেতন নাগরিক সমাজ, গাজীপুর।’

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল