২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিরোধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করছে সিরীয় সরকার

-

এবার বিরোধী মতের লোকদের ও তাদের পরিবারের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করছে সিরিয়ার বাশার আল আসাদের সরকার। বিশেষ করে করে গৃহযুদ্ধের সময় বিরোধীদের দখলে থাকা যেসব স্থান সরকারি বাহিনীর দখলে এসেছে- সেখানে বিরোধী লোকদের সম্পদ দখল করা হচ্ছে। স্বল্পপরিচিত সন্ত্রাসবিরোধী এক আইনের অজুহাতে করা হচ্ছে এসব। বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে এখন বাশার আল আসাদের অবস্থান সুসংহত। বড় শহরগুলো সরকারি বাহিনীর দখলে এসেছে। বিরোধীরা অনেকটাই কোনঠাসা। এরপরই ‘ল-টেন’(১০ নং আইন) নামের একটি আইনের মাধ্যমে এই কর্মকাণ্ড শুরু করেছে সরকার। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, যুদ্ধে জড়িত নয় এমন লোকদের সম্পদও দখল করা হচ্ছে।

ভূক্তভোগী একজন জানিয়েছেন, তিনি তার বাড়ি, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও আবাদী জমি হারিয়েছেন। দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় ঘৌতার এই বাসিন্দা পেশায় একজন স্থপতি। তিনি বলেন, ‘আমি ইটের পর ইট দিয়ে আমার বাড়ি বানিয়েছিলাম। এর প্রতিটি ইঞ্চি আমার টাকায় ও পরিশ্রমে গড়ে তোলা।’

বাড়ি ও সম্পত্তি হারানোর পর তিনি আরো অনেকের মতো ইদলিব প্রদেশে পালিয়ে গেছেন। ওই ব্যক্তি জানান, তিনি সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন, অনলাইনে সরকারবিরোধী কিছু প্রচারণা চালিয়েছিলেন। এমনিভাবে আরো অনেকের সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে সরকার।

তিনি জানান, শুরুতে তাকে উদ্দেশ্য করে সরকারের একটি নিরাপত্তা আদেশের পর স্থপতি ও প্রকৌশলীদের সিন্ডিকেট থেকে তার সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে এমনকি তার পেনশন বাতিল করা হয়েছে।

এমন নিরাপত্তা আদেশের শিকার হয়েছে আরো অনেকে। এ সংক্রান্ত সরকারি আদেশের একটি তালিকা ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইনে, যাতে কয়েকশ ব্যক্তির বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।। মানবাধিকার সংগঠনগুলো মনে করছে, এই তালিকাটি সঠিক, যার ফলে সব হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়বে হাজার হাজার লোক। তবে সরকারের ভয়ে ভূক্তভোগীরা কেউ সংবাদমাধ্যমের সামনে নাম পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি।

পূর্ব ঘৌতার দৌমা শহরে বাস করতেন এক চিকিৎসক যিনি বর্তমানে আশ্রয় নিয়েছেন তুরস্কে। জানিয়েছেন, তার বাড়ি, জমি, ক্লিনিক ও গাড়ি দখল করে নিয়েছে সরকারি লোকজন। তিনি বলেন, সরকার বিরোধীদের সব কর্মকাণ্ডকে ‘সন্ত্রাস’ সাব্যস্ত করে তাদের সম্পত্তি দখল করে নিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, বিরোধী মতের লোকজনের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে সরকার আইনকে হাতিয়ার বানিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement